Save Schools Save Bengal

স্কুল বাঁচাও, প্রজন্ম বাঁচাও, বাংলা বাঁচাও

উত্তর সম্পাদকীয়​ বাংলা বাঁচাও যাত্রা

দেবাঞ্জন দে

হীরক রাজার দরবারে রাজা নিদান দিলেন "আজ থেকে পাঠশালা বন্ধ..."। দরবার থেকে বেরিয়ে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী। লেঠেল, পাহারাদার, পারিষদবর্গ, রাজকবিকে নিয়ে বন্ধ করতে এলেন পাঠশালা।  পাঠশালার শেষ ক্লাসে উদয়ন পণ্ডিতের মুখ দিয়ে জোর করে বলানো হলো হীরক রাজার বাণী। 
‘লেখাপড়া করে যেই, অনাহারে মরে সেই,
জানার কোনও শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই,
বিদ্যালাভে লোকসান, নাই অর্থ, নাই মান,
হীরক রাজা বুদ্ধিমান, করো সবে তার জয়গান!’
সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে ছবিটির এই একটি ছোট্ট কয়েক মিনিটের দৃশ্যের গভীরতা অনেক। শাসক শিক্ষাবিমুখ প্রজন্ম গড়ে তুলতে কতদূর যেতে পারে এবং কীভাবে যেতে পারে সেটা এই সর্বকালের অন্যতম সেরা রূপকধর্মী ছবির কয়েকটা মিনিটেই সযত্নে সাজিয়ে বলেছেন মানিকবাবু। পাঠশালা বন্ধ করার জন্য হীরক রাজার ঐ নিদানটুকুই তো যথেষ্ট ছিল, তাহলে ঐ বাড়তি চার লাইনের বাণী কেন? কারণ বিচ্ছিন্নতা আর অনাগ্রহ একসাথে সমান্তরালে ঢুকিয়ে দিতে হবে কচিকাঁচাদের মস্তিষ্কে। তবেই দখল নেওয়া যাবে প্রজন্মের মননের, চিন্তার, চেতনার। বিকৃত করা যাবে আগামী প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তিকে। যা ছিল সেদিন পর্দায় হীরক রাজের পরিকল্পনা, সেই একই পরিকল্পনার পুনরাবৃত্তি যেন মঞ্চস্থ হচ্ছে আজকের বাংলায়। 
সরকারি পরিকাঠামোর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, ভরসা, সম্মানের জায়গায় চিড় ধরানো হয়েছে গত একযুগ ধরে। পরিকল্পিত এই প্রজেক্টের আওতায় পড়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সার্ভিস সেক্টর থেকে শুরু করে গোটা উৎপাদন ব্যবস্থাই। শিক্ষায় তার কোপ পড়েছে স্বভাবতই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও বিকৃততম রূপে। প্রায় বছর পনেরো হতে চলল বাংলায় গড়ে ওঠেনি একটিও নতুন স্কুল। সরকারি নির্দেশে বন্ধ হয়েছে একের পর এক চালু স্কুল। অজুহাত হিসাবে খাড়া করা হয়েছে কমতে থাকা ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের তত্ত্ব। অথচ ২০০৮ সালে বাংলার স্কুলশিক্ষার আঙিনায় এই ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ছিল ১:৩৫! যা তৎকালীন সময়ে দেশের গড় অনুপাতের থেকে বেশি ছিল। যদিও বাংলায় সেই অনুপাত এখন গিয়ে পৌঁছে গেছে ১:৭৫ পার করে অর্থাৎ ৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী পিছু ১ জন শিক্ষক। কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে রাজ্যে প্রায় ৬৫০০ স্কুল চলছে ঐ ১ জন শিক্ষকের হাতেই! অথচ '১১ সালে গোটা রাজ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির স্কুলে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৪,১৪,৯২৪। '২৫ সালে সেই সংখ্যা প্রায় ৩,৪৭,০০০। প্রায় ৬৯,০০০ শূন্যপদ স্কুলে। 
নিয়োগ বন্ধ, সরকারি নিয়োগ পদ্ধতিতে ব্যাপক দুর্নীতি, দুর্নীতিতে সরকারি দলের তাবড় নেতা মন্ত্রীদের প্রত্যক্ষ জড়িত থাকার কুৎসিত নিদর্শন ও পরে ফের আরেক সরকারি দলের দয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে ক্ষমতার অসহ্য আস্ফালন, স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি সম্পর্কে চূড়ান্ত অশ্রদ্ধা গড়ে তুলেছে জনমানসে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নে, মূল্যবোধে, ইচ্ছায় ছেদ পড়ে গেছে পুরোপুরি। লেখাপড়া করেও, এই রাজ্যে অনাহারে মরাই নিয়ম, এমন একটা ধারণাই গেলানো হচ্ছে গোটা প্রজন্মকে। উদয়ন পণ্ডিতরাই তো পাঠশালার চুম্বক! সেই চুম্বকদের স্কুল থেকে সরিয়ে দিলে স্কুল হারিয়ে ফেলে তার উদ্দেশ্য, গুলিয়ে ফেলে দিকনির্দেশ, মরচে ধরতে থাকে প্রজন্মে, স্কুলের গেট থেকে হারিয়ে যায় প্রজন্মের ভিড়। বিরাট বিরাট সমাজ গড়ার ইমারতগুলো পরিণত হতে থাকে হানাবাড়িতে। সমাজেও হানা দেয় বাড়তে থাকা অপরাধ, বৈষম্য, মূল্যবোধের অবক্ষয়, বেঁচে থাকার রসদের ব্যাপক খামতি। একটা সামগ্রিক সামাজিক, অর্থনৈতিক অরাজকতা!

