যারা সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে, স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তরাধিকারের বিপক্ষে, তারাই ইজরায়েল আমেরিকাকে মদত দিচ্ছে। সে কারণেই মোদী সরকার এদের পক্ষে।
মঙ্গলবার প্যালেস্তাইনের সংহতিতে কলকাতায় বামপন্থীদের মিছিলের পর সংক্ষিপ্ত সভায় একথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বক্তব্য, 
সেলিম বলেছেন, সঙ্ঘ পরিবারের অনুগত এবং সংবাদমাধ্যমের ধর্মীয় সংঘাতের চেহারায় দেখাতে চাইছে বাণিজ্যিক স্বার্থ এবং দখলদারি নীতিকে। কিন্তু প্যালেস্তাইনের পাশে ইসলামিক রাষ্ট্র কাতারে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সেনা ঘাঁটি রয়েছে। ইসলামিক রাষ্ট্র সৌদি আরবও আমেরিকার সহযোগী, দালালের ভূমিকা নিচ্ছে। ধর্ম আদৌ বিষয় নয়। আসল বিষয় টাকা, মুনাফা। আসল বিষয় সাম্রাজ্যবাদ। 
সেলিম বলেন, সেলিম বলেন, পারস্য উপসাগরে যুদ্ধ হলে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়বে। আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়বে। অন্য দেশে আন্তর্জাতিক স্তরে দাম কমলে দেশের ভেতরেও দাম কমে। আমাদের দেশে একবার জ্বালানির দাম বাড়লে আর কমে না। ওই বর্ধিত দামই দিতে হবে কৃষককে সারের জন্য, জ্বালানির জন্য। তাই আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তাই ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত বন্ধ হওয়ার দরকার। 
সেলিম বলেন, সেলিম বলেন, পঁচিশ বছর আগে বলা ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে বলে হামলা চালানো হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল সেই প্রচার পুরোপুরি অসত্য। আজকে বলা হচ্ছে ইরানে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। বলা হচ্ছে ইরানকে শেষ করা না হলে কেউ বাঁচবে না। যে আমেরিকা বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য জানিয়ে দেশে দেশে হামলা চালিয়েছে তারাই এখন সিরিয়ার মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদী শাসককে সমর্থন করছে। যারা হিন্দু-হিন্দু করেন বা যাঁরা মুসলিম-মুসলিম করেন তাঁদেরও বুঝতে হবে, আসলে টাকার খেলা হচ্ছে। 
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় ধর্মনিরপেক্ষ আসাদ সরকারকে অস্ত্র হাতে উৎখাত করেছে যে বাহিনী তার নেতা আল জোলানি। এই আল জুলানি সন্ত্রাসবাদী আল কায়েদা এবং পরে আইসিস’র যোদ্ধা ছিলেন। 
সেলিম বলেন, অনেকে মনে করেছিলেন সাম্রাজ্যবাদ বলে কিছু নেই। মুক্তি, স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন এসব গত শতাব্দীর পুরনো হয়ে গিয়েছে। আজকে আমরা দেখছি কেন এই আন্দোলন জরুরি। 
সেলিম স্বাধীনতা আন্দোলনে আরএসএস’র আত্মসমর্পণ মনে করিয়ে বলেছেন, এই মনোভাবের পরিণতিতে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি-আরএসএস’র সরকার স্বাধীন বিদেশনীতি, স্বাধীনতা আন্দোলনের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের  উত্তরাধিকার অস্বীকার করছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ইজরায়েলকে মদত দিচ্ছে। প্যালেস্তাইনের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে দেশের পরম্পরা, ঐতিহ্য বিসর্জন দিয়ে। দেখা গেল, ভারত শান্তির পক্ষে না।
সেলিম বলেন, এই প্রথম যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকল না। আমরা বন্ধু হারিয়েছি। প্রতিবেশীদের হারিয়েছি। আমাদের পাশে কেউ নেই। যেমন ইজরায়েল এবং আমেরিকার পাশে অন্য দেশগুলি কেউ নেই।
সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি বলেন, বিজেপি এবং মোদীর নেতৃত্বে সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে ভারত। তার বিরোধিতা চলবে। আদানি-আম্বানিদের স্বার্থে বিজেপি ইজরায়েল-আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।