Messi Scam

জল‍‌ কেলেঙ্কারি

সম্পাদকীয় বিভাগ

মেসিকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে মেসি ভক্তদের মধ্যে তুমুল উন্মাদনা সৃষ্টি করে বেশ কয়েক কোটি টাকা কামানোর যে ব্যবসার জাল পাতা হয়েছিল তার নতুন নতুন উপকরণ ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। স্টেডিয়ামে মোট আসন অপেক্ষা অনেক বেশি টিকিটই বিক্রি করা হয়নি, দ্বিগুণ তিনগুণ দামে সেই টিকিট নিয়ে দেদার কালোবাজারিও হয়েছে। তথাকথিত ভিআইপি তথা শাসক প্রভাবশালীদের হাত ধরে নেতা-মন্ত্রী-সেলিব্রেটিদের বাড়ির লোক ছাড়াও ঢুকে পড়েছেন বহু লোক। এখানে বিনাটিকিটে বড়সড় ঘাপলা হয়েছে কিনা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্টেডিয়ামের ভেতর জল বিক্রিকে ঘিরে যে বড় কেলেঙ্কারি হয়েছে সেটা প্রকাশ্যে এসে‍‌ গেছে। জানা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যের কোনও এক সংস্থা নাকি স্টেডিয়ামের দর্শকদের জন্য জল বিক্রির বরাত পেয়েছে। তারজন্য সেই সংস্থা নাকি ৩০ লক্ষ টাকা দিয়েছে উদ্যোক্তাদের। এদিকে মমতা ব্যানার্জির পুলিশ আগে থেকে প্রচার করে গেছে কেউ যেন জলের বোতল নিয়ে স্টেডিয়ামে না ঢোকে। কারণ স্টেডিয়ামের ভেতরে জলের বোতল কেনা যাবে। অর্থাৎ গুজরাটি সংস্থার জল বিক্রির খদ্দের নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে ‍‌এরাজ্যের পুলিশ। স্টেডিয়ামের ভেতর ২০ টাকা দামের এক লিটার জলের বোতল বিক্রি করা হয়েছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। মেসি ভক্তদের মাথায় টুপি পরিয়ে খাঁচায় ঢুকিয়ে দিব্যি পকেট কাটার ব্যবস্থা করা হলো।
এক লিটার জল ২০ টাকায় বিক্রি করলে বিক্রেতার যথেষ্ট লাভ থাকে। সেই জল যদি ন্যূনতম ১৫০ টাকায় বিক্রি হয় তাহলে লিটার পিছু বা বোতল পিছু অতিরিক্ত মুনাফা হয় ১৩০ টাকা। ৭০-৮০ হাজার দর্শকের মধ্যে ৫০ হাজারও যদি জল কেনে তাহলে অতিরিক্ত ৬৫ লক্ষ টাকা মুনাফা হয়। তার থেকে ৩০ লক্ষ টাকা উদ্যোক্তাদের দেবার পরও ৩৫ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত লাভ করে গুজরাটি সংস্থা। এই দেড়শো দু’শো টাকার বোতলই গন্ডগোলের সময় মাঠে ছুঁড়েছিল দর্শকরা।
এমনই খবরই মিলছে যে অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রির জন্য মমতা ব্যানার্জির ছবিও নাকি ব্যবহার করা হয়েছে। তেমনি মেসির সঙ্গে ছবি তোলা, হ্যান্ডশেক করার জন্য মাথাপিছু লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। সব মিলিয়ে আয়োজন হয়েছে বিশাল ব্যবসার। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এর কোন খবরই পৌঁছায়নি সেটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না।
এমন একটা বিশাল ইভেন্টে মুখ্যমন্ত্রীর অনেক আগে না হোক অন্তত মেসির সঙ্গেই স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর কথা। কারণ, মেসিকে রাজ্যবাসীর হয়ে তিনি স্বাগত জানাবেন। কিন্তু তিনি আসেননি। আসার পথে তিনি জানতে পারেন ২২ মিনিট থেকে মেসি চলে গেছেন। তারপরই শুরু হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। রাস্তা থেকেই তিনি ফিরে গেছেন। ফিরে যেতে হয়েছে রাজ্যপালকেও। গোটাটাই রহস্যে মোড়া। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কি খবর ছিল এমন বিশৃঙ্খল কাণ্ড ঘটতে পারে। তাই মুখ রক্ষার জন্য তিনি মেসির থাকা অবস্থায় যাননি। এই রহস্যেরও কিনারা হওয়া দরকার। পুলিশ বলছে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সরকার নীরব। পালের গোদাদের মানুষ দেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কি পুলিশ কি সরকার নীরব।

Comments :0

Login to leave a comment