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ড্রপ আউটের হার ১৮.৭৫ শতাংশ, দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই শিক্ষাবর্ষে তা এখনো পর্যন্ত ছাপিয়ে গেছে ২০.৩০ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে সরকারি স্কুলে ভর্তি কমেছে ১৬,০০,০০০। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে স্কুলে ভর্তি কমেছে হয়েছে প্রায় ৪,০০,০০০। ৮,২০৭টি স্কুলের তালিকা প্রকাশ করে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালা ঝোলানোর। অজুহাত ৩০-এর কম শিক্ষার্থী সংখ্যা। সেই স্কুলগুলির আশেপাশেই বেসরকারি স্কুল, আরএসএস পরিচালিত স্কুল কিন্তু রমরমিয়ে চলছে। অথচ কমে যাচ্ছে সরকারি স্কুলের সংখ্যা। কমছে সরকারি ব্যবস্থায় পরিকাঠামোর জন্য সরকারি খরচ। পাল্লা দিয়ে কমছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। ২০২৩ সালের মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ প্রায় ৫,৬৫,০০০ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে দু'বছর পর ২০২৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে অন্তর্ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪,৭০,০০০ মতো। তাহলে মাঝের এই সময়ে প্রায় ১,০৫,০০০ ছাত্র-ছাত্রী কোথায় উধাও হয়ে গেল? আবার ২০২৫ সালেই উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ ৪,৩০,০০০ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে কলেজে ভর্তি হয়েছে মাত্র ২,৭০,০০০। তাহলে এই ধাপে উধাও হয়ে গেল আরও প্রায় ১,৬০,০০০ ছাত্র-ছাত্রী। কোন যন্তরমন্তর ঘরে হারিয়ে গেল এরা?

মাদ্রাসা শিক্ষাকেও নামিয়ে আনা হয়েছে একই জায়গায়। গত প্রায় পনেরো বছরে রাজ্যে নতুন মাদ্রাসা তৈরি হয়েছে মাত্র ৯টি! পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে রাজ্যের এক সময়ের সব বিখ্যাত মাদ্রাসাগুলো। শিক্ষকের অভাব, ছাত্র-ছাত্রীদের অভাব, পরিকাঠামোর অভাবে কার্যত বন্ধ বা বন্ধের মুখে প্রায় ৬০ শতাংশ মাদ্রাসা। মাদ্রাসা বোর্ডকেও ক্রমে নিষ্ক্রিয় ও দুর্নীতিগ্রস্ত করা হয়েছে সরকারি মদতেই। মুসলমানদের প্রতি নিবেদিত প্রাণের অভিনয় করতে থাকা সরকার ঘুরপথে থমকে দিতে চাইছে মুসলমান সমাজের নতুন প্রজন্মের এগোনোর মূল রাস্তাটাকেই। 
লেখাপড়ায় সরকারি ব্যবস্থার প্রতি যুগ যুগ ধরে অর্জিত বিশ্বাস, আস্থা সবটা ধ্বংস করা হয়েছে এই সময়ের মধ্যে। সবমিলিয়ে লেখাপড়ার প্রতি এক অদ্ভুত অশ্রদ্ধা কাজ করছে সমাজের পরতে পরতে। ছাত্রদের মধ্যে বাড়ছে পরিযায়ী শ্রমের প্রবণতা, ছাত্রীদের মধ্যে বাল্য বিবাহের। রাজ্যের বাইরে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় অংশই হাইস্কুল, কলেজের লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের আশায় পাড়ি দেওয়া ছাত্ররা। দেশের মধ্যে বাল্যবিবাহের ঘটনায় সর্বোচ্চ স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। আবার অপরাধ মনস্কতায় এই অংশের ছেলেমেয়েদের সংখ্যাই বেশি।

