DYFI Hooghly

শিক্ষা ও কাজের দাবিতে লড়াইয়ের আহ্বান হুগলির যুব সমাবেশে

রাজ্য জেলা

সোমবার চাঁপাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে ডিওয়াইএফআই হুগলী জেলা সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মীনাক্ষী মুখার্জী।

রাজ্যের কলকারখানার ভবিষ্যত শেষ করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যে গণতন্ত্রের উপর নানা আঘাত নেমে এসেছে। যারা লুটে খাচ্ছে তাদের আমরা টিকে থাকতে দেব না। এর বিরুদ্ধে সকলকে একযোগে লড়াই করতে হবে। ডিওয়াইএফআই হুগলী জেলা ২৩ তম সম্মেলন উপলক্ষে সোমবার চাঁপাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্য সমাবেশে কথাগুলি বলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ও সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জী। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, রাজ্য যুব নেতা অয়নাংশু সরকার, অপূর্ব প্রামাণিক ও হুগলী জেলা সম্পাদক শুভঙ্কর দাস। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা সভাপতি সুমন মাল। ৩ - ৪ জুন মঙ্গল ও বুধবার তারকেশ্বরের মোহনবাটীতে প্রতিনিধি সম্মেলন হবে। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে সমাবেশ হয়।

সমাবেশে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, "আমরা স্থায়ী কাজ, শিক্ষা, কলকারখানার দাবিতে লড়াই করছি। সবাইকে কাজ দিতে হবে, শিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু রাজ্য যে ব্যবস্থা চলছে তাতে সম্ভব নয়। যারা এখানে লুটে খাচ্ছে তাদের বের করে দিতে হবে।"
বেকারী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মীনাক্ষী বলেন, "ভারতবর্ষের বুকে বামপন্থী যুব সংগঠন লড়াই করে চলেছে কিসের লক্ষ্যে? কাজ পাবার লক্ষ্যে। কারা কাজ পাবে? যারা কাজ করতে চায়, যারা কর্মক্ষম তাদের জন্য। সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে, সবাইকে কাজ দিতে হবে। তাই এই সমাজ ব্যবস্থাটাকে পাল্টে দিতে হবে। তাহলে কোন সমাজ ব্যবস্থা চাই। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। যে সমাজ ব্যবস্থায় খেটে খাওয়াদের অধিকার থাকবে। আর লুটে খাওয়াদের বের করে দেওয়ার অধিকার থাকবে। যারা লুটে খাওয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের পেট মোটা করতে সাহায্য করছেন তাদের বিরোধিতা করতে হবে। যারা কায়িক শ্রম করেন। সেই খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের পরিবারের লোকই তো এই সমাবেশে আছেন।

হুগলি জেলার শিল্পাঞ্চল ধুঁকছে। সেই প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন, "ডানলপ ও হিন্দমোটর কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ডানলপের দিকে তাকান ধুঁকছে, হুগলী জেলার বিখ্যাত মোটরগাড়ি কারখানা কী অবস্থা? সারা হুগলী জেলা জুড়ে চটকল জুটমিল গুলোর কী অবস্থা? সরকার পারেনা রাজ্যের সরকার পাট শিল্পের উন্নতি করতে? পাটের তন্তুর তো আজও বিশ্বের দরবারে নাম আছে। তাহলে কেন আমাদের রাজ্যের পাটচাষীরা ধুঁকছে পাটের দাম পাচ্ছে না? হুগলী জেলা পুড়শুরা আরামবাগে আলুর ব্যাপক ফলন হয়। কিন্তু তাঁরা দাম না পেয়ে লোকসানে পড়েন। এতো বছর হয়ে গেলো মানুষের ভোটে জেতা তৃণমূলের বিধায়কদের জিজ্ঞাসা করুন তারা কটা কারখানা খুলেছেন? তিনি আরও বলেন, "আগে এ রাজ্যের পুলিশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছিল। এখন রাজ্যের পুলিস টেবিলের নিচে লুকায়। এরা ন্যায়নীতির পক্ষে নয়। সংবিধানের রক্ষক নয়। বালি পাচার, কয়লা পাচারে রমরমা। শিশু পাচার বেড়ে গেছে। পুলিশের কী ভূমিকা?"

ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, "হুগলী জেলার খেতমজুর আন্দোলন, মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন, বর্গা আন্দোলনে গোটা বাংলাকে পথ দেখিয়েছে। আগে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চাষবাসের সুযোগ সুবিধা আর নেই।  তৃণমূল আসার পর সার ও আলু বীজে কালো বাজারির জন্য কৃষককে চড়া দামে সার ও আলু কিনে চাষ করতে হয়। এর ফলে আলুচাষীরা দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের মুখে কোনও কথা নেই।" তিনি আরও বলেন, "রাজ্যে গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ছে। রাজ্য থেকে যুবকরা অন্য রাজ্যে কাজে যেতে হচ্ছে। কেন এখানে শিল্প হবে না। এসএসসি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। গোটা পশ্চিমবঙ্গ আজ দুর্নীতির জালে। স্বাস্থ্যের দুর্নীতি চাপা দেওয়ার জন্য আর জি করে পড়ুয়া চিকিৎসককে খুন হতে হয়েছিল। 
সমাবেশের শুরুতে অভ্যর্থনা সমিতির পক্ষে স্মরণিকা প্রকাশ করেন মীনাক্ষী মুখার্জী। সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত,থেকে মানুষজন সমবেত হয়েছিলেন। 

Comments :0

Login to leave a comment