কর্পোরেট স্বার্থে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ২৯টি শ্রম আইনের রক্ষা কবচ তুলে দিয়ে নতুন শ্রম কোড চালুর প্রতিবাদে শ্রমিক কর্মচারী বিরোধী ৪ টি শ্রমকোডের বিরোধিতা করে সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশে সামিল হলেন বন্দর শ্রমিক কর্মচারীরা। বন্দরের সদর দপ্তরে শ্রমকোডের প্রতিলিপি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। ৪টি শ্রমকোড প্রত্যহার না করলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান সিআইটিইউ অনুমোদিত ক্যালকাটা পোর্ট আণ্ড শোর মজদুর ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে পার্লামেন্টে এই শ্রম কোড পাশ করেছেন মোদী। সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন। ১ এপ্রিল থেকে সারা দেশে শ্রম কোড লাগু করার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের শ্রমিকশ্রেণি এই শ্রম কোডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। শ্রম কোডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। কারণ এই আইনে কাজের ঘণ্টা, শ্রমিকের লড়াইয়ের অধিকার, মজুরির দাবি উপেক্ষিত হবে। বেতন বাড়ানোর জন্য দরকষাকষি করতে পারবে না। কোনও কারখানার শ্রমিককে যদি কারখানার মালিক ছাঁটাই করে দেয় বা তাঁর প্রাপ্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করে সে আইনগত সাহায্য নিতে পারবে না। মালিক পক্ষের সহায়ক শ্রম কোড। শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী এই কালা শ্রম কোডের বিরুদ্ধে সিআইটিইউ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে রাজ্যজুড়ে ৪ টি শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়ে ছিল। এর পরিপেক্ষিতে বন্দরের সদর দপ্তরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র মণ্ডল বলেন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজেপি’র কোন ভূমিকা ছিল না। দেশের শ্রমিক কর্মচারী স্বার্থ রক্ষা করে এমন কোন আইন প্রনয়ন করেনি আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার। স্বাধীনতার পূর্বে শ্রমিক কর্মীদের দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ইউনিয়ন করার অধিকার আদায় করেছিল ১৯২৬ সালে শ্রমিক কর্মচারীরা। পরবর্তী কালে বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ২৯টি শ্রম আইন লাগু হয়েছিল যা কিছুটা শ্রমিক কর্মচারীদের সহায়ক ছিল। আজ আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখানো ফেরিওয়ালা দেশের বৃহত অংশের শ্রমিক কর্মচারীদের ক্রিতদাসে রুপান্তরিত করতে চলছে ৪ টি শ্রমকোড লাগুর মধ্যে দিয়ে। তিনি বলেন, দেশের শ্রমিক কর্মচারীরা ছেড়ে দেবে না। অবিলম্বে ৪টি শ্রমকোড বাতিলের দাবি জানান তিনি। এছাড়া বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের সহ সভাপতি প্রতীম ঘোষ, ইনোপ্রকাস পাল, সহকারি সাধারণ সম্পাদক কাবেরী দাস সিংহ রায়, যুগ্মসম্পাদক গৌতম রাই প্রমূখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সভাপতি মহম্মদ ফিরোজ খান। ইউনিয়নের হলদিয়া শাখার পক্ষ থেকে হলদিয়া ডকে ৪ টি শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের সহ সভাপত অচিন্ত শাসমল, যুগ্মসম্পাদক বিমান মিস্ত্রী ও অন্যন্যা বক্তা। সভাপতিত্ব করেন বর্ষীয়ান নেতা অবিনাশ দাস।
Port Workers
শ্রমকোডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বন্দর শ্রমিকদের
শ্রমকোডের প্রতিলিপি পুড়িয়ে প্রতিবাদ বন্দর শ্রমিক কর্মচারীদের।
×
Comments :0