AIKS Howrah

কৃষি কৃষক স্বদেশ বাঁচাতে প্রতিরোধের আহ্বান হাওড়ায় কৃষক সম্মেলনে

জেলা

হাওড়া জেলা কৃষক সভার ৪১ তম জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ। রবিবার বাগনানের বাইনান গ্যারেজ মোড়ে। ছবি: মনিরুল হক

শুভাশিস দেব সরকার

'বিপন্ন কৃষি, বিপন্ন কৃষক, বিপন্ন স্বদেশ, এসো গড়ি প্রতিরোধ'- এই অঙ্গীকার নিয়েই অনুষ্ঠিত হলো হাওড়া জেলা কৃষক সভার ৪১ তম জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশ। রবিবার বাগনানের বাইনান গ্যারেজ মোড়ে অনুষ্ঠিত প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সারা ভারত কৃষক সভার সহসভাপতি হান্নান মোল্লা, প্রাদেশিক কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার, স্নেহাশিস রায়, সংগঠনের জেলা সম্পাদক মহেন্দ্র রায়, অভ্যর্থনা কমিটির সম্পাদক ভাস্কর রায়। সভাপতিত্ব করেন কার্তিক দলুই। সোমবার বাগনানের সাবসিটের কৃষ্ণ ভবনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে শহীদ আনীশ খানের বাবা সালেম খান উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের শুরুতে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের শ্যামপুর সংস্কৃতি চক্রের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

হান্নান মোল্লা বলেন, লড়াই করে অধিকার রক্ষার ইতিহাস আমাদের দেশে রয়েছে। স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চালাচ্ছে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার। পাঠ্য বইয়ে ইতিহাস বিকৃত করে ছাত্র ছাত্রীদের মগজে ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে যাদের কোন ভূমিকা নেই, তারাই এখন দেশের সরকারে। স্বাধীনতার পাঠ পড়াচ্ছেন দেশের মানুষকে।

হান্নান মোল্লা বলেন, বর্তমানে কেন্দ্রের ও রাজ্য সরকারের সময়ে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষক সহ শ্রমজীবী জনগণ। পরিকল্পনা করেই দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। দেশের কৃষি ব্যবস্থায় কর্পোরেটদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেছে বিজেপি সরকার। তিনি বলেন দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষকদের উন্নতির জন্য গঠিত স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অগ্রাহ্য করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিনি আরও বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে ২৫২ জন কৃষকের নাম দেওয়া হয়েছিল, যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আত্মহত্যা র বিষয়টি অস্বীকার করেন।

হান্নান মোল্লা বলেন কেন্দ্রের সরকার তিনটি কালা কৃষি আইন চালু করার বিরুদ্ধে ৩৮৪ দিন দিল্লির রাস্তা দখল করে রেখেছিল দেশের কৃষকেরা। অনেক চেষ্টা করেও যখন কৃষকদের আন্দোলন ভাঙা যায়নি তখন বাধ্য হয়ে তিনটি কালা আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রের সরকার। তিনি বলেন লড়াই আন্দোলনের ফলে মানুষের চেতনা বাড়ে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে  জোরদার লড়াই সংগ্ৰ।ম গড়ে তোলার আহ্বান জানান হান্নান মোল্লা।

অমল হালদার বলেন স্বাধীনতা পরবর্তীতে জমি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গরিব মানুষ জমি পেয়েছিলেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লাল ঝান্ডা নিয়ে বামপন্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গরীব মানুষের জন্য অধিকার আদায় করেছিল। তিনি বলেন, উদার অর্থনীতির ফলে বৈষম্য বাড়ছে। সারা রাজ্য কয়েক হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছন গরিব ছাত্র ছাত্রীরা। দেশে ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় প্রতি দিন দেশে ৩১ জন কৃষক দেনার দায়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে সারা দেশের সাথে আমাদের রাজ্যের গ্রামে গ্রামে জোট বেঁধে লাগাতার জোরদার লড়াই করার আহ্বান জানান অমল হালদার। 
 

Comments :0

Login to leave a comment