ফের শুট আউট বসিরহাটে। প্রথমে ধারালো অস্ত্রের কোপ। শেষে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গুলি কয়েক রাউন্ড।ব্যাপক উত্তেজনা এলাকায়। ঘটনাস্থলে পুলিশের বিশাল বাহিনী ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে শুরু হয়েছে জোর তল্লাশি। খুনের প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তে নেমেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। মঙ্গলবার এমনটাই জানা গিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে। বসিরহাট শহরের উপকণ্ঠে গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব ঘোনা গ্রামের ঘটনা।
বসিরহাট -১নং ব্লকের গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোনা গ্রামের হাজীবাগ মোড়। অনতিদূরে নিয়মিত বসে জুয়ার আড্ডা। যা নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ স্থানীয় মানুষের।জুয়ার আসরকে কেন্দ্র বহিরাগত দুষ্কৃতীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। ঘটনাস্থল এই পূর্ব ঘোনার বাসিন্দা আনার হোসেন গাজি। বয়স ২৫বছর। সম্প্রতি তাকে নিয়ে বিস্তর অভিযোগ স্হানীয় মানুষের। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি। কারণে অকারণে সাধারণ মানুষকে চমকানো ধমকানো নিয়ে বিরক্ত ঘোনা গ্রামের বাসিন্দারা। আনারের সম্পর্কে পুলিশের খাতায় একাধিক অভিযোগ আছে। সে কয়েকবার জেল ও খেটেছে বলে এদিন স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অন্যদিকে খুনের অভিযোগে অভিযুক্তরাও নানান অসামাজিক কাজে যুক্ত।
সোমবার রাত তখন সাড়ে ৯টা। বাড়ির কিছু দূরে এই হাজিবাগ মোড়ে দাঁড়িয়েছিল আনার। সেই সময় মোটরবাইকে চেপে একদল দুষ্কৃতী সেখানে আসে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে স্থানীয় বাসিন্দারা বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকাবাসীরা জানান হাজীবাগ এলাকায় আমরা চা খাচ্ছিলাম চায়ের দোকানে বসে। আনার একটি মোটর বাইকে বসেছিল। তখনই তার উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। মৃত আনারের এক আত্মীয় জানায় প্রতিবেশীদের কয়েকজন এই খুনের ঘটনায় যুক্ত। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর আনার হোসেন গাজিদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিবাদ চলছে স্থানীয় এক প্রতিবেশীদের সাথে। তাদের পরিবারের একজন সদস্য রৌশন গাজি দীর্ঘদিন নিখোঁজ। সে আদৌ বেঁচে আছে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান গ্রামের মানুষ। তাদেরই পরিবারের অপর একজন সদস্য সামসুর গাজি কয়েকবছর আগে গুলিবিদ্ধ হন এবং সেযাত্রায় বেঁচেও যান। সেই ঘটনার রেশ ধরে এই খুন কিনা তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি এই পূর্ব ঘোনা গ্রামে বছর চার পাঁচ আগে বিচালীর গাদা থেকে বোমা বের করে এনে বল ভেবে খেলতে গিয়ে মারা যায় একটি শিশু। এর পাশাপাশি তালডাঙা আটি মাঠ এলাকায় সন্ধ্যার পর সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে ওঠে। রাতভর চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। সোমবার ভর সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এই খুনের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চলে ছড়িয়েছে ঘোনা গ্রামে। রয়েছে যথেষ্ট উত্তেজনা।
ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম)জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রাজু আহমেদ বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে আমার বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে। রাজ্যে চূড়ান্ত আইন শৃঙ্খলার অবনতি এই ঘটনার দ্বারা প্রমাণিত। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করুক।
এদিন দুপুরে শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম বাকিবিল্লা বৈদ্য, রবিউল সরদার, সারির আলি গাজি ও ফিরোজ গাজি।
Comments :0