অস্ট্রেলিয়া, কানাডার পাশাপাশি স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ঘোষণা করল ব্রিটেনও। রবিবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কের স্টারমার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেই সমালোচনায় মুখর হয়েছে দখলদার ইজরায়েল।
রবিবারও ইজরায়েলের সেনা গণহত্যা চালাচ্ছে গাজায়। গাজা সিটি সহ একাধিক শহরঞ্চল দখলে নেমেছে সেনা। লক্ষ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়কে ফের ঘরবাড়ি ছেড়ে শামিল হতে হয়েছে উদ্বাস্তুর স্রোতে।
ব্রিটেনের বামপন্থী আন্দোলনের নেতা এবং সংসদ সদস্য জেরেমি করবিল স্বাগত জানিয়েছেন ব্রিটেন সরকারের ঘোষণাকে। করবিন বলেছেন, ‘‘কেবল স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলেই হবে না। সরকারি স্তর থেকে বলতে হবে যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইজরায়েল। স্বীকার করতে হবে যে ব্রিটেনের সরকার পরোক্ষে এই গণহত্যায় সহায়তা দিয়েছে ইজরায়েলকে।’’
ব্রিটেনে টানা ইজরায়েলের দখলদারির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে জনমত সংগঠিত করেছেন করবিন। তিনি বলেছেন, ‘‘
সংহতি সংগঠন ‘মেডিক্যাল এইড ফর প্যালেস্তাইন’-র ডিরেক্টর রোহান ট্যালবট দাবি করেছেন যে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পাশাপাশি এবার স্টারমার সরকারকে বন্ধ করতে হবে ইজরায়েলকে পাঠানো অস্ত্র সহায়তা। গাজা থেকে জাতিবিলোপ হচ্ছে। স্রেফ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে প্যালেস্তিনীয়দের। এখন কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণারই সময় নয়। আইনি, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে।’’
এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, ‘‘এটা ঠিকই যে স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়েছে। তবে এই দাবিকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। গাজায় এখন যা চলছে তাকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
এই ঘোষণার পরই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সহযোগীরা বলতে শুরু করেছেন যে ব্রিটেন হামাসকে মদত দিচ্ছে। আইনসভা নেসেটের অধ্যক্ষ আির ওবানা বলেছেন, ‘‘তুষ্টিকরণের এই রাজনীতি নিন্দাজনক।’’ উগ্র দক্ষিণপন্থী সুরক্ষামন্ত্রী বেন গাভির বলেছেন, ‘‘হত্যাকাীদের মদত দেওয়া হলো।’’
আন্তর্জাতিক স্তরে বিশ্ব জনমতের চাপে ইজরায়েলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলিকে প্যালেস্তাইনের স্বীকৃতি ঘোষণা করতে হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আদৌ প্যালেস্তিনীয়দের অধিকার রক্ষা করবে কতটা তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন রয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে নিরবিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলের সেনা। হত্যা করেছে ৫৫ প্যালেস্তিনীয়কে। কেবল গাজা সিটিতেই ৩৭ বাসিন্দাকে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্যালেস্তাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রস্তাব বিপুল সংখ্যাধিক্যে গৃহীত হয়েছে। তবে ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের আনা এই প্রস্তাবে গাজার প্রতিরোধী সংগঠন হামাস-কে কার্যত বিলোপ করার মতো প্রস্তাব রয়েছে। প্যালেস্তাইন এখন রাষ্ট্রসঙ্ঘে পূর্ণ সদস্য নয় এমন দর্শক। প্যালে্সতিনীয় কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা অতি সীমিত। সেনা নেই প্যালেস্তাইনের নিজের। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে পাশ প্রস্তাব এরপর যাবে নিরাপত্তা পরিষদে। সেখানে আমেরিকা বিপক্ষে ভোট দিলেই আটকে যাবে প্রস্তাব। তবে আন্তর্জাতিক স্তরে ইজরায়েলের দখলদারি এবং তার প্রধান মদতদাতা আমেরিকার ভূমিকা আরও বড় প্রতিবাদের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।
Palestine Recognition
বিরতি নেই গণহত্যায়, স্বাধীন প্যালেস্তাইনকে স্বীকৃতি ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার

×
Comments :0