চিকিৎসক আন্দোলনের নেতাদের ফের তলব করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানা। দফায় দফায় প্রতিবাদী চিকিৎসকদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা প্রত্যেকেই আরজি করে চিকিৎসক ছাত্রী ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
শনিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় তলব করা হয় চিকিৎসক সংগঠন এএইচএসডি ওয়েস্ট বেঙ্গলের সম্পাদক ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্সের যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ পুন্যব্রত গুন, ‘অভয়া মঞ্চ’-র অন্যতম আহ্বায়ক ডাঃ তমেনাশ চৌধুরী এবং জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডাঃ অনিকেত মাহাতোকে। এদিন সকালে তলব করা হয় আরেক চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকেও। এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর, বৌবাজার থানা সমন পাঠিয়েছিল তাঁকে।
থানার সামনে বিক্ষোভ এদিন অভিনব চেহারা নেয়। বিক্ষোভের অংশ হিসেবেই এই এলাকায় চিকিৎসা শিবির চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
গত বছর ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ প্রতিবাদে ভেঙে পড়েছিলেন রাজ্যের মানুষ। বুঝিয়েছিলেন ন্যায়বিচারের পক্ষে আন্দোলন চলবে। বারবারই প্রতিবাদীদের তলব করেছে পুলিশ। ছাত্র-যুব নেতৃবৃন্দকে বারবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। ‘অভয়া মঞ্চ’-র সংগঠকদের।
রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশ তো বটেই, কেন্দ্রের সিবিআই’র বিরুদ্ধেও আসল অপরাধীদের আড়াল করা অভিযোগ উঠেছে। বস্তুত নিম্ন আদালতে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই। ‘অভয়া’-র বাবা-মা বারবারই বলেছেন যে বিচার মেলেনি। বলছেন প্রতিবাদীরা। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই সওয়াল জবাবেই বলেছিল যে দেহ সরানো হয়েছে। দেহ যেখানে মিলেছে, খুন সেখানে হয়নি। প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু তার জন্য দায়ীদের ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কতদূর এগিয়েছে জানায়নি সিবিআই। প্রতিবাদীরা বারবার বলছেন এই কাণ্ড প্রাতিষ্ঠানিক হত্যা। বিপুল দুর্নীতির চক্র তার জন্য দায়ী। অথচ এই চক্রের মাথাদের ডাকা হচ্ছে। রাজ্যের পুলিশ বা কেন্দ্রের সিবিআই এদের আড়াল করতে মিলে গিয়েছে।
এদিন হেয়ার স্ট্রিট থানার সামনে ঠিক একই ছবি। বিচারের দাবিতে আন্দোলন জারি রাখার ঘোষণা প্রতিবাদীদের। পুলিশকে বক্তব্য জানাতে গিয়েছেন প্রতিবাদী চার চিকিৎসক। তার আগে ডাঃ উৎপল ব্যানার্জি বলেছেন, ‘‘দ্রোহের কার্নিভাল এক বছর আগে হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে। আর পুলিশ এখন সেই কর্মসূচিকে বেআইনি বলছে। সব নথি জমা দিচ্ছি আমরা। তবে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা যাবে না।’’ ডাঃ মানস গুমটা বলেন, ‘‘যাঁরা প্রতিবাদে নেমেছেন সেই চিকিৎসকদেরই বেছে বেছে হেনস্তা করা হচ্ছে। এমনকি তার জন্য স্বাস্থ্য পিরষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।’’ ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অপরাধ সিন্ডিকেটে যুক্তদের ধরা হচ্ছে না। এই অপরাধ চক্রের কারণেই আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে। যারা ঘটনার দিন হাসপাতালের সেমিনর রুমে ঢুকে পড়ল এবং প্রমাণ লোপাট করল তাদের ডাকা হচ্ছে না। আসল দোষীদের ধার না হলে তীব্র হবে প্রতিবাদ।’’
মন্তব্যসমূহ :0