North Bengal

বানারহাটে ভয়ঙ্কর বন্যা, হাতিনালার জলে বিপর্যস্ত বিস্তীর্ণ এলাকা

রাজ্য জেলা

সারারাত ভুটান পাহাড়ে প্রবল বর্ষণের জেরে ফের ভয়াবহ পরিস্থিতি বানারহাট ব্লকের হাতিনালা সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার সকাল থেকেই হাতিনালায় ঘোলা জলের প্রবল স্রোত বইতে শুরু করে। স্থানীয়দের কথায়, “যেভাবে পাহাড়ি নদীতে হরপা বান নামে, ঠিক তেমনই আচমকা জল বেড়ে যায় হাতিনালায়।”
ভোররাত থেকেই জলস্তর দ্রুত বাড়তে শুরু করে। হাতিনালার জল ঢুকে পড়েছে পাশের চা-বাগান ও নীচু এলাকাগুলিতে। বানারহাট  বিন্নাগুড়ি গয়েরকাটার অনেক  চা বাগান শ্রমিক  মহল্লায় জল ঢুকছে। বানারহাট পি এন বি রোডের উপর দিয়েও জল বইছে বলে জানা গেছে। একাধিক বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে, ফলে আতঙ্কে বহু পরিবার ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কালা সরকার জানান, “রাত থেকেই পাহাড়ে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। সকালে দেখি, হাতিনালার জল এসে ঘরের চৌকাঠ ছুঁয়ে ফেলেছে।”
এদিকে, বানারহাট বাজার সংলগ্ন এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। দিনবাজার ও হাটখোলা বাদে বাকি প্রায় সমস্ত এলাকা এক কোমর জলে ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোট-বড় সব ধরণের ব্যবসায়ী সহ সাধারণ নাগরিকরা। জলের তলায় সুখানি বস্তি।
অনেকে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নাগরাকাটার  অনেক মানুষ ফোন করে সাহায্যের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেকে ভেসে গেছে। গভীর  রাতের এই বিপদ ক্ষতি অনেক বৃদ্ধি করেছে। সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচল সহ সমস্ত রকম যানবাহন। প্রশাসন সূত্রে খবর, পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। বানারহাট ব্লক প্রশাসন ও বন দফতর যৌথভাবে এলাকায় সতর্কবার্তা জারি করেছে।


জলপাইগুড়িতে রেকর্ড বৃষ্টি। একরাতে ১৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি। যা এই বছর রেকর্ড বৃষ্টি জলপাইগুড়ি তে। বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। জলপাইগুড়ি শহরের মহামায়া পাড়া, পান্ডা পাড়া, স্টেশান রোড সহ একাধিক ওয়ার্ডে জল দাড়িয়ে পড়ায় সমস্যায় বাসিন্দারা। ক্লাব রোডে গাছ ভেঙে বিচ্ছিন্ন যাতায়াত। বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। জল বাড়ছে তিস্তা, করলা, জলঢাকার। নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই পাহাড়ি অঞ্চলে অতিবৃষ্টির প্রভাবে হাতিনালায় হঠাৎ জলবৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুটান পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের প্রভাব সরাসরি এসে পড়ে এই পাহাড়ি নালায়, ফলে মুহূর্তের মধ্যে জলপ্রবাহ বিপজ্জনক রূপ নেয়।

Comments :0

Login to leave a comment