দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরে মিছিলের করে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই মহিলা সমিতি ও অন্যান্য গণসংগঠন। সিপিআই(এম) জেলা দপ্তর সুবোধ সেন ভবন থেকে মিছিল শুরু হয়। উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ির প্রসন্ন দেব মহিলা কলেজে তৃনমূল আশ্রিত বহিরাগতদের আক্রমণ অব্যাহত, শুক্রবার আক্রান্ত হয় ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের ছাত্রী নেতৃবৃন্দ।
পিডি কলেজে অধ্যাপিকাকে জাত তুলে অপমানের প্রতিবাদে, ডেপুটেশন দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয় এসএফআই। তৃণমূলের বহিরাগত ছাত্রীদের হাতে আক্রান্ত হয় তিনজন এসএফআই কর্মী। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আশ্রিত বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এসএফআই নেতৃত্বের হাতে থাকা স্মারকলিপি ছিঁড়ে দেয়। পরবর্তীতে এসএফআই জেলা নেতৃত্ব অহনা পান্ডে, স্নেহা দত্ত, রাজ্য কমিটির সদস্য সংগীতা রায়কে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য সম্প্রতি পিডি কলেজের এক আদিবাসী অধ্যাপিকাকে জাত তুলে অপমান করার অভিযোগ উঠেছিল অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে এসএফআই শুক্রবার দুপুরে ডেপুটেশন দিতে যায় কলেজের অধ্যক্ষকে। সেই সময়ে বহিরাগত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রীরা আক্রমণ করে এসএফআই নেতৃত্বের ওপর।
গতসপ্তাহে আদিবাসী ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উল্লেখিত বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ডেপুটেশন দিতে গেলে সেদিন কলেজের ভেতরে থাকা তৃণমুল আশ্রিত বহিরাগতরা আদিবাসী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব এবং সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ওপর আক্রমণ করে। পরবর্তীতে সমস্ত সংবাদ মাধ্যম একযোগে ঘটনার প্রতিবাদে কলেজে পৌঁছে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে চেপে ধরলে দেখা যায় আক্রমণকারী বহিরাগত তৃণমূল নেতৃত্ব টিচার্স কমনরুমে শিক্ষকদের চেয়ারে পা তুলে বসে আছেন। পরবর্তীতে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়েছিল সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায়।
শুক্রবার আক্রান্ত এসএফআই কর্মীদের ব্যাগ ও মোবাইল সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কলেজ থেকে উদ্ধার করতে যায় এসএফআই কর্মীরা। পরবর্তীতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের উপরেও আক্রমণ করে। ঘটনায় গুরুতর জখম দুইজন এসএফআই নেতৃত্বকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আক্রান্ত এসএফআই কর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে থানা মোরে আক্রান্ত হন ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক বেদব্রত ঘোষ, এসএফআই নেতা অর্নব সরকার সহ পাঁচজন ছাত্র যুব নেতৃবৃন্দ। এরপর পুলিশ আক্রান্ত এসএফআই, ডিওয়াইএফআই নেত্রীবৃন্দকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতে থানায় আটক এসএফআই কর্মীদের মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এসএফআইয়ের তরফে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে অবিলম্বে সিটি কলেজে এসএফআই নেতৃত্বের উপর আক্রমণকারী বহিরাগত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মিছিল শুরুর আগে এসএফআই জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক অরিন্দম ঘোষ জানান, "কোর্টের নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কলেজে বহিরাগত দুষ্কৃতিদের দৌরাত্ম অব্যাহত জলপাইগুড়ি সিটি কলেজে এক আদিবাসী অধ্যাপিকা জাত তুলে কটুক্তি ও কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগত মুক্ত করার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেছিল এসএফআইয়ের ছাত্রী নেতৃবৃন্দ। রাজ্যজুড়ে এভাবেই বহিরাগতদের দাপাদাপি চলছে কলেজ ক্যাম্পাসে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসন সবাই নীরব। অবিলম্বে সমস্ত দোষীদের গ্রেফতার ও শিক্ষাঙ্গনকে দুর্বৃত্ত মুক্ত করার দাবী জানিয়ে শহরের বুকে মিছিল করেছে ছাত্র যুব ক মহিলা ও অন্যান্য গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।"
তিনি আরও জানান, "সংগঠনের তরফে শিক্ষাঙ্গনে গনতন্ত্র ফেরাতে ক্যাম্পাসকে দুর্বৃত্তমুক্ত করার লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি প্রতিটি কলেজে কর্মসূচি গ্রহণ করছি।"
এদিন মিছিলে নেতৃত্ব দেন এসএফআই জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক অরিন্দম ঘোষ, সভাপতি সাব্বির হোসেন, ডিওয়াইএফআই জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বেদব্রত ঘোষ, রাজ্য নেতৃত্ব দেবরাজ বর্মন, জেলা সভাপতি অর্পণ পাল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
SFI DYFI
দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল জলপাইগুড়িতে

×
Comments :0