অনির্বান দে
ওষুধের উপর থেকে জিএসটি পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে। ওষুদের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে ওষুধ বিপণন কর্মীদের উপর শোষণ।
শুক্রবার বহরমপুরে জনসভায় এই দাবি তোলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যান্ড সেলস্ রিপ্রেজেন্টেটিভস ইউনিয়নের ২০ তম রাজ্য সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ হয়েছে বহরমপুরে।
জনসভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শুভ্রাংশু ভট্টাচার্য, অভ্যর্থনা সমিতির পক্ষে সুপ্রিয় চন্দ্র সহ নেতৃবৃন্দ। এদিন ব্যাপক বৃষ্টির কারণে সভা সংক্ষিপ্ত করা হয়।
সেপ্টেম্বরের গোড়ায় জিএসটি হারে রদবদল করেছে কেন্দ্র। জীবনদায়ী কয়েকটি ওষুধের কর শূন্য করার ঘোষণা করেছে জিএসটি কাউন্সিল। কিন্তু ওষুধের দাম চড়েই রয়েছে আগে থেকে। তাছাড়া বাকি বহু ওষুধের ওপর চাপানো রয়েছে জিএসটি। এদিন ওষুধের ওপর জিএসটি চাপানোরই বিরোধিতা করেন সেলিম। ওষুধের দাম কমানোর দাবিও তোলেন তিনি।
সেলিম বলেছেন, "স্বাস্থ্যের আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার আন্দোলন, শিল্পায়নের আন্দোলন, শ্রমজীবী মানুষের লড়াইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। রাজ্যকে বাঁচাতে হলে, দেশকে বাঁচাতে বামপন্থী পরিমণ্ডলের পুনর্জাগরণের, পুনর্নিমাণের প্রয়োজন।
মহম্মদ সেলিম বলেছেন, "যখন থেকে জিএসটি লাগু হয়েছে তখন থেকেই মেডিক্যাল সেলস রিপ্রেজেন্টিটিভরা রাস্তায় আছেন প্রতিবাদে। শুধু ওষুধ নয়। স্বাস্থ্য বীমা, জীবন বীমার উপরেও জিএসটি চাপানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বহু দাবি উঠেছে বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের। এখন জিএসটি কাউন্সিল বিমার ওপর জিএসটি প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন।
সেলিম বলেন, বামপন্থীরা মনে করে খাদ্য, কাজ , শিক্ষার মতো স্বাস্থ্যও অধিকার। স্বাস্থ্যকে অধিকার হিসেবে মেনে নিতে হবে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যের অধিকারের বাস্তব রূপায়ণ দেখা গিয়েছে। আর পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় দেখা গিয়েছে স্বাস্থ্য নীতি মানুষ মারার নীতি হয়ে গিয়েছে। মুনাফার পাহাড় জমেছে।
সেলিম বলেছেন, ‘‘মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য ব্যবসার বিষয় নয়। কর প্রত্যাহার করতে হবে। ৯ জুলাই দেশজুড়ে কোটি কোটি খেটে খাওয়া মানুষ লুটেরাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিলেন। সব মিডিয়ায় যখন হিন্দু মুসলিম, ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ দেখানো হচ্ছিল। তখনই খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে মেডিক্যাল সেলস কর্মীরা আসল লড়াই লড়েছেন। বেঁচে থাকার অধিকার, বেকারদের কাজের দাবি, কাজের নিরাপত্তার দাবিতে রাস্তায় লড়াই করেছেন বামপন্থীরা।’’
সেলিম বলেন, "মানুষের রাস্তার লড়াই, কোটি কোটি মানুষের ধর্মঘট সরকারকে জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। যেমন কৃষকদের লড়াই সরকারকে বাধ্য করেছিল কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে। স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াইয়ের ফলে সরকার বলতে বাধ্য হয়েছে, এখন স্মার্ট মিটার লাগানো হবে না। স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘সব অংশের শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বিভিন্ন লড়াইকে এক সূত্রে গাঁথতে হবে। স্কুল-কলেজ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার অধিকারকে সংকুচিত করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’
মন্তব্যসমূহ :0