Unemployment PLFS

জিএসটি হ্রাসে বাজার চাঙ্গা দূর অস্ত, কর্মসংস্থানের হাল সেই তিমিরেই

জাতীয়

ভোটের বাজারে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) কমিয়ে মোদী সরকার বাজার চাঙ্গা করে দিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানোর দাবি করলেও, দেখা গেল এই সমস্ত দাবিই ফাঁপা। জিএসটি’র হার কমায় না কমেছে মূল্যবৃদ্ধির  হার, না হয়েছে বেড়েছে জিনিসপত্রের বিকি-কিনি। কর্মসংস্থানও যে কে সেই। উলটে বেকারির হার বেড়ে গেছে। সোমবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান মন্ত্রক যে পিরিয়োডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (পিএলএফএস) রিপোর্ট প্রকাশ করে জানায়, দেশে বেকারির হার বেড়েই চলেছে। শহরাঞ্চলে বেকারির হার বেশি বেড়েছে। তুলনামূলক ভাবে গ্রামে বেকারির হার কম। 
এদিন পিএলএফএস সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়, ১৫ বছরের বেশি বয়স এমন যুবকদের মধ্যে বেকারির হার অক্টোবরে ৬.৮ থেকে বেড়ে ৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে। শহর এবং গ্রাম মিলিয়ে গড় বেকারির হার অক্টোবরে হয়েছে ৫.২ শতাংশ। এদিকে চলতি ভোটের বাজারে প্রতিশ্রুতি মোদী সরকারের তরফে কর্মসংস্থানের নানা দাবি করা হলেও বেকারি যে কমেনি, তা পিএলএফএস’র রিপোর্টেই স্পষ্ট। গত আগস্টে বেকারির হার ৫.২শতাংশে পৌছে যায়। তিন মাসে তা কমেনি। অক্টোবরে তা ৫.২শতাংশেই থেকেছে। 
রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে যুব সমাজের (১৫ থেকে ২৯বছর বয়স) বেকারির হার বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ। যা গত জুলাই মাসে ছিল ১৪.৬ শতাংশ। এতে মহিলাদের বেকারি হার আরও বেশি। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৮ শতাংশ। পুরুষের ক্ষেত্রে এই বর্ধিত হার ১৩.৯ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সরকার জিএসটি কমিয়ে দিয়ে বাজার চাঙ্গা করার প্রচার চালালেও তাতে বিশেষ কোনও প্রভাব পড়েনি। মানুষের আয় না বাড়ায় সরকার কর কমালেও পুজোর মরশুমে বাজারের বিক্রি বিশেষ বাড়েনি। অনেকের মত, জিএসটি হার কমানোর প্রচার চললেও বাস্তবে পণ্যের দামে এতে কোনও প্রভাব পড়েনি। ফলে বিক্রির বাজারে কোনও প্রভাব দেখা যায়নি। মাসিক কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি ঘটেনি। উলটে এই সময়ে কর্মসংস্থানের হার কমে গেছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুব সমাজ। তাদের বেকারি চড়া হারে বেড়ে চলেছে।
কেন্দ্র প্রকাশিত মাসিক পিএলএফএস রিপোর্টে দেখা গেছে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার মোদী জমানায় ক্রমশ হ্রাস পেয়ে চলেছে। মোদী সরকার নির্বাচনের মুখে জিএসটি’র হার কমিয়ে আয় সাশ্রয়ের প্রচার করে বাজার চাঙ্গা হবে বলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচার চালালেও তাতে বিশেষ কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, পিএলএফএস সমীক্ষা রিপোর্টে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের হার উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের ৯০ শতাংশ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রে।
অসংগঠিত ক্ষেত্রের অবস্থা ভালো নয়। করোনার সময়কালে লকডাউন, নোট বাতিল ও জিএসটি’র প্রভাবে ছোট ও মাঝারি কলকারখানায় যে সঙ্কট নামে তা আজও কাটেনি। বহু ছোট কারখানা পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এনএসও’র রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি-মার্চে অসংগঠিত শিল্পে নতুন কর্মসংস্থান ১৩.১ কোটি, এপ্রিল-জুনে কমে ১২.৯ কোটি। প্রায় এক কোটি শ্রমিকের চাকরি এক ত্রৈমাসিকে কমেছে। সমস্ত অসংগঠিত শিল্পে স্থায়ী কর্মী নেই এবং তাদের সামাজিক সুরক্ষা নেই।

Comments :0

Login to leave a comment