মুর্শিদাবাদ থেকে থেকে এদিন কালীগঞ্জে তৃণমূলের বোমায় নিহত তামান্না খাতুনের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে সহ রাজ্য নেতৃত্ব। কালিগঞ্জ থানা ঘিরি রাখেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখার্জি সহ ছাত্র যুব নেতৃত্ব। রয়েছেন কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখও। এসেছিলেন সদ্য কন্যা হারানো মা সাবিনা বিবিও। তিনি মেয়ের শোকে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
মীনাক্ষী মুখার্জি কালিগঞ্জ থানার গেটে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,‘‘ রাজ্যে গুন্ডারাজ করছে তৃণমূল। এই পুলিশের ছাতা যদি তৃণমূলের মাথার উপরে না থাকে তাহলে এই গুন্ডাগিরি করতে পারে না। তিনি প্রশ্ন করে বলেন এটা কিসের বিজয় উল্লাস? এই বিজয় উল্লাসের নামে একটি শিশুকে খুন করে দিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এই কারণেই কি ভোটে জিতেছে তৃণমূল। নদিয়ার কালীগঞ্জে বিধানসভার মানুষের দায়িত্ব নেওয়া কি এই কারণেই। তিনি বলেন সিপিআই(এম) সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে। পুলিশের কাছে কি খবর ছিল না। তবে কি অপদার্থ পুলিশকি শুধু তৃণমূল গুন্ডাদের মাথায় ছাতা ধরার জন্য রয়েছে। পুলিশকে মনে রাখতে হবে রাজ্যের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বেতন হয় পুলিশের। এক প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, তৃণমূল গোটা রাজ্যে যে গুন্ডাগিরি করে তা সংগঠিত ভাবেই করে। পুলিশ এবং রাজ্যের সরকার তাদের মাথায় ছাতা ধরে আছে বলেই গুন্ডাগিরি।’’  
কালিগঞ্জে নাবালিকা হত্যার প্রতিবাদে এদিন জেলায় জেলায় বিক্ষোভ হয়। নদিয়ার কালীগঞ্জে ভোটগণনা চলাকালীন বোমার আঘাতে ১ বালিকার মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে সিপিআই(এম)’র সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে। তৃণমূলের এই নৃশংসতার প্রতিবাদে রাজ্যের সাধারণম মানুষও ধীক্কার জানিয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বোমার আঘাতেই প্রাণ হারিয়েছে নাবালিকা তামান্না খাতুন। এই নৃশংসতার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় বাগুইআটিতে মিছিল হয় রাজারহাট শহর ৩নম্বর এরিয়া কমিটির ডাকে। বোমা নিয়ে বিজয়োল্লাসের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী ব্লকের পাথরঘাটাতে বিক্ষোভ মিছিল করে সিপিআই(এম)।
ঘটনার প্রতিবাদে এবং খুনি তৃণমূলকে ধিক্কার জানিয়ে সিপিআই(এম) আড়িয়াদহ -দক্ষিণেশ্বর এরিয়া কমিটি ফিডার রোডের আড়িয়াদহ কোয়ার্টার বাজার মোড়ে একটি পথসভা এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় সোমবার সন্ধ্যায়।

এদিন দুপুরে এই ঘটনা খবর পেয়েই তামান্না খাতুনের বাড়িতে ছুটে যান সিপিআই(এম) নেতা দেবাশীষ আচার্য,  নসরুতোল্লা শেখ, শাহানারা আহমেদ, হরশাদ মন্ডল, রহমান আলম, কংগ্রেস নেতা বাইনুল ইসলাম প্রমূখরা। বেছে বেছে এলাকার যে সমস্ত  সিপিআই(এম)’র বাড়ির উদ্দেশ্যে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে, তাদের সঙ্গে দেখা করেন। পার্টি নেতা দেবাশীষ আচার্য এক বিবৃতিতে এই নৃশংস ঘটনায় অবিলম্বে সমস্ত দুষ্কৃতীদের, এলাকার অস্ত্র কারবারি ও সমাজ বিরোধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। বিজয়ের প্রথম বলী, সংখ্যালঘু পরিবারের কন্যাশিশু। এই অমানবিক উল্লাসের তীব্র নিন্দা জানাই, অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
এই ঘটনায় প্রদেশ কংগ্রসে সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন সদ্য ফল প্রকাশের পর বিজয়ী প্রার্থীর বিজয় মিছিল যেখানে এক নিরীহ শিশুর প্রাণ কেড়ে নেয় সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অবিলম্বে ওই বিজয়ী প্রার্থী আলিফা আহমেদের জয়ী হবার শংসাপত্র বাতিল করে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবার দাবি জানাচ্ছি।