রাজ্যে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যতো কমবে, ততোই লেখাপড়া চলে যাবে প্রায়োরিটি তালিকার শেষের দিকে, যদি না দায়িত্ব নেয় সরকার। খাদ্যের সংকট আর শিক্ষার সংকটকে একসূত্রে বেঁধে তার সমাধানের রাস্তা হিসাবেই উঠে এসেছিল মিড ডে মিলের প্রকল্প। ২০২৪ সালে এই মিড ডে মিল প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১,১৩,৪৪,১৪৬। তার মধ্যে প্রকৃতপক্ষে মিড ডে মিল খেত ৭৭,৯১,৯৪৬ জন৷ আওতাভুক্ত প্রায় ৩০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে মিড ডে মিল পৌঁছায়নি। এই বছর অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা কমে গিয়ে ৮০,১৬,৮৮১। কমলো প্রায় ৩০,০০,০০০-এর বেশি। পরিসংখ্যান বলছে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৫০ শতাংশর বেশি ছেলেমেয়ের কাছে মিড ডে মিল পৌঁছানোর সম্ভাবনা কম এ বছরও। স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরানোর সামাজিক প্রকল্পের প্রতিও তার মানে ভরসা হারাচ্ছে মানুষ। মিড ডে মিলের অপুষ্টিকর খাবার, মূল্যবৃদ্ধির বাজারে ছাত্রপিছু প্রাথমিক স্তরে ৬.৭৮ টাকা আর উচ্চ প্রাথমিকে ১০.১৭ টাকার অবাস্তবতায়, তার মধ্যেও দুর্নীতির চক্র গড়ে, আরও ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের দূরে পাঠানো হচ্ছে স্কুল থেকে। যদিও প্রাইমারি, আপার প্রাইমারিতে ড্রপ আউটের হার খাতায় কলমে শূন্য দেখানোর জন্য সহায়ক হয়েছে এই মিড ডে মিলই। সেই কারণেই আট ক্লাস পার করেই সংখ্যাতত্ত্বে এক লাফে বেড়ে যাচ্ছে ড্রপ আউটের হার। 
মাধ্যমিক স্তর থেকেই পরিযায়ীকরণের হার বাড়ছে। বেসরকারি ব্যবস্থায় অস্বাভাবিক ফি'র ধাক্কা সামলানো সম্ভব নয় সীমাহীন আর্থিক বৈষম্যের এই ব্যবস্থায়। অতএব উপায় হলো, পরিযায়ী শ্রম অথবা সরকারি দলগুলোর অপরাধ চক্রের অংশ হয়ে কাটমানি উপার্জন। সৎ পথে সমাজে বড় হয়ে ওঠার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এই রাজ্যে। এবার স্কুলে গিয়ে উচ্চ পরিকাঠামোয় লেখাপড়া করা ছেলেমেয়ে এই বর্বরতা মানবে কেন! তাই ‘জেনে নেওয়ার রাস্তা’ বন্ধ করে, ‘মেনে নেওয়ার রাস্তা প্রশস্ত’ করার ফন্দি তৈরি করেছে সরকার বাহাদুর। ঠিক যে রাস্তা ধরে গোটা দেশে সরকারি লেখাপড়ার ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপিত করা হচ্ছে বেসরকারি কর্পোরেট ব্যবস্থার মোনোপলির মাধ্যমে, একই পদ্ধতি অন্য ভঙ্গিতে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে বাংলায়।
টার্গেট এক - বিচ্ছিন্নতা, অনাগ্রহ তৈরি করা। টার্গেট দুই - স্কুল থেকে বিচ্ছিন্ন এই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য ছেলেমেয়েদের হিতাহিতের পাঠ পড়াবে হীরক রাজার সিলেবাস! ক্রমশ বাড়তে থাকা আরএসএস'র টাকায় সরস্বতী বিদ্যামন্দির, একলব্য স্কুল ঠিকানা হবে এই ছেলেমেয়েদের। হিটলারের ‘ক্যাচ দেম ইয়ং’ পদ্ধতিতে শৈশব থেকেই গড়ে তোলা হবে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক মানসিক কাঠামো। পড়ানো হবে বিকৃত ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান। টার্গেট তিন - বাধ্যতামূলক পরিযায়ী শ্রম বাড়িয়ে মাইগ্রেট করিয়ে দেওয়া হবে বড়ো অংশের শ্রমশক্তিকে। একটা গোটা প্রজন্ম গড়ে উঠবে সস্তার অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে। টার্গেট চার - লেখাপড়ার ময়দান থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে মেয়েদের। মনুবাদী আদলে মেয়েদের আটকে দেওয়া হবে ঘরের অন্ধকারে, প্রগতির আলো থেকে দূরে। টার্গেট ছয় - বেসরকারি ব্যবস্থার মধ্যে যাহোক করে জড়ানো ছাত্র-ছাত্রীদেরও নির্দিষ্ট কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক আঁতাতের সিলেবাস পড়িয়ে গড়ে তোলা হবে ভবিষ্যতের কর্পোরেট দুনিয়ার সস্তার দক্ষ শ্রমিক হিসাবে। যাদের দক্ষতাও সীমাবদ্ধ থাকবে মালিকের চাহিদা অনুযায়ীই। টার্গেট সাত - লেখাপড়া, শিক্ষা, জ্ঞানের মুক্ত চর্চাকে অপ্রাসঙ্গিক করে সরাসরি প্রভাবিত করা হবে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে। একটা কৃত্রিম কাঠামোয় গড়ে তোলা হবে কিছু নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালা কৃত্রিম মানুষ। যাদের মানসিক গঠন সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার। টার্গেট আট - একটা প্রশ্নহীন, অনুগত, নমনীয় প্রজন্ম গড়ে তোলা হবে যারা বিশ্বাস করবে – ‘হীরক রাজা বুদ্ধিমান, করো সবে তার জয়গান’! কারণ এই বিশ্বাস ব্যতীত আর কোনও কিছুই তাদের কখনোই শেখানো হয়নি এবং হবে না।

