প্রতীম দে
সংবিধান মানুষকেই সার্বভৌম ঘোষণা করেছে, সর্বোচ্চ অধিকার দিয়েছে। সব মানুষকে সমান অধিকার দিয়েছে। তার ভিত্তিতেই মানুষের ঐক্য তৈরি হয়েছে। এই ঐক্য যারা ভাঙতে চাইছে তারাই সংবিধানের ওপর আক্রমণের করছে। মানুষের অধিকার রক্ষার জন্যই রক্ষা করতে হবে সংবিধানকে।
সোমবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে ‘দেশ বাঁচাও’, সংবিধান বাঁচাও’ কনভেনশনে একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, দেশের মধ্যে হিন্দু মুসলিম করা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর। মানুষকে এক করার বদলে ভাগ করতে শুরু করলো। ১৯০ বছর লড়াই করে এই সংবিধান গৃহীত হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের একটা ধারা এই সংবিধান। আর এস এস এই লড়াইয়ে ছিল না। তাই সংবিধান ওদের গ্রহণযোগ্য নয়।
সংবিধান সবার ওপরে মানুষকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এখন ঐক্য ভাঙা হচ্ছে।
সেলিম বলেন, এখন ঐক্য দরকার। যারা ঐক্য ভাঙছে তারা দেশপ্রেমিক নয়। নাগরিক অধিকারের কথা বলছে সংবিধান। বিজেপি মনুবাদের কথা বলে, ওরা মুসলিম বিরোধী শুধু নয়। নারী বিরোধী, আদিবাসী বিরোধী।
তিনি বলেছেন, সংবিধান মানুষকে সর্বোচ্চ অধিকার দিয়েছে। এটি হচ্ছে প্রথম কথা। সংবিধান কোনও ব্যক্তির অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়নি। সংবিধান সবার ওপরে সব মানুষকে স্থান দিয়েছে। সব মানুষকে, জাত-পাত-ধর্ম-ভাষার ওপরে, সবাইকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই ঐক্য যারা ভাঙছে তারা আজ দেশপ্রেমের কথা বলছে।
সেলিম বলেন, মানুষ আজ একসাথে থাকতে চাইছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘৃণার চাষ হচ্ছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, এক সাথে থাকতে হবে ।
সেলিম বলেন, মাটিগাড়াতে মাংস ব্যবসায়ীকে, এ রাজ্যে, দলবেঁধে নির্যাতন করা হলো। এখানে কি মাংস নিষিদ্ধ? আজকে মাংস বলে খুন করছে, কাল মাছ-ডিম বলেও খুন করবে। আসলে ‘আমাদের মতো হতে হবে’, এমনই মনোভাব।
তিনি বলেন, আরএসএস ফ্যাসিস্ট সংগঠন। সে এই বহুত্ব মানে না। সবার সমান অধিকার মানে না। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুর অধিকারের জন্য লড়তে হলে নাগরিক অধিকারের জন্যও লড়তে হবে। তিনি বলেন, বাস্তব হলো যে দেশ এবং দেশের মানুষ সঙ্কটে আছেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তি বলে ধর্ম সঙ্কটে। সংখ্যাগুরু হিন্দু। তাই হিন্দুদের সঙ্গে নিতে হবে। এটা হিন্দুপ্রেম না, ক্ষমতার প্রেম। অন্য দেশে এই ধরনের শক্তিই সংখ্যাগুরু ইসলামদের সঙ্গে নিতে উন্মাদনা তৈরি করছে।
মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদে বললেন ওয়াকফ নিয়ে যা বলার তিনিই বলবেন। ওখানে কেউ প্রতিবাদ করলেন না। বলার অধিকার সকলের রয়েছে। বিজেপি বলছে পাকিস্তান যাও। তৃণমূল বলছে বলতে হলে দিল্লিতে যাও। দুয়ের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি।
সেলিম বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল দেশে দাঙ্গা তৈরি করা। ধর্ম বেছে হত্যা সে কারণে, বিদেশ সচিব বললেন। আমরা দেখলাম হিন্দুত্ববাদের নামে সেই ভাগাভাগি করা হলো। তা’হলে উদ্দেশ্য মিলে গেল কেন.? এমনকি ঐক্যের কথা বললে বলা হচ্ছে দেশদ্রোহী।
কনভেনশনে নওশাদ সিদ্দিকি বলেন,
তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দল সংবিধানের ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। এই রাজ্যে আদিবাসী, সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত।
সংবিধান রক্ষার লড়াইয়ে সবাইকে শামিল হতে হবে। বনাঞ্চল আইনের মাধ্যমে ২০২৩ সালে আদিবাসীদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনে বিজেপি সরকার। মানুষের অধিকার যেখানেই আক্রান্ত হবে সেখানেই আমরা সরব হবো। এই রাজ্যে সরকার কোন প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে দেয় না।
ওয়াকফের নাম করে জমি মাফিয়ারা জমি লুঠ করতে চাইছে।
Comments :0