BLOs target of uploading 150 forms per day

ডিজিটাইজেশন নিয়ে চাপ বাড়ছে বিএলও’দের

রাজ্য

বিএলও’দের দিনে ন্যূনতম ১৫০টি পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরম ডিজিটাইজড করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন। 
ভোটারদের কাছ থেকে পূরণ হয়ে আসা এনুমারেশন ফরম ডিজিটাইজড করার কাজে শ্লথতা এখন বড় বাধা। তার থেকে বাড়ি, বাড়ি ফরম পৌঁছানো হলেও সেই ফরম কার্যত পূরণ না করে ফেলে রেখে দিয়েছেন বহু ভোটারই। ফরম ফেরত আনতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিএলও’দের। ফলে সবদিক বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা এখন দু’টি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। প্রথমত, ভোটারদের ফরম পূরণ না করা। আর পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরম বিএলও’দের কাছে ফেরত আসার পর তা ডিজিটাইজড করা। 
নির্বাচন কমিশনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘ইআরও ও এইআরও’দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ফিল্ড ভিজিট করার। নির্বাচন কমিশনের সহায়তা কেন্দ্রে ভোটারদের এনে এনুমারেশন ফরম ফিল-আপ করার জন্য উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বিএলও’দের বলা হয়েছে বাড়ি, বাড়ি পৌঁছে দেওয়া ফরম যাতে ভোটারদের দ্রুত পূরণ করিয়ে সংগ্রহ করার।’’ সেইসঙ্গে বিএলও’রা যাতে পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরম মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত আপলোড করে তারজন্য দৈনিক লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ফি দিনে ন্যূনতম ১৫০টি এনুমারেশন ফরম আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ভোটারদের কাছে এনুমারেশন ফরম বিলি করার কাজে পশ্চিমবঙ্গ ভালো অবস্থানে আছে। কিন্তু ভোটারদের কাছ থেকে ফরম ফেরত আসা ও পূরণ হওয়া ফরম বিএলও’দের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাইজড করার কাজে পিছিয়ে আছে রাজ্য। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, এরাজ্যের ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯টি এনুমারেশন ফরমের মধ্যে বাড়ি, বাড়ি পৌঁছে দেওয়া ফরমের পরিমাণ ৭ কোটি ৬৪ লক্ষ ১১ হাজার ৮৩। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে প্রায় ৯৯.৭০ শতাংশ ভোটারের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেছে তাঁদের নিজস্ব এসআইআর ফরম। গত ৪ নভেম্বর থেকে গত ১৬ দিনের মধ্যে রাজ্যের ৯৯ শতাংশ মানুষের কাছেই পৌঁছে দেওয়া গেছে ফরম। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে ফেরত আসা এনুমারেশন ফরমকে ডিজিটাইজড করা নিয়ে। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, ‘‘এবার এসআইআর’এর পুরো প্রক্রিয়টাই প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থায় করা হচ্ছে। সেই কারণেই কিউআর কোড যুক্ত এনুমারেশ ফরম স্ক্যান করার পরই মোবাইল অ্যাপ মারফত যাবতীয় অপশন সামনে চলে আসছে। বাড়ি, বাড়ি ফরম পৌঁছে দেওয়ার পর  ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন অভিযানে এখন এটাই সবথকে বড় কাজ।’’
এখন ভোটারদের সেই পূরণ হওয়া ফরম ফেরত এনে তা বিএলও’দের মোবাইল অ্যাপ মারফত ডিজিটাইজড করার কথা। কিন্তু সেই কাজে বিএলও’দের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় বলেই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ফেরত আসা এনুমারেশন ফরমের মধ্যে মাত্র ১ কোটি ৪১ লক্ষ ২১ হাজার ২০২টি পূরণ হওয়া ফরমকে ডিজিটাইজড করা গেছে। শতাংশের বিচারে মাত্র ১৮.৪৩ শতাংশ পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরমের ডিজিটাইজড করা গেছে। ফলে বাকি মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশ পূরণ এনুমারেশন ফরম ডিজিটাইজড করতে হবে বিএলও’দেরই। 
দ্বিতীয় পর্যায়ের এসআইআর’এর দিন ঘোষণার সময় ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রাখা ছিল বাড়ি, বাড়ি এনুমারেশন ফরম পৌঁছে দেওয়া ও জমা নেওয়ার। ফরম হাতে পৌঁছানোর পরেও ভোটারদের একটা বড় অংশের কাছে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা মাথায় থাকায় অনেকেই ফরম পূরণই করেননি। তার ফলে বিএলও’রা যখন পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরম দ্বিতীয়বার আনতে গিয়ে ফেরত পাননি। কিন্তু তার থেকেই বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে পূরণ হওয়া ফরম ফেরত আসার পর তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমা করা নিয়ে। বিএলও’দের অভিযোগ, শুরুতে এসআইআর’এর প্রশিক্ষণের সময় তাঁদের বুথ  ভিত্তিতে বাড়ি, বাড়ি ভোটারদের কাছে ফরম দেওয়া ও ফরম পূরণ হওয়ার পর তা নিয়ে আসার কথাই বলা হয়েছিল। এমনকি ফরম দেওয়ার সময় মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারদের এনুমারেশন ফরম বিএলও’দের নিজের কাছে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এনিউমারেশন ফরম পূরণ না হলে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে পূরণ করার জন্য সাহায্য করার নির্দেশ থাকলেও জমা হওয়া ফরম 
এনুমারেশন ফরম ভোটারদের কাছ থেকে ফেরত আসার পর তা মোবাইল অ্যাপ মারফত ডিজিটাইজড করার জন্য বিএলও’দের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কমিশনের এই নির্দেশ জানার পর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিএলও’দের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। ফলে শুরু থেকেই এনুমারেশন ফরম আপলোড করার কাজ থমকে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন বিএলও’দের পূরণ হওয়া এনুমারেশন ফরম নিয়ে আসতে হচ্ছে সরকারি দপ্তরে। সেখানে ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের মাধ্যমে চলছে এনুমারেশন ফরম আপলোডের কাজ।

Comments :0

Login to leave a comment