মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, মেয়র ফিরহাদ হাকিম বেআইনি নির্মাণ ও জলাভুমি ভরাট নিয়ে কড়া পদক্ষেপের হুশিয়ারি দেন। কিন্তু তা কেবল কথার কথা। মমতা ব্যানার্জির সরকারের আমলে প্রমোটিং, সিন্ডিকেট বাহিনীর রমরমা দিকে দিকে। সেই বাহিনীর টাকা কামানোর সুবন্দোবস্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে এই অনৈতিক কাজে মদত দেওয়ার কাজটা কিন্তু চলছে মহানগরের একাধিক এলাকায়। এমনই এক অনৈতিক কাজের বিষয়টি দেখা যাচ্ছে কলকাতা কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মিল কলোনী এলাকায়, যা কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের বিধানসভা এলাকা।
কাশিপুর বেলগাছিয়া এলাকার মিল কলোনী, রাজ বাগান, সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জমাজলের যন্ত্রনা থেকে বাসিন্দাদের রক্ষা করে আসছে মিল কলোনী এলাকার শালবনি আ্যপার্টমেন্টের পিছনে অবস্থিত ১০০ কাটার বেশি জায়গাজুড়ে থাকা জলাশয়। ২০১১ সালে তৃণমূল রাজ্যে শাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওই জলাশয় ভরাট করে প্রোমোটিং কারবার করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিরা। জলাভুমি ভরাটের চেষ্টাও চলে একাধিকবার কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ বিক্ষোভের জেরে পিছপা হতে বাধ্য হয় তৃণমূলীরা। এই আবহে স্থানীয় রসগোল্লা বস্তির বাসিন্দাদের পুণর্বাসন দেওয়ার অছিলায় আবারও শুরু হয়েছে জলাভুমি ভরাটের কাজ। এই জলাভুমি ভরাটের বিরোধীতায় মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টেও। এসব কিছুর তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের মদতে রাতের অন্ধকারে বুলডোজার দিয়ে জলাভুমি ভরাটের কাজ চলছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতা কর্মীরাও এই নিয়ে সরব হয়েছেন। প্রসঙ্গত, মিল কলোনী এলাকার এই বিস্তীর্ণ জলাভুমি রেলের জায়গা হিসেবেই জানেন স্থানীয় মানুষজন। প্রায় ১০০ বছরের বেশি এই জলাশয়ে এক সময় টেন্ডার ডেকে মাছ চাষের বরাত দিত রেল কর্তৃপক্ষ। কালে কালে সে জলাশয় আগাছা ও কুচুরি পানায় ভরে ওঠে। তবুও বর্ষার জমাজল থেকে এলাকাবাসী রক্ষা পেয়ে আসছে এই জমা জলের সমস্যা থেকে। এলাকার মানুষের দাবি এই জলাশয় জলযন্ত্রনা থেকে রক্ষা করতে কার্যত ত্রাতার ভুমিকা নেয়। সেই গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়কেই পুণর্বাসন দেওয়ার নামে ভরাটের কাজ চলছে। এবিষয়ে স্থানীয় তৃণমূলের কাউন্সিলর দেবাকী চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এলাকার বিধায়ক তথা কলকাতা কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ ও এবিষয়ে কোন ভুমিকা পালন না করে তিনি মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন বলেই বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। এদিকে যে পুণর্বাসন দেওয়ার অছিলায় এই কাজ চলছে তা নিয়েও মানুষ সরব হয়েছেন। স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন এই জলাভুমি ভরাটের বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তা ছাড়া যে রসগোল্লা বস্তির বাসিন্দাদের পুণর্বাসন দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেই বস্তির বিপুল জমির কি হবে? আসলে বস্তির জমি দখল করে তাতে প্রোমোটিং করার ও অভিসন্ধি রয়েছে।
Illegal Promoting
ডেপুটি মেয়রের এলাকায় রাতের অন্ধকারে চলছে পুকুর ভরাট

×
মন্তব্যসমূহ :0