North Bengal Floods

বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ চালুর দাবি সিপিআই(এম)’র

রাজ্য জেলা

কেন্দ্রের সরকারের তরফে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক দূর্যোগকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণা করে বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য স্পেশাল প্যাকেজ চালু করা সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দূর্গত মানুষদের পূর্নবাসন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর সংষ্কার ও প্রত্যন্ত এলাকায় বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা মানুষদের নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তনের দাবি জানালো সিপিআই(এম)। 
সোমবার দুপুরে সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা দপ্তর অনিল বিশ্বাস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক সমন পাঠক বলেছেন, ‘‘এতো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পুর্নবাসন সহ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। কেন্দ্রের সাংসদ, রাজ্যের বিধায়করা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নাটকবাজি করছেন। কিন্তু বিপর্যয় পরবর্তী এতো দিন পেরিয়ে যাবার পরেও এখনও পর্যন্ত দূর্গত মানুষদের জন্য স্পেশাল প্যাকেজ আনতে পারেনি। রাজ্যের সরকারও উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করছে। কেন্দ্রের সরকারের কাছে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি জুওলজিক্যাল সার্ভের মাধ্যমে সেন্টার ফর ল্যান্ড স্লাইড অ্যান্ড স্টাডি সেন্টারের। যাতে আগামীদিনে এই ধরনের বড় বিপর্যয়ের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। উত্তরবঙ্গে ১৬/১৭জন বিজেপি এমএলএ রয়েছেন। দার্জিলিঙ জেলার বিধায়ক সহ আশপাশের জেলার বিধায়করাও রয়েছেন। তাসত্ত্বেও কেন্দ্রের সরকার নিজেদের দায়িত্ব থেকে বার বার সরে যাচ্ছে। অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হোমগার্ডের চাকরি আর পাঁচ লক্ষ টাকা রেটিং করে পাড় পেয়ে যেতে পারবেন না। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের সরকারের কোন দায়িত্ব নেই? আসলে তৃণমূল ও বিজেপি নিজেদের মধ্যে দোষারোপ করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত পুর্নবাসন সহ একাধিক সুনির্দিষ্ট দাবিতে গত ৯ অক্টোবর সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা শাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছিল ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাড়ি ঘর তৈরী করা সহ যাবতীয় দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। এছাড়াও অসুরক্ষিত এলাকায় তিস্তা, বালাসন, মেচি নদীর ধারে থাকা মানুষদের দ্রুততার সাথে নিরাপদ স্থানে পূর্নবাসনের দাবি জানানো হয়েছে।
পাঠক আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দূর্যোগের প্রথমদিন থেকেই আমরা ছিলাম। এখনও আছি। সোনাদা এলাকার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ নিয়ে হাজির হয়েছিলাম আমরা। ক্যাম্পে থাকা মানুষ যারা সব কিছু হারিয়েছেন, তারা বাদেও সেখানে চারিদিক থেকে ধস নেমে এখনও বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু বসতবাড়ি। সেই সমস্ত মানুষগুলি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। কিছু ত্রাণ শিবির রয়েছে যেখানে সমস্ত বড় বড় মন্ত্রী, এমপি, এমএলএ সবাই পৌঁছে গেছেন। ছবি তুলেছেন। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার বহু অসহায় মানুষের কাছে এখনও সরকারি কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। আমরা পায়ে হেঁটে সেই সমস্ত ধস বিধ্বস্ত প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে ত্রাণ সরবরাহ করেছি, মানুষের পাশে সাধ্য মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। দুই সরকার যখন বিপর্যয়গ্রস্ত মানুষদের নিয়ে ভোটের রাজনীতি করতে ব্যস্ত সেই সময় সিপিআই(এম)’র রেড ভলান্টিয়ার, নেতা কর্মীরা ত্রাণ সংগ্রহ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছে গেছেন। যেখানে যা প্রয়োজন সেই মোতাবেক ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে। গাড়ি করে সহজেই যে সমস্ত জায়গায় পৌঁছে যাওয়া সম্ভব সেই সমস্ত জায়গায় সবাই গেছেন। কিন্তু পাহাড়ের উপর থেকে ধস নেমেছে আবার বাড়ি ঘরের নীচে থেকেই মাটি সরে গেছে। মাঝখানে আটকে পড়েছেন শান্তিধূরা ছোট গ্রামের বাসিন্দারা। এইরকমই চন্দ্রমানধূরা, ফুলবাড়ি, হোপটাউন পাহাড়ী ছোট গ্রাম চারদিক থেকে ধস নেমে আসায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। সেখানে বিপন্ন মানুষের কাছে দুই সরকারের পক্ষেই এখনও কোন ত্রাণ পৌঁছায়নি। খোঁজ নেয়নি কেউ। জিটিএ’রও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেখানে আমরা সিপিআই(এম) পৌঁছে গিয়ে আটকে পড়া বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন সিপিআই(এম) নেতা দিলীপ সিং ও জয় চক্রবর্তী।

Comments :0

Login to leave a comment