Fake notes recovered in Sandeshkhali

সন্দেশখালিতে উদ্ধার জালনোট, নাম জড়াচ্ছে শেখ শাজাহানেরও

জেলা

রয়্যাল হোটেল থেকে গ্রেপ্তার দুই।

প্রবীর দাস

সন্দেশখালি থেকে উদ্ধার হলো ৯ কোটি টাকা। যার মধ্যে আসল ৭০হাজারের মতো এবং বাকিটা ভারতীয় জাল টাকা। বিপুল অঙ্কের টাকার সাথে উদ্ধার হয়েছে বিদেশী মূদ্রা, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, পাঞ্চিং মেশিন এবং দুটি আধার কার্ড। উদ্ধার হওয়া অধিকাংশ টাকাই ৫০০ টাকার নোট। জাল টাকার কারবারিদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের ভারতীয় জাল টাকা দেখে বিস্মিত বসিরহাট পুলিশ জেলার অধিকারিকরা।

শুক্রবার রাতে সেই রয়্যাল হোটেল থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারে সন্দেহ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। যা নিয়ে ধামাখালি সহ গোটা দ্বীপাঞ্চলে জল্পনা তুঙ্গে। বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারে সন্দেশখালি থানার পুলিশ গ্রেফতার করে দুই ব্যক্তিকে। যাদের মধ্যে একজনের নাম সিরাজ উদ্দিন মোল্লা। তার বাড়ি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া লাগোয়া দক্ষিণ ২৪পরগনার জীবনতলা থানার মোটরদিঘি গ্রামে। উদ্ধারকৃত আধার কার্ড দুটি এই সিরাজ উদ্দিনের। অপরজন দেবব্রত চক্রবর্তী দক্ষিণ ২৪পরগনার মহেশতলা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের শনিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে আনা হয়। আদালত ধৃতদের ৪দিনের পুলিশ হেফাজত দেয়। বিপুল পরিমাণ জাল ও আসল টাকা এবং সাথে বিদেশী মুদ্রা কিভাবে কি উদ্দেশ্যে এখানে আনা হলো? কোন আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত কিনা সবটাই খতিয়ে দেখতে শুরু হয়েছে তদন্ত। এদিন এমনটাই পুলিশ জানিয়েছে।

নির্বাচন এলেই কালো টাকার রমরমা শুরু হয়। তবে কী বাজারে জাল টাকা ছড়িয়ে আসল টাকা কব্জায় এনে নির্বাচনে তা ব্যবহার করাই উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের শাসকদলের? সঙ্গত কারণেই এই প্রশ্ন তুলছেন সন্দেশখালির আপামর জনগণ ।কী সেই কারণ? ইডি সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকা সন্দেশখালির তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জেলবন্দি শেখ শাজাহানের খাসতালুকের একটি ধামাখালি। আর সেই ধামাখালির ফেরিঘাট সংলগ্ন হোটেল রয়্যালের একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয় বিপুল অঙ্কের নকল ও আসল টাকা এবং নেপালী মুদ্রা। সন্দেশখালি কান্ডের আগে পর্যন্ত এই হোটেলটির মালিক ছিল শেখ শাজাহান এবং তৃণমূলের অপর প্রাক্তন ব্লক সভাপতি শিবু হাজরা। হোটেলটিতে অবৈধ কারবার চলতো রমরমিয়ে। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর যাতায়াত ছিল নিয়মিত। আদপে হোটেলটি ছিল দূর্গামণ্ডপ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তৃণমূলের রামকৃষ্ণ মণ্ডলের। তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে বাপ্পাদিত্য হোটেলটি চালাতো। এই বাপ্পাদিত্যের কাছ থেকে জোরপূর্বক হোটেলটি কেড়ে নেয় শেখ শাজাহান এবং শিবু হাজরা। জনশ্রুতি আছে এই হোটেলটিকে ব্যবহার করে শেখ শাজাহানের অবৈধ কারবার চলতো রমরমিয়ে। কী সেই কারবার? জানা যায়, রাত গভীর হলে বাংলাদেশ থেকে রায়মঙ্গল,কলাগাছি নদী পেরিয়ে সোনা, বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রা,পিতল কাঁসা আসতো রামপুর,মেটেখালি বাজারে।সেখান থেকে সেগুলি চলে যেত সোজা খিদিরপুরের কোনও এক গোপন আস্তানায়। এভাবে এই সেফ করিডোর ব্যবহার করে হোটেল রয়্যালে বসে দিনের পর দিন এই অবৈধ কারবার চালাতো শেখ শাজাহান। এখন সে জেলবন্দি। তবে কী জেলে বসেই সে এই কারবার চালাচ্ছে? সূত্রের খবর, শেখ শাজাহান জেলবন্দি থাকলেও তারই অনুগামী বেড়মজুর-২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আবু সিদ্দিক মোল্লা ও তার শাগরেদ রফসেল এই হোটেলটি দেখভালের দায়িত্বে। 

Comments :0

Login to leave a comment