KISAN MAHAPANCHAYAT DELHI

শাস্তি দাও

সম্পাদকীয় বিভাগ

লোকসভা ও সব রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার নরেন্দ্র মোদীর ইচ্ছাকে সুপারিশ আকারে হাজির করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বাধীন কমিটি। তেমনি বর্তমান শাসকদলের হয়ে নির্বাচন পর্ব সামলানোর প্রধানমন্ত্রীর সুপ্ত বাসনা বাস্তবায়িত করতে মোদী-শাহদের অতি ঘনিষ্ঠ দুই আমলা‍‌কে বসানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের মাথায়। আবার রাজনৈতিক দলের তহবিলে গত পাঁচ বছর ধরে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোনও কর্পোরেট বা বিত্তবান ব্যক্তি কত টাকা ঢেলেছে তার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এই তিন মেগা ইভেন্টই সাম্প্রতিককালের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয়। সমগ্র মিডিয়া এই তিনটিকে ঘিরে চলছে হুলস্থূল কাণ্ড। দেশবাসীরও নজর ও কৌতূহল অনেকটা সেইদিকেই। প্রচার-বিতর্কের এমন ঘনঘটার মধ্যে দিল্লির রামলীলা ময়দানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অন্নদাতারা তাদের কৃষক-মজদুর মহাপঞ্চায়েতে বেইমান-প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মোদী সরকারকে জনতার আদালতে দাঁড় করিয়ে সাজা ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীর বুকে তিন বছর আগের সেই ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃষক জমায়েত হলেও মিডিয়া তাকে উপেক্ষা করেছে। তাই জনতার নজর থেকে সেটা অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে। অবশ্য মিডিয়া আড়াল করলেও বিকল্প মিডিয়া সেটা পৌঁছে দিয়েছে বৃহত্তর জনসমাজে।
তিন বছর আগের সেই কৃষক অবস্থান দিল্লিতে এক বছরেরও বেশি দিন চলেছিল। আন্দোলন প্রত্যাহৃত হয় মোদী সরকারের সঙ্গে লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে। সেই চুক্তির সব শর্ত আন্দোলনকারী কৃষকরা মানলেও অধিকাংশ সরকার পূরণ করেনি। কথা দিয়ে কথা না রেখে সরকার অন্নদাতাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আজকে নির্বাচনের মুখে মোদীর নামে সরকার একের পর এক গ্যারান্টির কথা প্রচার করলেও তারা যে আসলে বিশ্বাসযোগ্য নয় কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই নরেন্দ্র মোদীর সরকার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসরণ করে সি-টু + ৫০ শতাংশ হারে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারিত হবে এবং সেই দামে ফসল বিক্রির গ্যারান্টি দেবে সরকার। মোদীরা কথা রাখেনি। কৃষকদের সঙ্গে বেইমানি করেছে। আন্দোলনরত কৃষক হত্যার অন্যতম ষড়যন্ত্রী মোদীর মন্ত্রী অজয় মিশ্র টোনির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা তো নেয়নি উলটে তাকে এবার প্রার্থী করেছে। অর্থাৎ মোদীরা প্রমাণ করেছেন তারা কৃষক হত্যাকারীদের পক্ষে। তেমনি বৎসরাধিককাল ধরে আন্দোলন চলার সময় কয়েক শত কৃষকের বিরুদ্ধে মিথ্য মামলা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করেনি। পুলিশি অত্যাচারে নিহত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি। কৃষক ও সাধারণ মানুষ বিরোধী বিদ্যুৎ আইন বাতিলের দাবিও পূরণ করেনি। অথচ কৃষি ও কৃষকের সর্বনাশ করে দেশের কৃষি অর্থনীতি পেটোয়া কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে ধাপে ধাপে পা ফেলে চলেছে। এই সরকার কৃষকের শত্রু। তাই এই সরকার সাজা দিতে কৃষকরা দেশের আমজনতার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মহাপঞ্চায়েত এবং আহ্বান খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
 

Comments :0

Login to leave a comment