Cold Wave

উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহ

জাতীয়

কুয়াশাচ্ছন্ন দিল্লিতে শীতের সকালে

দেশের অনেক রাজ্য বর্তমানে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে। ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। মধ্য ও উত্তর ভারতে তীব্র ঠান্ডা এবং ঘন কুয়াশা অব্যাহত। আবহাওয়া দপ্তর মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় সহ ১৮টি রাজ্যে ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করেছে। মধ্যপ্রদেশে শীত চরমে। রবিবার গোয়ালিয়র সহ ১৮টি শহর কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। ভোপাল, ইন্দোর, উজ্জয়িনী, গোয়ালিয়র এবং জবলপুরে কুয়াশার কারণে প্রতিদিন ২০টিরও বেশি ট্রেন ৩০ মিনিট থেকে ৫ ঘন্টা বিলম্বিত। ভোপাল এবং ইন্দোর থেকে আসা বিমানগুলিও দেরি হচ্ছে। দৃশ্যমানতা এত কম যে সকালে ৫০ মিটারের বেশি কিছু দেখা যাচ্ছে না। মধ্যপ্রদেশে শনিবার প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। শাহদোলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ভোপালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ভোপালের তাপমাত্রা এক সপ্তাহ ধরে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রয়েছে। 
দিল্লির শ্বাসরুদ্ধকর বাতাসে মানুষ ভুগছে। শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। রাজধানীর বাসিন্দারা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। শনিবার, বায়ু মানের সূচক এআইকিউ ৩৯৮-এ পৌঁছেছে। দিল্লির জন্য বায়ু মানের প্রাথমিক সতর্কতা যে আগামী দুই দিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
আইএমডি মতে, একটি সক্রিয় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রয়েছে, যা আগামী ৩-৪ দিন ধরে উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রভাব ফেলবে। এর ফলে, হিমালয় অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকালও ভারী বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যার প্রভাব কাশ্মীর উপত্যকায় পড়তে পারে। তাছাড়া, আগামী ৩-৪ দিন ধরে পাঞ্জাবের সমতল এবং উত্তরাঞ্চলেও হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।

উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে ঠান্ডা হাওয়া শীত আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দিনে ও রাতে উভয় সময়ই সমানভাবে ঠান্ডা। বেশিরভাগ শহরে রোদ নেই। শিশির বিন্দু ঝরছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো। রাস্তাঘাটে মানুষ প্রায় নেই বললেই চলে। উত্তরপ্রদেশে সিমলা এবং নৈনিতালের তুলনায় ঠান্ডা বেশি। রবিবার সকালে বেরেলি এবং কানপুর সহ অনেক শহরের তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি বা তার কম রেকর্ড করা হয়েছে। কানপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৪ ডিগ্রি।
আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রাজস্থানের উপর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে অনেক এলাকায় আকাশ মেঘলা থাকবে। সকাল ও সন্ধ্যার কুয়াশা এবং তীব্র ঠান্ডা থেকে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় সামান্য বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে। বারমেরে সর্বোচ্চ দিনের তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রেকর্ড করা হয়েছে। ফতেহপুর এবং দুঙ্গারপুরে সর্বনিম্ন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
গত দুই দিনে উত্তরাখণ্ডের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে। গত রাতের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯ ডিসেম্বর আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রবিবার সমতল অঞ্চলের ছয়টি জেলা হরিদ্বার, উধম সিং নগর, দেরাদুন, নৈনিতাল, চম্পাবত এবং পৌরি ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। আবহাওয়া বিভাগ উত্তরকাশী,  চামোলি,  রুদ্রপ্রয়াগ এবং পিথোরাগড়ে তুষারপাতের সতর্কতা জারি করেছে।
হরিয়ানার উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফরিদাবাদ, গুরুগ্রাম, কৈথাল, কর্নাল, নুহ এবং পানিপথে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। আবহাওয়া দপ্তর আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। যমুনানগর, কর্নাল, পানিপথ, সোনিপথ, গুরুগ্রাম, রোহতক, ঝাজ্জর এবং ফরিদাবাদে কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিন সকালে পাঞ্জাবের বেশিরভাগ শহর ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। কুয়াশার কারণে মানসার বুধলাদায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে ১২টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার মধ্যে ফাজিলকাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন কুয়াশা এবং শীতের প্রভাব অব্যাহত থাকবে।

Comments :0

Login to leave a comment