উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তর থেকে দক্ষিণ, গোটা বাংলাজুড়েই হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। গত এগারো দিনে আসানসোলে ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু হলো। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে আসানসোল তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে। বিশেষত আসানসোল পৌর কর্পোরেশন এলাকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে এক পুলিশ কনস্টেবলও রয়েছেন। আসানসোল জেলা হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ড. ইউনুস খান জানান, জেলায় এখন অ্যাকটিভ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪২জন।
শনিবার আসানসোল নগর নিগম এলাকার দুইজন মহিলার ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে। জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ইটভাটার শ্রমিক জামুড়িয়ানন্ডী নিবাসী বুধনীহাঁসদা (৩৭) ও বার্নপুর পুরানহাট নতুনপল্লির বাসিন্দা চন্দনা চট্টোপাধ্যায়ের (৬৫)। দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আসানসোলে এগারো দিন আগে ডেঙ্গুতে প্রথম মৃত্যু হয়েছিল ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এস বি গরাই রোডের রাঙ্গানিয়াপাড়ার বিশ বছরের কলেজ পড়ুয়া অবিনাশ সাউয়ের। সোমবার নতুন করে দুইজন জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫৬ জন।
সিপিআই(এম) দমদম এরিয়া কমিটি অন্তর্গত শাখার (১৫ ও ১৬ নং ওয়ার্ড) পার্টি সদস্য কমরেড বাবলু দাস ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে দমদম পৌরসভা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতে রবিবার সকালে প্রয়াত হয়েছেন।
ক্রমশ ডেঙ্গু কবলিত হয়ে পড়ছে রাজ্যের একের পর এক জেলা। সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। সরকারের তরফে কোনও পরিসংখ্যান নেই, বিভিন্ন বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গু পজিটিভের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়েছে। ওদিকে ১৭ পেরিয়েছে মৃত্যু সংখ্যা। বেসরকারি মতে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা আরও বেশি। সরকারিভাবে ডেঙ্গু মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। রাজ্যে মোট কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন কতো জনের মৃত্যু হয়েছে সেই বিষয়ে এখনও প্রর্যন্ত রাজ্য সরকার সঠিক তথ্য প্রকাশ করেনি এমন কি এখনও কত জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন সেই পরিসংখ্যান এখনও জানানো হয়নি বলে বিরোধীদের অভিযোগ। সরকারের তরফে কোনও সঠিক পরিসংখ্যান না মেলায় বিভ্রান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। প্রশাসন সে ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন বলে অভিযোগ করছেন সাধারণ মানুষ। তাদের অভিযোগ, নর্দমা পরিষ্কার করা হয় না, নিয়মিত সাফাই হয় না জঞ্জাল।
গ্রামে গঞ্জে বহু চিকিৎসাকেন্দ্রে জ্বর নিয়ে পৌঁছালেও সঠিক সময়ে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট মিলছে না বহু রোগীর। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ডেঙ্গু বিপজ্জনক আকার নিয়েছে। কলকাতায় বিভিন্ন হাসপাতালেও বহু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি বর্তমানে। খাস কলকাতাতেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে জঞ্জাল সাফ ও জমা জল পরিষ্কার নিয়ে বাসিন্দাদের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সহ ১৭ দফা দাবিতে আসানসোল পৌর নিগমের রানিগঞ্জ ২নম্বর বরো দপ্তরে বিক্ষোভ হয় সোমবার। সিপিআই(এম) রানিগঞ্জ এরিয়া কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে লালা ঝান্ডা কাঁধে প্রসুপ্রিয় রায়, হেমন্ত প্রভাকর,আনন্দ বাউরি, দিব্যেন্দু মুখার্জি,সঞ্জয় প্রামাণিক,কল্লোল ঘোষ প্রমুখ।
Comments :0