প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল ২০০৯-র ২২ ফেব্রুয়ারি। সেই পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হলো প্রায় পনের বছর পর। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে, শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর অসম্পূর্ণ অংশের। শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড ২.৪৫ কিলোমিটার পথ মেট্রোর জন্য খোলা হয়েছে এদিন।
সেদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখার্জি, মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী, সাংসদ সুধাংশু শীল, অমিতাভ নন্দী, তড়িৎ বরণ তোপদার, মহম্মদ সেলিম। সোশাল মিডিয়ায় সিপিআই(এম)’র পোস্টে তা মনে করানো হয়েছে।
মোদী এদিন কলকাতা মেট্রোর মোট তিনটি রাস্তার তিনটি অংশের উদ্বোধন করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে নোয়াপড়া থেকে কলকাতা বিমানবন্দর (৬.৭৭ কিলোমিটার) ইয়েলো লাইন এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে বেলেঘাটা (৪.৩৯ কিলোমিটার) অরেঞ্জ লাইনও।
পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের মেয়াদে কলকাতা ও শহরতলি মিলিয়ে মোট ৫টি মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। ইস্ট-ওয়েস্ট, জোকা – বিবাদী বাগ, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর, নোয়াপারা-বারাসাত এবং বারাকপুর-বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর প্রকল্প। কিন্তু এগিয়েছে সামান্য।
সিপিআই(এম) বলেছে যে কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল, দুই সরকারের অবহেলার কারণে দেরি হয়েছে কাজে। ২০০৩ সালে রাজ্য সরকার, কেন্দ্রের আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের যৌথ উদ্যোগে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শুরু হয়। ঋণ দেওয়ার কথা ছিল জাপান ব্যাঙ্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের। ২০০৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন তৃণমূল কংগ্রেস তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে কালো পতাকা দেখয়েছিল। সেই মমতা এখন দাবি করছেন যে ব্লু প্রিন্ট তাঁর!
উল্লেখ্য, টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়া মেট্রো রুটের সম্প্রসারণের কাজে ৩৩শতাংশ ব্যয় বহন করেছিল রাজ্য সরকার। রেলমন্ত্রী হওয়ার কয়েক সপ্তাহ বাদে ফিতে কেটে উদ্বোধন করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তখন ২০০৯। কিন্তু রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকা হয়নি অনুষ্ঠানে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রকল্প সল্টলেক থেকে হাওড়া ময়দানকে জুড়ে দেওয়ার গ্রিন লাইন। তার বাকি অংশের লাইন বছরখানেক আগে চালু হলেও এসপ্ল্যানেড-শিয়ালদহ অংশ বাকি ছিল। ২০১১ পর্যন্ত বামফ্রন্ট সরকারে থাকার সময়েই জমি ঠিক করে পিলার গাঁথার কাজের বড় অংশ চালু হয়ে গিয়েছিল।
এদিন তিন প্রকল্প উদ্বোধনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, একুশ শতকের ভারত কেমন হবে তার নমুনা মেট্রোর এই সম্প্রসারণ। তাঁর দাবি, ভারত সরকার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে সচেষ্ট। রাজ্যে ১০০ শতাংশ ট্রেন লাইনই এখন বিদ্যুৎচালিত। ৯টি বন্দে ভারত ট্রেনের কথাও শুনিয়েছেন। বলেছেন পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থায় যোগাযোগের দ্রুততা লক্ষ্য সরকারের।
নিত্যযাত্রী থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরা যদিও ভিন্ন কথা শোনাচ্ছেন। যশোবন্তপুর-শালিমার সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর: ০২৮৬৪) গত ১৮ তারিখে শালিমারে পৌঁছায় ১৮ ঘন্টা দেরিতে। নিত্যযাত্রীরা নিয়মিত গোলযোগের কারণে দেরির শিকার। মেট্রো পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে বারবারই।
East-West Metro
২০০৯-এ শিলান্যাস, পুরোদমে চালু হতে ১৫ বছর পার

×
Comments :0