পুলিশের দীর্ঘ টালবাহানার, দফায় দফায় যুবদের বিক্ষোভের পর অবশেষে ফারাক্কার নির্যাতিতা শিশুর ময়নাতদন্ত হল মঙ্গলবার দুপুরে। পরিবারের প্রতিনিধির উপস্থিতি এবং ভিডিওগ্রাফি সহ ময়নাতদন্ত হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত নিয়ে আশঙ্কায় পরিবার। আদৌ নিয়ম মেনে ময়নাতদন্ত হয়েছে তো ? অপরাধ লঘু করার চেষ্টা হচ্ছে না তো ?  প্রশ্ন তুলেছে ডিওয়াইএফআই।
গত রবিবার বেলা ১২ টার দিকে ফারাক্কায় উদ্ধার হয়েছিল ওই শিশুর দেহ। সেদিনই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  রবিবার রাতেই মরদেহ নিয়ে আসা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার রাতে জানা যায়, পরিবার বারবার বলা সত্বেও এফআইআর’এ নেই ধর্ষণের ধারা। পরিবার অনড় থাকে, মর্গের সামনে দীর্ঘ অবস্থান করেন ডিওয়াইএফআই নেতারা। অবশেষে চাপের মুখে এফআইআর’এ ধর্ষণের ধারা যোগ করে পুলিশ। তবে সোমবার ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবি জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। সেই দাবিতে লড়াইয়ে থেকেছে ডিওয়াইএফআই নেতারা। বিষয়টি নিয়ে উচ্চআদালতের দারস্থও হন আইনজীবিরা। তবে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে দাবি জানানো হয়েছে, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতির আবেদন সোমবার দুপরেই খারিজ করেছে জঙ্গিপুর আদালত। এদিন ময়নাতদন্তে কোন ম্যাজিস্ট্রেটও ছিলেন না। ডিওয়াইএফআই নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট ছিল না। প্রথম থেকেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মৃতার মা বলেছেন, ‘‘আমরা যেরকম চেয়েছিলাম। সেরকম হল না। আমরা বাধ্য হয়েই ময়নাতদন্তে রাজি হয়েছি।’’
ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস বলেন, ‘‘টানা রবিবার থেকে লড়াই চলছে। শেষমেশ পোস্টমর্টেম হবে। হাইকোর্টের অনুরোধও শোনেনি রাজ্য। তবে প্রশ্ন থাকছে, আদৌ সঠিকভাবে ময়নাতদন্ত হল তো ? পরিবার আশঙ্কিত। আমরা আশঙ্কিত। আমরা রিপোর্ট ও তদন্তের প্রতি নজর রাখছি।’’ 
পরিবার ও যুবদের অভিযোগ সকাল থেকেই পুলিশি হয়রানি চলেছে। এদিনও সকালেই মর্গের বাইরে আসেন মৃতার মা ও পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে ছিলেন ডিওয়াইএফআই , এসএফআই, মহিলা সমিতির নেতৃত্ব। ছিলেন বহরমপুরের সিপিআই(এম) কর্মীরা। ডিওয়াইএফআই জেলা সভাপতি সৈয়দ নুরুল হাসান অভিযোগ করেছেন, যে সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। ফারাক্কা থানার পুলিশ ফোনও ধরে নি। হয়রানির শিকার হয়েছে পরিবার। অবশেষে দুটোর দিকে মর্গের বাইরে বিক্ষোভ দেখান ছাত্র, যুব ও পরিবারের সদস্যরা। তারপর শুরু হয় ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মর্গের আশেপাশেই ছিলেন পুলিশকর্মীরা। এদিন হাসপাতালে ছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, মহিলা সমিতির নেত্রী শেখ হাসিনা,।  ধ্রুবজ্যোতি সাহা বলেন, সন্তানহারা  মায়ের আর্তির প্রতি কোন রকম সহানুভুতি দেখায় নি রাজ্য সরকারের  পুলিশ প্রশাসন থেকে রাজ্য প্রশাসন। এটাই প্রশাসনের চেহারা। ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করার ষড়যন্ত্র চলছে। সঠিক বিচার না হওয়া অবধি আন্দোলন চলবে। দ্রুত ফারাক্কা থানা অভিযান হবে।
Murshidabad
ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াই ফারাক্কার নির্যাতিতা শিশুর ময়নাতদন্ত, আশঙ্কায় পরিবার
                                    
                                
                                    ×
                                    
                                
                                                        
                                        
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0