বড়বাজারের বিধ্বংসী আগুনের রেশ কাটতে না কাটতে ফের আগুন লাগার খবর পাওয়া গেলো কলকাতায়। রবিবার বেলা ৩টে নাগাদ বেহালার জেমস লং সরণির আবাসনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। জানলা থেকে বেরতে থাকে আগুনের লেলিহান শিখা। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। আগুন লেগেছে বুঝতে পেরে স্থানীয়রাই খবর দেয় দমকলে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। পরে আরও দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ওই পাঁচতলার ফ্লাটে থাকা মানুষ বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের মধ্যেও। দমকল কর্মীদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বাসিন্দাদের নিরাপদে বাইরে বার করে আনা হয়। আগুন লাগার ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। দমকলের প্রাথমিক অনুমান শটসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে ওই বহুতলে। গত কয়েক দিনে শহরের বেশ কিছু এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এই আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহু প্রশ্ন উঠছে।
গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে উত্তর কলকাতায় পাথুরিয়াঘাট স্ট্রিটে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। জোড়াবাগান থানা এলাকার ৬৫এ, পাথুরিয়াঘাট স্ট্রিটের পাঁচতলা বাড়িতে আগুন লাগে। আগুন যখন ওপরতলার ঘরগুলিকে একের পর এক গ্রাস করে। তখনও চিলেকোঠার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। দমকল কর্মীদের নজর পড়ার পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন উদ্ধার করা দুই ব্যক্তিই মৃত। ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ হয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান।
সেই ঘটনার পর গত ২৬ এপ্রিল বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ পূর্ব কলকাতায় ধাপার বাসন্তী হাইওয়ে লাগোয়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় মানুষের মধ্যে। দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ চালায়।
২৯ এপ্রিল গভীর রাতে বজবজের ইএসআই হাসপাতালে আগুন লাগে। হাসপাতালে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে যায় প্যাথলজি বিভাগ। দমকল লাগাতার চেষ্টা চালালেও ওই আগুন নেভাতে অনেক সময় পেরিয়ে যায়। তবে ওই আগুন হাসপাতালে ভর্তি কোনও রোগীর কোনও সমস্যা ঘটেনি।
গত ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার বড়বাজার মেছুয়ার এক হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মধ্যে দুই শিশু ও দু’জন মহিলা ছিলেন। ওই ঘটনায় আহত অন্তত ১৩ জন। ওইদিন রাতে আচমকাই আগুন লাগে চিৎপুর মোড়ের কাছে ছয়তলা ঋতুরাজ হোটেলে। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যার অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে ছটফট করতে করতে। তার মধ্যে দু’টি শিশুও রয়েছে। দমকলের বিধি এবং কর্পরেশনের বিধি অমান্য করে দিনের পর দিন হোটেল ব্যবসা কিভাবে চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
গত ২ মে শুক্রবার দুপুরে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের ফিলিপস মোড়ের একটি রাসায়নিক কারখানায় হঠাৎ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
এবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বেহালার জেমস লং সরণির একটি বহুতল। কলকাতা শহরের প্রাণকেন্দ্রে পরপর আগুন লাগার ঘটনা ফের একইসঙ্গে তুলে দিচ্ছে একাধিক প্রশ্ন যা এর আগে শহরের বুকে প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের সময় সামনে এসেছিল।
Fire at Behala
ফের শহর কলকাতায় অগ্নিকাণ্ড

×
Comments :0