All Imdia Strike

শ্রমকোড, জি-রাম-জি, ‘শান্তি’, বিমা আইন বাতিলের ডাকে ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘট

জাতীয়

শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিতে মোদী সরকার চালু করেছে শ্রম কোড। তার বিরুদ্ধে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশন সমূহ।
জীবন-জীবিকা ও শ্রমিকদের অধিকারের ওপর মোদী সরকার যে আক্রমণ নামিয়ে এনেছে, তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আরও শক্তিশালী প্রতিবাদ গড়ে তোলার ডাক দিয়ে, মঙ্গলবার ধর্মঘটের ঘোষণা করেছে সিআইটিইউ, এআইটিইউসি,আইএনটিইউসি, এইচএমএস, টিইউসিসি, এআইইউটিউসি, সেবা,এআইসিসিটিইউ, এলপিএফ, ইউটিইউসি এবং বিভিন্ন শিল্গ সেক্টরের ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন এবং কর্মচারী ফেডারেশন সমূহ।
গত ২১ নভেম্বর ২৯টি শ্রম আইন বাতিল করে ৪টি শ্রম কোড লাগু করা হয়েছে। এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতেই ধর্মঘট। আগামী ৯ জানুয়ারি দিল্লির এইচ কে এস ভবনে জাতীয় শ্রমিক কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানেই সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হবে। কৃষক, খেতমজুর, ছাত্র, যুব, মহিলা সহ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে ধর্মঘটের সমর্থনে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ নেতৃত্ব।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির বৈঠকে মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতির উল্লেখ করে বলা হয়, কর্পোরেটদের অবাধে শ্রমিকদের ওপর যথেচ্ছাচার চালানোর সুযোগ করে দিতেই শ্রমকোড আনা হলো। বিজেপি শ্রমিকদের পেটে লাথি মেরে, তাদের কর্পোরেট প্রভুদের মুনাফার রাস্তা প্রশস্ত করতে চায়, জানিয়েছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। শ্রম কোডের পাশাপাশি আনা হয়েছে ‘শান্তি’ বিল—  যার মাধ্যমে পরমাণু ক্ষেত্রে ঢালাও বেসরকারিকরণ করা হয়েছে। এর ফলে দেশের নিরাপত্তা বিপন্ন হবে। বহু আন্দোলনের ফসল মনরেগা আইন তুলে দিয়ে কাজের নিশ্চয়তা কেড়ে নেওয়া হলো। বিমা আইন বদলে এই খাতে বিদেশী ফাটকাবাজদের অবাধ বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়ে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের সারা জীবনের সঞ্চয় বিদেশি পুঁজির দখলে সমর্পণ করা হলো। 
অন্যদিকে, কৃষি ক্ষেত্রে কর্পোরেট দখলদারির রাস্তা খুলে দিতে আনা হয়েছে বীজ বিল। আরাবল্লী পাহাড় পর্যন্ত কর্পোরেট জমি হাঙরদের কাছে জলের দরে বেচে দিতে তার রাষ্ট্রীয় সংরক্ষণ বাতিল করা হয়েছে। মোদী সরকারের এমন একের পর এক জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সমস্ত অংশের মানুষকে একজোট হয়ে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। বৈঠক থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানায় ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘট তারই অংশ।  
এদিকে শ্রমকোড নিয়ে শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক সংগঠন ও বিরোধী দলগুলির আপত্তিকে উড়িয়ে দিয়ে, সম্প্রতি শ্রম মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডভিয়া এক বাণিজ্যিক সভায় বলেন, আগামী আর্থিক বছরের শুরুতে বা এপ্রিল মাসেই দেশে পাকাপাকি শুরু হয়ে যাবে শ্রম কোড। খসড়া বিধি আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে ফের বিধি প্রকাশ করা হবে। তা নিয়ে জনমত গ্রহণের জন্য ৪৫ দিন সময় দেওয়া হবে। শ্রম সংবিধানের যৌথ তালিকায়। তাই রাজ্যগুলিকেও তাদের মতো শ্রম কোডের বিধি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া শেষে এপ্রিলে তা চালু হয়ে যাবে। 
এদিকে প্রতিটি বিরোধী দল সংসদে শ্রমকোড বাতিলের দাবিতে সরব হয়। বিরোধীরা জানায়, শ্রমিক শোষণ অবাধ করতেই মোদী সরকার শ্রমকোড নিয়ে এসেছে। কেন্দ্র বিনা আলোচনায় একতরফাভাবে এই শ্রমকোড নিয়ে এসেছে। তারা বলছে ব্যবসার সুযোগ সহজ করতে তা আনা হয়েছে। আসলে শিল্প, ব্যবসা সহজ করা নয়, শ্রমিক শোষণ অবাধ করতেই আনা হয়েছে এই কোড। সিপিআই(এম) জানিয়েছে, শ্রমিকদের যাবতীয় অধিকার দমন করে দেশে কর্পোরেট হিন্দুত্ব স্বৈরশাসন আরও মজবুত করার নীল নকশা এই চার শ্রমকোড।

Comments :0

Login to leave a comment