CPIM

পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসে আজ সভা

কলকাতা

পার্টির ১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনের সভাঘরে এক সাধারণ সভা হবে। ‘কমিউনিস্ট ইশতেহার-এর ১৭৫ বছর ও বর্তমান সময়’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার উদ্যোক্তা প্রমোদ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। সিপিআই(এম)-র পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত এবং পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সভায় বক্তব্য রাখবেন। সভাপতিত্ব করবেন পার্টির প্রবীণ নেতা বিমান বসু। মার্কসবাদী পথ পত্রিকার আর্কাইভের উদ্বোধন করবেন প্রকাশ কারাত। মঙ্গলবার রাজ্যের সর্বত্র পার্টির দপ্তরগুলিতেও প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্‌যাপন করবেন পার্টি কর্মীরা।
ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস বিছিয়ে আছে ১৯২০ থেকে ২০২৩ — এই সময়পর্বে। ১৯২০ সালের ১৭ অক্টোবর তাসখন্দে মাত্র ৭জন নেতার উদ্যোগে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা হয়। তারপরে ধীরে ধীরে ভারতে বিভিন্ন কমিউনিস্ট ব্যক্তি ও গোষ্ঠী একত্রিত হয় পার্টি সংগঠনে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পার্টি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের তিনটি ধারার একটি নিঃসন্দেহে কমিউনিস্টদের পরিচালিত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের পথ। ১৯২১ সালে কংগ্রেসের আমেদাবাদ অধিবেশনে তাঁরাই প্রথম পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করেছিলেন। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এবং শ্রমিক কৃষকদের সংগঠিত করে আন্দোলন গড়ে তুলতে কমিউনিস্ট পার্টি যতই তৎপর হয়েছে ব্রিটিশ শাসকদের ততই আক্রমণের শিকার হয়েছে।  আবার এই সময়কালেই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন মতাদর্শগত সংগ্রাম পার্টিকে চালাতে হয়েছে। একদিকে একের পর এক ষড়যন্ত্র মামলার শিকার হয়েছে, ব্রিটিশ শাসনের বেশিরভাগ সময়েই বেআইনি ঘোষিত থেকেছে, আবার আরএসএস, হিন্দু মহাসভার মত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির বিভাজনের কৌশলের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণ আন্দোলন, শ্রেণি সংগ্রাম পরিচালিত করতে হয়েছে কমিউনিস্টদের। স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক সংগ্রামীই একসময় বেছে নিয়েছেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের পথকে— তাও আছে পার্টির ঐতিহ্যের উপাদান হিসাবে। সেই গৌরবোজ্জ্বল লড়াকু ঐতিহ্য ও ভূমিকা নিয়েই এখনও সিপিআই(এম) ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা, সাংবিধানিক কাঠামো, এবং সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকারগুলি রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। স্বাধীন ভারতের যে সংবিধান তৈরির ক্ষেত্রেও কমিউনিস্টদের সংগ্রামের ভূমিকা রয়েছে, সেই সংবিধান রক্ষার সংগ্রামেও কোনও দুর্বলতা না দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্টি, যা পার্টির শতবর্ষ উদ্‌যাপনের শুরুতেই ঘোষণা করা হয়েছিল। দুনিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যখন উগ্র দক্ষিণপন্থার দাপাদাপি দেখা যাচ্ছে, তখন কমিউনিস্ট ইশ্‌তেহারের আলোকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোচনায় সেই দায়িত্বের কথাই পুনরুচ্চারিত হবে সোমবারের অনুষ্ঠানে।
 

Comments :0

Login to leave a comment