তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জেরে উত্তপ্ত বীরভূমের লাভপুর থানার হাতিয়া গ্রাম। বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণের জেরে অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত বেশ কয়েকজন। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। ঘটনার পর দেহ লোপাট করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সারা রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত। 
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,  গ্রাম দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠিদ্বন্দ্বে  শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দু’পক্ষের দফায় দফায় অশান্তি হয়। বোমা বাঁধতে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত গ্রামে ঢুকতে পারেনি পুলিশ। দেহ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। নকল কয়েন বিক্রি করার "স্বর্গরাজ্য" হাতিয়া গ্রাম। গ্রামের দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দুইগোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল অশান্তি। হাতিয়া তৃণমূল বুথ সভাপতি শেখ মইনুদ্দিন ও তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি বনাম নকল কয়েন বিক্রেতাদের মাথা শেখ মনিরের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রায় মাসছয়েক ধরে ফেরার ছিল তৃণমূল নেতা শেখ মইনুদ্দিন ও তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে শেখ মইনুদ্দিন ও তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি। শুরুতেই তাঁদের আটকে দেয় শেখ মনিরের লোকজন ফলে হাতিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে দুইপক্ষের মধ্যে তুমুল মারামারি হয়। ফের গ্রামে ঢুকতে চেষ্টা করে শেখ মইনুদ্দিন ও তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি। আবার তাদের আটকে দেওয়া হয়। শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ আবার দলবল নিয়ে গ্রামে ঢুকতে যায় শেখ মইনুদ্দিন ও তাঁর সহযোগী শেখ মুস্তাফি। সেইসময় গ্রামের ছাতিমপুকুর পাড়ে বসে বোমা বাঁধছিল মনিরের দলবল। তখনই বোমা বিস্ফোরণ হয়। ওই বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় অনেকেই তাদের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। মৃতেরা হলো স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল খানের ভাগ্নে এবং তৃণমূল নেতা শেখ বাদলের ছেলে। জখমরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 
একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের মার্চে হাতিয়ায় একটি নকল অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্ত হয় লাভপুর থানার পুলিশ। গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়ে পুলিশ শূন্যে গুলি চালিয়েছিল। কার্যত বলা চলে দুস্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য এই হাতিয়া গ্রাম। 
শনিবার দুপুরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিন তিন ড্রাম তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাভপুরে তৃণমূলের বিধায়ক বলেন, এটা সমাজবিরোধীদের কাজ। এবিষয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।