তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে তাহেরপুরের সভায় একটাও কথা বললেন না প্রধানমন্ত্রী। চৈতন্য এবং মতুয়া আবেগকেই ব্যবহার করলেন নরেন্দ্র মোদী। কুয়াশার কারণে তার চপার তাহেরপুরে নামতে পারেনি। ভার্চুয়ালি বক্তৃতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন সভার শুরুতে ‘জয় নিতাই’ বলে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। নদীয়ার চৈতন্য আবেগকে ব্যবহার করেন প্রথমেই। বলে রাখা ভালো এই নদীয়ার মাটিতে যেমন চৈতন্যের ভাব ধারা রয়েছে তেমন চাঁদ কাজির ভাব ধারাও রয়েছে। সিপিআই(এম)’র বাংলা বাঁচাও যাত্রা নদীয়ায় আওয়াজ তুলেছিল ‘চাঁদ কাজি করবে চৈতন্যের গান, বিভেদের রাজনীতি হবে খান খান।’ এদিন প্রধানমন্ত্রী আরএসএসের প্রচারক হিসাবেই ভূমিকা পালন করলেন।
তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ তাড়াতে এসআইআর। যারা এসআইআরের বিরোধীতা করছে তারা অনুপ্রবেশকে মদত দিচ্ছে। উল্লেখ্য ১৬ ডিসেম্বর যেই খসড়া তালিকা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে তাতে একজনও অনুপ্রবেশকারিকে তারা দেখাতে পারেনি। শুভেন্দু থেকে সুকান্ত যেই এক কোটি নাম বাদ যাওয়ার গল্প দিয়েছিল সেই সংখ্যা এসে থেমেছে ৫৮ লক্ষ। যাদের নাম বাদ গিয়েছে তারা মূলত মৃত বা অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছে। বিহারের মতো এরাজ্যেও একজনও অনুপ্রবেশকারি বা রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করতে পারেনি কমিশন।
বামপন্থীদের আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপিকে একটা সুযোগ দিন। ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে দিন, দেখুন কত দ্রুত উন্নয়ন হয়। ত্রিপুরা দেখুন। সেখানে কমিউনিস্ট, বামপন্থীরা ৩০ বছর বরবাদ করেছিল। ত্রিপুরাবাসী আমাদের সুযোগ দিয়েছে। আমরা উন্নয়ন করেছি। বাংলাতেও হয়েছে লাল ঝন্ডাধারীদের থেকে মুক্তি। আশা ছিল, ভাল কিছু হবে। তৃণমূল বামপন্থীদের খারাপ গুণ, খারাপ লোকেদের গ্রহণ করে নিয়েছে। তাই আরও খারাপ হয়েছে।’ ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারকে হারাতে তৃণমূলের সাথে হাত মিলিয়েছিল বিজেপি, জামাতের মতো শক্তি এই কথা বার বার বলে আসছে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন প্রধানমন্ত্রীর এই ‘আশা’ প্রমান করলো বামপন্থীদের হারাতে তৃণমূলকে সাহায্য করেছিল বিজেপি। অপর দিকে রাজ্য বামপন্থীদের দুর্বল করতে আরএসএস বিজেপিকে রাজ্য জায়গা দিয়েছে মমতা।
এদিনের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র টাকা বরাদ্দ করেছে কিন্তু সেই টাকা খরচ করা হচ্ছে না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ হবে। প্রশ্ন এখানেই হাইকোর্টে যখন ১০০ দিনের কাজ চালু করার কথা বললো তখন কেন্দ্র কেন সুপ্রিম কোর্টে গেলো তার বিরোধীতা করে? কেন তারা ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে কয়েক বছর ধরে? কেন তৃণমূলের কোন দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না?
এসআইআরের কারণে মতুয়া সহ ছিন্নমূল মানুষ রাজ্যে সব থেকে বেশি বিপদে পড়েছেন। সিএএ, মতুয়া কার্ডের না করে মতুয়াদের সাথে প্রতারনা করছে বিজেপি। মতুয়াদের এই সমস্যা নিয়ে কোন কথা না বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজকল্যাণের এই নৌকাকে মতুয়ারা আগে নিয়ে গিয়েছেন। হরিচাঁদ ঠাকুর কর্মের মর্ম বুঝিয়েছেন। গুরুচাঁদ ঠাকুর কলম ধরিয়েছেন। বড়মা মাতৃত্ব বর্ষণ করেছেন। সকলকে প্রণাম।’
Modi Taherpur
মোদীর মুখে অনুপ্রবেশের কথা, কথা নেই এসআইআরে সমস্যায় পড়া মানুষদের নিয়ে
×
Comments :0