একদিনের মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের উচ্ছ্বাস গোটা ভারতে জুড়েই। হরমনপ্রীতদের পাশে গোটা দেশ। বাসে, ট্রেনে, চায়ের আড্ডায় ঘনঘন মোবাইল দেখা তো আছেই। টিভি-র সামনে অনেকে জড়ো হয়েছেন। এসএফআই জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করল একাধিক জায়গায়।
নিজেদের যোগ্যতায় সমর্থনও জোগার করেছে দেশের মহিলা ক্রিকেট দল। একদিকে যেমন দলকে সমর্থন অন্যদিকে সমানাধিকারের লড়াই একইভাবে সামনে আসছে বলে মত অনেকের।
ভারত-সাউথ আফ্রিকা মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে উপলক্ষে কলকাতায় তিনটি জায়গায় খেলার স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত করেছে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আজাদ গড় ও বেহালা চত্বরেও এই আয়োজন করেছে ছাত্র যুবরা।
এসএফআই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কমিটির তরফে যাদবপুর চার নম্বর গেট সংলগ্ন জায়গায় রবিবার ক্রিকেট ম্যাচের স্ক্রিনিং করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিশেষ সাড়া ফেলেছে এই উদ্যোগ। ছাত্রদের থেকেও ছাত্রীদের উপস্থিতি বেশি যাদবপুরে।
অন্যদিকে বিক্রমগড় বাজার সংলগ্ন এলাকায় ছাত্র-যুব উৎসবের ডাক দিয়েছিল এসএফআই রাসবিহারী-২ আঞ্চলিক কমিটি ও ডিওয়াইএফআই রাসবিহারী-৩ আঞ্চলিক কমিটি। এখানেও ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ফাইনাল স্ক্রিনিং হয়।
যাদবপুরের ছাত্রী সঙ্গীতা কুন্ডু বলেন, "পুরুষ ও মহিলা এই ভাগাভাগির ঊর্ধ্বে উঠে দেশের ক্রিকেটের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের এই স্ক্রিনিংয়ের মূল বার্তা। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরের ধর্ষণের ঘটনার পর বলেছিলেন মেয়েদের ১১টার পর বাইরে বেরোনোর দরকার নেই। আজকের স্ক্রিনিং তার বিরুদ্ধেও একটা প্রতিবাদ। যেখানে দেশের মেয়েরা গোটা বিশ্বের কাছে ভারতকে ক্রিকেটের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করছে সেখানে একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কথা বলছেন তা অত্যন্ত লজ্জার।’’
এসএফআই কর্মীরা বলেছেন, আরএসএস-বিজেপি যেভাবে মনুবাদী ভাবনায় মেয়েদেরকে শুধু বাড়ির মধ্যেই আটকে রাখতে চায়, তার বিরুদ্ধেও আজকের এই খেলা মোক্ষম জবাব দেবে।
এসএফআই কলকাতা জেলা সম্পাদক দীধিতি রায় বলেন, "যেভাবে গোটা দেশজুড়ে নারী নির্যাতন মেয়েদের ওপর যৌন হেনস্তার ঘটনা প্রতিদিন বাড়ছে তার বিরুদ্ধে কন্ঠ হয়ে উঠতে হবে মেয়েদেরকেই। আমরা দেখেছিলাম বিজেপি’র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ব্রিজভূষণ সিং কিভাবে দেশের কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থা করেছিল। আসলে বিজেপি আরএসএস মেয়েদেরকে একটি গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখতে চাইছে। কিন্তু আজকের এই খেলার মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে তাদের কোনও গণ্ডিতে আটকানো যাবে না।’’
মহিলাদের ঘরে বন্দি রাখার চিন্তার সঙ্গে লড়াই চলছে প্রতিদিনই। মেয়েদের এগিয়ে চলার আখ্যান রসদ জোগাবে সেই লড়াইয়ে, বলছেন অনেকেই।
Comments :0