এসএফআইয়ের বিদ্যাসাগর কলেজ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শিয়ালদহ এলাকায়। অবৈধ ছাত্র সংসদ ভাঙার দাবিতে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ এবং ডেপুটেশন কর্মসূচি করেছে এসএফআই। এদিন বিদ্যাসাগর কলেজ অভিযানের ডাক দিয়েছিল এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটি। মিছিল কলেজের সামনে পৌঁছালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এসএফআই কর্মী সমর্থকরা কলেজ গেটে এসএফআইয়ের পতাকা লাগাতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। পাল্টা ভিতর থেকে বাধা দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। পুলিশের সাথে শুরু হয় এসএফআই কর্মী সমর্থকদের খন্ড যুদ্ধ। তবে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কলেজ গেটে পতাকা লাগায় এসএফআই কর্মীরা।
উল্লেখ্য পুলিশের পাশাপাশি সেখানে পুলিশের পরিচয় দিয়ে সাধারণ পোশাকে অনেকে ছিলেন যাদের পুলিশের থেকে বেশি সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়। গণশক্তির প্রতিনিধিকে খবর সংগ্রহ করতে বাধা দেয় তারা, হয় ধাক্কাধাক্কি।
এসএফআই কলকাতা জেলা সভাপতি বর্ণনা মুখার্জি বলেন, ‘‘কলেজ সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গে সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জির ছবি থাকবে বড় করে এই ধারনা ভুল। এসএফআইয়ের পতাকা আজ এখানে লাগিয়ে গেলাম এর পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে সেখান থেকে টিএমসিপিকে হাটাবো।’’
এদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এসএফআই কর্মী সমর্থকরা কলেজে গিয়েছিলেন ডেপুটেশন দিতে সেখানে বাধা দেয় পুলিশ। কিন্তু টিএমসিপি কর্মী সমর্থকরা যখন এসএফআই কর্মী সমর্থকদের বিশেষ করে মহিলাদের অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলছে তখন তাদের কোন সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি।
গত ৩ জুলাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে এসএফআইয়ের করা মামলায় হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়ন রুম বন্ধ রাখতে হবে। হাইকোর্টের পক্ষ রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন ২০১৭ সালের পর থেকে রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় কোন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি, কবে নির্বাচন হবে তাও জানতে চাওয়া হয় রাজ্যের কাছে। হলফনামা দিয়ে এই বিষয় রাজ্যকে নিজের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সেন জানিয়েছেন রেজিস্টারের অনুমতি ছাড়া কোন ইউনিয়ন রুম খোলা যাবে না।
রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোয় বন্ধ ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ছাত্র সংসদ নেই কিন্তু ছাত্র সংসদ গুলোকে দখল করে সেই গুলোকে ব্যবহার করে একের পর এক অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে শাসক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে। কলকাতার বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় টাকা নেওয়া বা অন্য কোন অনৈতিক কাজ সব কিছুতে অভিযুক্ত তৃণমুল ছাত্র পরিষদ। রাজ্য সরকার প্রতিবছর বলে আসছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন দিন তারা ঘোষণা করতে পারছে না। ছাত্র ছাত্রীদের যেই অধিকার একটা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ পাওয়ার সেখান থেকে তার বঞ্চিত থাকছে। আর এই সুযোগে কলেজ ক্যাম্পাস গুলোকে গুন্ডাদের আঁখড়ায় পরিনত করছে তৃণমূল।
Comments :0