20 May Strike

ধর্মঘটের সমর্থনে জেলায় জেলায় মিছিল, সভা, কনভেনশন

রাজ্য জেলা

শ্রমিক বিরোধী শ্রম কোড বাতিল এবং কাজের সুরক্ষার মতো একাধিক দাবিতে ২০ মে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিআইটিইউ সহ দশটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। সেই লক্ষ্যেই প্রতিদিন সারা রাজ্যের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও সভা, মিছিল চলছে। রবিবারও দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪পরগনা, হাওড়া, হুগলী, নদীয়া জেলায় ধর্মঘটের সমর্থনে কোথাও মিছিল, সভা, কনভেনশন হয়। 
রবিবার শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইু, সারা ভারত কৃষকসভা, ক্ষেতমজুর সংগঠনের ডাকে ভাতার রবীন্দ্রপল্লী তে ২০ মে দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের কনভেনশনে আলোচনা করেন সিআইটিইউ’র জেলা সম্পাদক তাপস চ্যাটার্জী, ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সম্পাদক মিজানুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষকসভা জেলা নেতৃত্ব সুভাষ মন্ডল, নজরুল হক, শ্রমিক নেতৃত্ব ডালিম রায়। আগামী ২০ মে সাধারণ ধর্মঘটে ভাতার ১ এরিয়ার সব অংশের শ্রমিককে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয় এই কনভেনশন থেকে।
এদিন ধর্মঘটের সমর্থনে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন, ফেডারেশনসমূহ ও ১২ই জুলাই কমিটি পটাশপুর ১ ও ২ব্লক কমিটির উদ্যোগে কনভেনশন হয় পটাশপুরে পোস্ট অফিসের হলঘরে। কনভেনশন পরিচালনা করেন অসীম গোস্বামী। ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন ১২ই জুলাই কমিটির পক্ষে মানস দাস অধিকারী। সমর্থনে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ নেতা কালিপদ মহাপাত্র, ১২ই জুলাই কমিটির অসীম প্রধান, এআইটিউসি’র বাদল বারিক, আইএনটিইউসি’র ভাগ্যধর দাস ও ইউটিইউসি’র পক্ষে মন্টু দাস মহাপাত্র।
ধর্মঘটকে সফল করার আহ্বান জানিয়ে এদিন দাসপুর বাজারে পরিযায়ী শ্রমিকদের মিছিল হয়। মিছিল শেষে ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দ্বিতীয় সম্মেলন। উদ্বোধন করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি এস এম সাদী। তিনি বলেন, দেশে ও রাজ্যে এমন দুই সরকার চলছে যারা সংবিধানকে অস্বীকার করে চলছে। ১৯৭৯ সালে মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স আইন লাগু না করায় আজ পরিযায়ীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই কোভিড চলাকালীন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার হাত তুলে নিয়ে বসেছিল। রাজ্যের প্রায় ৪২লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ভিন রাজ্যে অনাহারে জর্জরিত হতে হয়েছিল। এমনকি নিজেদের খরচে যখন বাংলায় ফিরে এসেছিল তাদের বর্ডারে আটক করে রাখে মমতা ব্যানার্জির সরকার ও তার প্রশাসন। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এক দেশ এক রেশন কার্ড, রাজ্য পরিযায়ী পর্ষদ গঠন ও নাম নথিভুক্ত, ই-শ্রমকার্ড চালু সহ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও মৃত্যু হলে পরিযায়ী পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি আদায় করা গেলেও তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের গড়িমসি সহ দলবাজি রয়েছে। এখন আবার কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হানা এবং মুর্শিদাবাদে দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু সহ বিশেষ করে বাঙালিদের ঘৃণ্য বর্বরোচিত আক্রমণ চলছে। সম্মেলনে প্রতিবেদনের উপর জেলার ১৪ টি ব্লক থেকে প্রতিনিধি আলোচনায় অংশ নেন। দেশ জুড়ে জেলার পরিযায়ীরা যে যেখানে আছেন আগামী ২০মে ধর্মঘটে শামিল হওয়ার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিনিধিরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বন্যাপীড়িত ঘাটাল মহকুমা ১লক্ষ ৩৮ হাজার, কেশপুরে ২৬ হাজার সহ জেলার প্রতিটি ব্লকে গড়ে ১২-১৮ হাজার অধিক পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছে। তাঁদেরও নিরাপত্তা দিতে হবে। 
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আসাদুল্লা গায়েন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শ্রমিকনেতা শান্তনু দাস। সম্মেলন থেকে ৩৩ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়। সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে সাদ্দাম খান ও উত্তম মণ্ডল।
শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আগামী ২০ মে সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে এদিন খেজুরি ২ ব্লকের কুঞ্জপুরে সভা ও মিছিল হয়। ছিলেন হিমাংশু দাস, বিষ্ণুহরি মান্না, রত্নেশ্বর দোলুই, প্রতিমা মন্ডল, প্রদীপ মণ্ডল, মৃন্ময় মাইতি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বদেশ মাইতি।
ধর্মঘটের সমর্থনে রবিবার সিপিআই(এম)’র উদ্যোগে হুগলির চন্ডীতলার আঁইয়া পাঁচমাথায় সভা হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা স্বপন বটব্যাল, মুসা হালদার ও  সঞ্জয় ঘোষ। সভা পরিচালনা করেন তপন বসু।

Comments :0

Login to leave a comment