GENERAL KNOWLEDGE — TAPAN KUMAR BIRAGAYA — BIDHYAPURER RATHER MELA — NATUNPATA — 27 JUNE 2025, 3rd YEAR

জানা অজানা — তপন কুমার বৈরাগ্য — বৈদ্যপুরের রথের মেলা — নতুনপাতা — ২৭ জুন ২০২৫, বর্ষ ৩

ছোটদের বিভাগ

GENERAL KNOWLEDGE  TAPAN KUMAR BIRAGAYA  BIDHYAPURER RATHER MELA  NATUNPATA  27 JUNE 2025 3rd YEAR

জানা অজানানতুনপাতা - বর্ষ ৩

বৈদ্যপুরের রথের মেলা
 

তপন কুমার বৈরাগ্য
 

বৈদ্যপুর অম্বিকা কালনা মহকুমায় এবং পূর্ববর্ধমান জেলায়
অবস্থিত।বাংলার একটা প্রাচীন জনপদ।এই বৈদ্যপুর জুড়ে
আছে প্রাচীন স্থাপত্য।বৈদ্যপুরের কথা উল্লেখ আছে মনসামঙ্গলের
শ্রেষ্ঠ কবি বিজয়গুপ্তের পদ্মপুরাণে।তাছাড়া মনসামঙ্গলের আদি
কবি কানাহরি দত্তের কাব্যে,কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের কাব্যেও
বৈদ্যপুরের কথা উল্লেখ আছে।
মনসামঙ্গলে লেখা আছে চাঁদসদাগরের পুত্র লখিন্দরকে
কালনাগিনী দংশন করলে বেহুলা এই বৈদ্যপুরে এসেছিলেন
বৈদ্যের খোঁজে।তাই এই জনপদের নাম হয় বৈদ্যপুর।
আবার সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসেও বৈদ্যপুরের
কথা উল্লেখ আছে।প্রাচীন স্থাপত্য দেখতে হলে এই বৈদ্যপুরে
অবশ্যই আসতে হবে।বেশিরভাগ নিদর্শনই মুর্শিদকুলি খাঁর
আমলে এখানকার জমিদার কিংকরমাধব তৈরী করেছিলেন।
এই প্রাচীন স্থাপত্যের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য রাজরাজেশ্বর মন্দির,
চালামন্দির,রত্নমন্দির,পূজাবাড়ি,বৃন্দাবনচন্দ্রের মন্দির,রাসমন্ডপ,
জমিদারবাড়ি,নহবতখানা,কাছাড়িবাড়ি আরো কত কি।
একবার বৈদ্যপুর এসে না ঘুরে দেখলে বুঝার উপায় নেই
এর আনাচে কানাচে কতো প্রাচীন স্থাপত্য লুকিয়ে আছে।
পশ্চিমবঙ্গের তিনটি জায়গায় রথেরমেলা প্রসিদ্ধ।প্রথম
হুগলি জেলার মাহেশ।যার কথা উল্লেখ আছে বঙ্কিমচন্দ্রের
রাধারাণী নামক উপন্যাসে।দ্বিতীয় এই হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া।
তৃতীয় পূর্ববর্ধমান জেলার বৈদ্যপুরে।এখানকার রথ ১৪চূড়ার রথ।
এতো বড় রথ পশ্চিমবঙ্গে কোথাও হয় না।সবচেয়ে প্রাচীন রথ।
কাঠের কারুকার্য করা এই রথ।রথের সামনে আছে কাঠের
বড় বড় পুতুল এবং ঘোড়া।এখানকার রথের বৈশিষ্ট্য হলো
অন্যান্য রথে যেমন জগন্নাথ,বলরাম,সূভদ্রা থাকে ,এখানকার
রথে আরোহণ করে রাজরাজেশ্বর এবং বৃন্দাবনচন্দ্র। রথের দিন
এখানে বিরাটমেলা বসে।এখানকার মেলার একটা বৈশিষ্ট্য এখানে
কাঠের পুতুল থেকে আরম্ভ করে নানারকম কাঠের জিনিস
বিক্রয় হয়।তাছাড়া অন্যান্য জিনিস তো আছেই।বসে নাগরদোলা,
সার্কাস,ম্যাজিক থেকে মানুষের মনোরঞ্জনের নানা বিষয়।খাবারের
দোকান।তেলেভাজা বাদামের দোকান তো আছেই।
রথের দিন হাজার হাজার লোক এই রথের রশি টানে।
এক সপ্তাহের উপর এই মেলা থাকে।
এই রথের মেলায় জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ
এখানে এসে মিলনক্ষেত্র গড়ে তোলে।এখানেই এই মেলার সার্থকতা। 


 

Comments :0

Login to leave a comment