The Era Of Young Coaches

কোম্পানি , আলোন্সোরা যেন ' নতুন যৌবনেরই দূত '

খেলা

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেমন বাড়ছে গতি । তেমনই পরিবর্তন ঘটছে মানসিকতা , দর্শনের। ফুটবল নামক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাও এর উর্ধে নয়। বিশ্ব ফুটবলে নতুন কোচ ও ম্যানেজারের হাত ধরে আসছে যৌবনের জোয়ার। বর্ষীয়ান কোচেদের চাইতে বড় ক্লাবগুলি বেছে নিচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী কোচেদের। এই তালিকায় রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ , বায়ার্ন মিউনিখ , ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলগুলি। এরিক টেন হ্যাগের কোচিংয়ে ধুঁকতে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিসেম্বরে কোচ করে নিয়ে এসেছিল বছর ৩৯এর রুবেন আমোরিমকে। তখন এই নিয়ে হাজারো সমালোচনা হলেও বর্তমানে ম্যানচেস্টার ফের একবার ইউরোপিয়ান শিরোপা জেতার দৌড়ে রয়েছে । ইউরোপা লিগের ফাইনালে তারা খেলবে তাদের ঘরোয়া প্ৰতিদ্বন্দী টটেনহ্যাম হটস্পারের বিরুদ্ধে। নতুন কোচ মানে নতুন ভাবনা চিন্তা , নতুন কৌশল , নতুন দর্শনের আগমন ঘটে ক্লাবে। ঠিক যেমন ১৯৮৬তে ৪৫বছরের আলেক্স ফার্গুসন প্রথম কোচিং করিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। তবে তার আগে অবশ্য স্কটিশ দল আবের্ডেনকে তিনি চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। তারপর বাকিটা ইতিহাস। ম্যানচেস্টারের ইতিহাসে সব থেকে সফল কোচ এই আলেক্স ফার্গুসন। ' রেড ডেভিলসদের ' খোলনলচে পাল্টে দিয়ে নিজস্ব দর্শনেই খেলতেন দলকে। ২০২৪এর ডিসেম্বরে আসার আগে প্রাক্তন দল স্পোর্টিং সিপিতে ইউরোপিয়ান কোনো ট্রফি দিতে না পারলেও পর্তুগিজ লিগে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন তিনি। সেই কোচের উপরই ভরসা রেখেছিলেন ইউনাইটেড কর্মকর্তারা। গত মরশুমে বায়ার্নের আধিপত্য মুছে দিয়ে লেভারকুরসেনকে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন জাভি আলোন্সো। এই মরশুমে তাই বার্নলিকে প্রিমিয়ার লিগে প্রমোট করানো কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানিকেই কোচিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছিল বায়ার্ন ম্যানেজমেন্ট। সেই দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করেছেন কোম্পানি। বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন বায়ার্নকে। বার্নলিকে দ্বিতীয় ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন করানো একজন প্রায় অনভিজ্ঞ কোচকে দায়িত্ব দিয়ে সত্যিই নজিরবহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। কারণ তারা নতুন মতাদর্শের একজনকে চাইছিল যে তার নিজস্ব দর্শন এবং ট্যাকটিকসে পরিচালনা করতে পারে দলকে। এই সব ক্লাবগুলির কেউই হতক্ষেপ করেননা নতুন কোচেদের কাজে। পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার ফলেই সঠিক ফলাফল দিতে পারছেন এই কোচেরা। সবশেষে আসছেন জাভি আলোন্সো। রিয়ালের প্রাক্তন এই খেলোয়াড় মাদ্রিদের প্রত্যেকটি ঘাসের সঙ্গে পরিচিত। নিজেদের ১২০বছরের ইতিহাসে একবারও খেতাব না জিততে পারে জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুরসেনের নাম  ' নেভারকুরসেন ' নামে খ্যাত হয়েগেছিল। জাভি কোচ হয়ে আসার পর সেই তকমা ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন ' নেভারলুসেন ' নামক নতুন এক তকমা। কারণ ২০২৩-২৪ মরশুমে আলোন্সোর কোচিংয়ে লেভারকুরসেন খেতাব জিতেছিল একটিও ম্যাচ না হেরে। অপরাজেয় অবস্থায় আলোন্সো ভেঙেছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্য। সেই মরশুমে বুন্দেসলিগা , ডিএফবি পোকাল জিতেছিল লেভারকুরসেন। ইউরোপা লিগে আটলান্টার কাছে হারের ফলে একটুর জন্য ত্রিমুকুট হাতছাড়া হলেও লেভারকুরসেনের ক্লাব ইতিহাসে আলোন্সো থেকে যাবেন অমর হয়েই। এবার সেই আলোন্সোকেই সামলাতে হবে এম্ব্যাপে , ভিনিদের। এসেই তার কথা মতো ডিন হিউজসন , আর্নল্ডের মতো দুই ডিফেন্ডারকে সই করিয়ে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আরো একজন মিডফিল্ডার এবং বেনফিকার বছর ২২-র স্প্যানিশ লেফট ব্যাক আলভারো কারেরাসকে দলে নিতে ঝাঁপিয়েছে মাদ্রিদ।  অর্থাৎ নতুন ফুটবলারদের নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের খোলনলচে বদলে একেবারেই নতুনভাবে শুরু করতে চাইছেন আলোন্সো। তার আগমনে অনেক সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলেও মাদ্রিদিস্তাদের মনে চলছে জিদানের সাফল্যের হিসেবনিকেশ। ২০১৫তে এই আন্সেলোত্তির বদলেই প্রাক্তন খেলোয়াড় জিদানের উপর ভরসা রেখেছিলেন মাদ্রিদ ম্যানেজমেন্ট। তারপরেই পর পর তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছিলেন জিদান। তাই এবারেও এক রিয়াল মাদ্রিদ প্রাক্তনীই দায়িত্ব নিতে চলেছেন। দেখা যাক জিদানের এই রেকর্ড আলোন্সো স্পর্শ করতে পারেন কিনা।

Comments :0

Login to leave a comment