BEHALA ACCIDENT

বেহালায় ছাত্র মৃত্যুর প্রতিবাদ বামপন্থীদের

রাজ্য জেলা কলকাতা

behala child death accident behala chowrasta bengali news kolkata police sfi dyfi aidwa citu

বেহালা চৌরাস্তার দুর্ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার পথে নামলেন বেহালার ছাত্র যুব মহিলা এবং শ্রমিক আন্দোলনের নেতা কর্মীরা। এদিন চৌরাস্তা ট্র্যাফিক গার্ডের সামনে বিক্ষোভ সভা হয়। সভা থেকে ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিকে স্মারকলিপি জমা দেন নেতৃবৃন্দ। 

অপরদিকে শনিবার সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মৃত ছাত্রের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। সেলিম বলেন, পুলিশের কাজ শুধু তৃণমূলের হয়ে ভোট লুট করা নয়, ট্র্যাফিকের সামলানোর দায়িত্বও পুলিশের। 

এদিন দুপুর সাড়ে বারোটার সময় ট্র্যাফিক গার্ডের সামনে কয়েকশো বাম ছাত্র যুব মহিলা এবং সিআইটিইউ কর্মী সমর্থক জমায়েত হন। অটোয় মাইক বেঁধে বিক্ষোভ সভা শুরু হয়। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ছাত্র, যুব, মহিলা এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, পুলিশের তোলাবাজির জন্যই ডায়মন্ড হারবার রোডে সাধারণ মানুষের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠেছে। পুলিশ টাকার বিনিময়ে আইন ভঙ্গকারী যানবাহনকে ছেড়ে দেয়। শুক্রবারও একই ঘটনা ঘটেছে। তার প্রতিবাদেই এলাকার মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়েন। 

ছাত্র মৃত্যুর পরে চৌরাস্তা মোড়ে যান শাসনের তৎপরতা দেখাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই কলকাতা শহরের ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে একগুচ্ছ নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও বাম নেতৃবৃন্দের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এই সক্রিয়তা আগামী দিনে নাও দেখা যেতে পারে। 

তাঁরা মনে করিয়েছেন, এর আগেও চৌরাস্তা মোড় সহ ডায়মন্ড হারবার রোডে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার কয়েকদিন পর অবধি পুলিশ অতি সক্রিয় ছিল। কিন্তু তারপর আবার ভাঁটা পড়েছে। তারফলেই শুক্রবার ট্রাকের চাকার তলায় পিষ্ট হতে হয়েছে বড়িষা হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়া সৌরনীল সরকারকে। প্রশাসন আগের ঘটনাগুলি থেকে শিক্ষা নিলে এই ঘটনা ঘটত না। 

এদিনের বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন সমর সরকার, কৌস্তভ চ্যাটার্জি, বিকাশ ঝাঁ, সমিতা হর চৌধুরী, মঞ্জু কর, শেখ রোহন, তীর্থঙ্কর মুখার্জি, অরূপ মন্ডল সহ বাম নেতৃবৃন্দ। সভা পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা গোপাল বারিক। 

সভা শেষে ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-র হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে দাবি জানানো হয়, শুক্রবারের মত পথ দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। এর পাশাপাশি স্কুল চলাকালীন ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও বেপরোয়া পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণে যথাযত ভূমিকা গ্রহণ, কাটা রুটে অটোর চলাচল বন্ধ করা এবং পথচারীদের হেনস্থা করা বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়। 

বিক্ষোভ সভা শেষে মিছিল করে বড়িষা হাইস্কুলের সামনে যান বাম কর্মী সমর্থকরা। সেখানে আধঘন্টা ধরে পথ অবরোধ করা হয়। 

অপরদিকে পুলিশকে আক্রমণ ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানো এবং চৌরাস্তা ট্র্যাফিক গার্ডে আগুন লাগানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই ১৮জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  ঠাকুরপুকুর ও বেহালা থানা ধৃতদের গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছে। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। বরং প্রকৃত অপরাধীদের বদলে বড়িষা স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্কুলে ঢুকে অভিভাবকদের গ্রেপ্তার ও স্কুলের মধ্যে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। 

ধৃতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে আলিপুর আদালতে উপস্থিত হন বেহালা পশ্চিম অঞ্চলের সিপিআই(এম) নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জি। তিনি বলেছেন, বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চ্যাটার্জি জেলে, এবং বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় পারিবারিক বিবাদ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত, যে এলাকার সাধারণ মানুষের সমস্যার দিকে নজর দেওয়ার সময় নেই। আমাদের আশঙ্কা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও ট্র্যাফিক গার্ডে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা আগুন লাগিয়েছে। তাদের আড়াল করতেই নিরপরাধ অভিভাবক এবং পথচারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

Comments :0

Login to leave a comment