Md Salim on Kaligunj situation

কালিয়াগঞ্জ: তৃণমূল, বিজেপি’র কড়া নিন্দা সেলিমের

কলকাতা রাজ্য

কালিয়াগঞ্জের নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তৃণমূল সরকারের পুলিশের কড়া সমালোচনা করলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই সঙ্গে মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আরএসএস-বিজেপি’র বিভাজন তৈরির প্রয়াসেরও তীব্র নিন্দা করেছেন। সোমবার জেলা প্রশাসনে ডেপুটেশন দিয়েছে সিপিআই(এম)।
সেলিম বলেন, ‘‘বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি-আরএসএস। সেখানে দাঙ্গা ও সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তুলে ধরার চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলছে সিপিআই(এম)।’’ তিনি মনে করিয়েছেন এর আগে দাড়িভিটে দুই ছাত্র পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। কেন্দ্রীয় দল, সিবিআই তদন্ত হলেও কারও শাস্তি হয়নি।


সেলিম বলেছেন, ‘‘তারস্বরে চিৎকার চেঁচামেচি হলো বিস্তর। ভোট হলো। কারও শাস্তি হলো না। রাজ্যের সিআইডি বা কেন্দ্রের সিবিআই ন্যায় বিচার দেয়নি।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘মানুষ সতর্ক রয়েছেন। বিভাজনের চেষ্টা রুখতে হবে।’’ কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যুতে পরিবার খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী মুখ বন্ধ রাখার হুমকিও দিয়েছেন বিপন্ন পরিবারকে। দোষীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্ষিপ্ত জনতার অবরোধ তুলতে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ।

[ad}
কালিয়াগঞ্জ নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের (NCPCR) চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো কালিয়াগঞ্জে গিয়ে পুলিশের বক্তব্য নাকচ করেছেন। 
পুলিশ দাবি করেছে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ওই নাবালিকার। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান। তার দাবি যৌন হেনস্তা করে ওই ছাত্রীকে তারপর খুন। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও এনেছেন তিনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে তার। সর্বোপরি যে চারজন চিকিৎসক নাবালিকার দেহ ময়নাতদন্ত করেছেন তাঁদের মধ্যে দুজনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে কেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো।
এদিন কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম। কালিয়াগঞ্জের পরিস্থিতিতে সরাসরি আরএসএস-বিজেপি এবং মমতা ব্যানার্জি, দুই শক্তিকেই দায়ী করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।


সেলিম বলেন, ‘‘আরএসএস মানুষের মধ্যে বিভাজন ঘটায়। কোথাও হিন্দু-মুসলমানে, কোথাও উত্তর-দক্ষিণে। গত কয়েক দশক ধরে গোটা পুর্ব ও পশ্চিম ভারতে এই কাজ করে গেছে আরএসএস। এখন পশ্চিমবঙ্গে এই একই কাজ করার চেষ্টা করছে। আর এই পরিস্থিতি থেক মানুষের মধ্যে একটা নিরপত্তাহীনতা কাজ করছে।  একটা অংশের বিরুদ্ধে আরেকটা অংশকে খেপিয়ে তোলা,অবিশ্বাস তৈরি করা, এবং হিংসা ও দ্বেষের চাষ করা হচ্ছে।’’ 


রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছন তিনি। যেরকম পরপর দাঙ্গার ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এত কম সময়ের মধ্যে এত দাঙ্গার পরিস্থিতি কখন সৃষ্টি হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। বিশেষ করে গত দু’বছরে যা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে যে হিংসা ছড়াচ্ছে তার নিয়ে তথ্য প্রকাশ করছে না ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরো আর রাজ্য সরকার তো এসবের ধারই ধারে না।’’ 
কালিয়াগঞ্জে নির্যাতিতার বাড়িতে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন এসএফআই-ডিওয়াইএফআই এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির প্রতিনিধিরা। মহম্মদ সেলিম বলেছেন, পুলিশ প্রতিনিধিদের ঢুকতে বাধা দিয়েছে। ছাত্র-যুব ও মহিলারা থানায় ডেপুটেশন দিয়েছেন। সোমবার জেলা প্রশাসনকেও ডেপুটেশন দিয়েছে।
 

Comments :0

Login to leave a comment