Bridge Collapses In Assam

আসামে সেতু ভেঙে বিচ্ছিন্ন বরাক, ত্রিপুরা ও মিজোরাম

জাতীয়

আসামে মালবোঝাই লরি সহ ভেঙে পড়েছে লোহার সেতু।

বিশ্বজিৎ দাস : গুয়াহাটি

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একেরপর এক ভেঙে পড়ছে সেতু। গত রবিবার মধ্যপ্রদেশের শিবপুরি জেলায় একটি নির্মীয়মান সেতু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় জখম হন অন্তত ৬ জন৷ প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মাণ করছিল মধ্যপ্রদেশের পূর্ত দপ্তর। অত্যন্ত নিম্নমানের কাজের ফলে সেতুটি ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিনই মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার চিঞ্চওয়াড় নগরে ইন্দ্রায়ণী নদীর উপর একটি লোহার সেতু আচমকা ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। 

এবার বিজেপি শাসিত আরেকটি রাজ্য আসামে সেতু ভেঙে বিপর্যয় ঘটেছে। রাজ্যের বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলার হারং নদীর উপর একটি লোহার সেতু আচমকা ভেঙে পড়েছে। সেতুর উপর দুটি মালবোঝাই লরি পারাপার করার সময় লরি সহ সেতুটি ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোররাত আনুমানিক দেড়টা নাগাদ। এই সেতুটি ভেঙে পড়ার ফলে সড়কপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উত্তরপূর্বের দু-দুটি রাজ্য। কারণ, উত্তরপূর্বের আরেকটি পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয়ের বুকচিরে যাওয়া গুয়াহাটি থেকে শিলচর পর্যন্ত ৬ নম্বর জাতীয় সড়কই হচ্ছে বরাক উপত্যকা ও পাশ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরা এবং মিজোরামের বহিরাজ্যের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র পথ। কিন্তু এই জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী বরাক নদীর উপর প্রায় ষাট বছর পুরোনো গ্যামন সেতুটি কয়েক বছর ধরে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। সেতুটি যেকোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়ার আশংকা দেখা দেওয়ায় গত মাসে সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে সেতুটির সংস্কার কাজে হাত দিয়েছে রাজ্য সরকার। সংস্কার কাজ সম্পন্ন হতে দুইমাস লাগবে বলে জানিয়েছে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর। এই সময়কালে গুয়াহাটি থেকে বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা ও মিজোরামের মধ্যে চলাচল করা গাড়িগুলি কাছাড় জেলার কালাইন-শিলচর পূর্ত সড়ক দিয়ে চলাচল করতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই পূর্ত সড়কের ভাঙ্গারপারে হারাং নদীর উপর লোহার সেতুটিও কয়েকবছর ধরে নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। অথচ, এই সেতুটি মেরামত না করে যান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেতুটির সামনে একটি বোর্ড টাঙিয়ে বলা হয়েছে ৪০ টনের বেশি সামগ্রী নেওয়া যাবে না। যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই নিয়ম কেউ মানছে না। ৪০ টনের বেশি সামগ্রী নিয়ে যাতে যান চলাচল করতে না পারে, সেজন্য সেতুর কাছে নজরদারির ব্যবস্থাও করেনি আসাম সরকার। ফলে অতিরিক্ত মালবোঝাই লরি নিয়মিত চলাচলের ফলে সেতুটি বহন ক্ষমতা আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। যার ফলে আচমকা ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনার জন্য রাজ্যের হিমন্তবিশ্ব শর্মা সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ। এই সেতু ভেঙে পড়ার ফলে বরাক উপত্যকা,ত্রিপুরা ও মিজোরামে খাদ্যসামগ্রী ও জ্বালানি পৌছানোর ব্যবস্থার কি হবে,এর উত্তর নেই আসাম সরকারের কাছে। এখন রেলই একমাত্র ভরসা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনে ধস পড়ার আশংকা রয়েছে। ধস নামলে রেলপথও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন বরাক,ত্রিপুরা, মিজোরামে হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। 

Comments :0

Login to leave a comment