আরএসএস'র মস্তিষ্কপ্রসূত, বিজেপি দেশজুড়ে বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত, তৃণমূলের বাংলায় বাস্তবায়নের কৌশল এই নীল নকশাকে পরাস্ত করতেই হবে। এই টার্গেটগুলো সফল হতে দেওয়া যায় কী? চলমান ও আগামী প্রজন্মগুলোকে এমন সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক নৈরাজ্যের অন্ধকারে তলিয়ে যেতে দেবেন? নবজাগরণের বাংলা, অবৈতনিক শিক্ষার বাংলা, নিত্যনতুন স্কুল গড়ে ওঠার বাংলা, শিক্ষায় দেশ-দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠত্ব দখলের বাংলাকে পুনরুদ্ধার করবেন না? বাঁচাবেন না বাংলার ঐতিহ্যশালী সরকারি শিক্ষার কাঠামোকে? মানুষের সাথে মানুষকে জুড়তে এই প্রশ্নগুলো নিয়েই ‘বাংলা বাঁচাও'-এর ডাক। স্কুল না বাঁচলে, প্রজন্ম বাঁচবে না। আর প্রজন্ম না বাঁচলে বাংলাই বা বাঁচবে কী করে! উদয়ন পণ্ডিত পাঠশালা জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার সময়ে তাঁর ছাত্রদের অনুরোধ করেছিলেন যাতে তারা তাদের সঞ্চিত জ্ঞান, পাঠশালা থেকে অর্জিত শিক্ষা কখনো না ভোলে। কারণ পাঠশালা আবার খুলবে। বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতির প্রগতির ইতিহাস যে শিক্ষা, যে জ্ঞান জমা করা আছে বাংলার জনমননে সেই যুগসঞ্চিত জ্ঞানের আলোকেই আঁকা হোক লড়াইয়ের মানচিত্র। স্কুল বাঁচানোর লড়াই, প্রজন্ম বাঁচানোর লড়াই, বাংলা বাঁচানোর লড়াইয়ের দিকনির্দেশ। এই লড়াইতে, শিক্ষার মৌলিক ঠিকানাটুকু বাঁচানোর লড়াইতে জুড়ে থাকুন সবাই। জুড়তে থাকুন আরও অসংখ্য, অদম্য, অনমনীয় মানুষকে।

Comments :0

Login to leave a comment