বঙ্গোপসাগরীয় অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে তৈরি ঘূর্ণিঝড় তেমন প্রভাব দেখাতে পারল না। শুক্রবার সকালে তৈরি হয়েছিল ওই ঘূর্ণিঝড়টি। কিন্তু পশ্চিমী বাতাসের সঙ্গে লাগাতার লড়াই করতে করতে শক্তিহীন শুধু নয়, পথ ঘুরে বাংলাদেশে গিয়ে দিনের দিন শেষ হলো মিধিলি। তবে দূরবর্তী ওই ঘূর্ণিঝড়ের আবহে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলার আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা মিলল। শুক্রবার সকালের দিকে মাঝমধ্যে একটু ঝোড়ো বাতাস ছাড়া মিধিলের উপস্থিতি তেমন করে টের পাওয়া যায়নি।
উপকূলবর্তী জেলায় কিছু বৃষ্টির খবর মিলেছে। শহরাঞ্চলে সেই বৃষ্টি ছিল ছিটেফোঁটা। তবে মিধিলের জেরে কলকাতার সর্বোচ্চ পারদ এক ধাক্কায় ৩ ডিগ্রি নেমে গেছে। এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি। আগামীকাল থেকে পারদ নামা শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। রাতের পারদ নামার সঙ্গে সঙ্গে নভেম্বরেই শীতের আমেজ চলে আসবে বলে মনে করছে আলিপুর।
নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ; অতি গভীর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়ার একটা সম্ভাবনার কথা আগেই জানা ছিল। কিন্তু সুগভীর নিম্নচাপটির অবস্থানের জেরে যে তা এবঙ্গে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল আলিপুর হাওয়া অফিস। তবুও একটা আশঙ্কা ছিলই। সেটাই শুক্রবার সকালে কিছুটা হলেও বোঝা গেছিল। তবে নিম্নচাপের জেরে যে ভারী বৃষ্টি হবে না, তা আগেই জানানো হয়েছিল। তবুও কৃষকদের করণীয় কী বলতে নবান্ন থেমে থাকেনি।
দুপুরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে মাঠের পাকা ধানের ৮০ শতাংশ কেটে নিতে বলা হয়। এমনকি দ্রুত এই কাজ করতে কম্বাইন্ড প্যাডি হারভেস্টার ব্যবহার করতেও বলা হয়েছিল। আশার কথা বৃষ্টি সে অর্থে হয়নি। যাঁরা ধান বা তৈলবীজ তুলতে পারেননি, তাঁদের তেমন ক্ষতি হয়নি। বৃহস্পতিবারের পরিস্থিতি আচমকাই গভীর রাতে বদলে গেছে। জেট গতির পশ্চিমী বাতাস ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে অতিগভীর নিম্নচাপের প্রধান রসদ জলভর্তি মেঘ।
এদিন মিধিল বাংলাদেশে গিয়ে ডাঙায় আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এইবারের পর্ব সাঙ্গ হলো। এবার চেয়ে থাকা শীতের দিকে। নভেম্বরের দুপুরে এখনো পাখার নিচে শুতে হচ্ছে। রাতেও শহরে চালাতে হচ্ছে পাখা। এই ধরনের আবহাওয়া বড় অচেনা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নিম্নচাপের আর ঘূর্ণিঝড়ের ঘনঘটার জেরে বাধাপ্রাপ্ত পশ্চিমী হাওয়া এবার স্বাচ্ছন্দ্য দেবে রাজ্যের মানুষকে। তারই অপেক্ষা করতে হবে এই মাসের শেষ পর্যন্ত।
Cyclone
ঘূর্ণিঝড় নিজে ঘুরেই শেষ হলো
×
Comments :0