স্পেনের কোচ লুই এনরিকে জানিয়েছিলেন তিনি নাকি তাঁর দলের প্রত্যেক প্লেয়ারকে এক হাজার করে পেনাল্টি মারার অনুশীলন করতে বলেছিলেন। এক বছর আগেই। কী অনুশীলন তাঁরা করেছেন, তা বোঝাই গেল মরক্কোর বিরুদ্ধে টাই ব্রেকারে।
গোলশূন্য নির্ধারিত সময়, অতিরিক্ত আধঘণ্টার পরে পেনাল্টি শুট আউটে প্রথম তিন শটের একটিও গোলে ঢোকাতে পারেননি স্পেনের খেলোয়াড়রা। মাদ্রিদের রাস্তায় বড় হওয়া, হকার পিতা ও গৃহ পরিচারিকা মায়ের সন্তান কিন্তু তাঁর ‘স্বদেশের’ হয়ে খেলা আসরাফ হাকিমির শট স্পেনের জালে জড়াতেই মাথা নুইয়ে গেল সার্জিও বুসকেটসদের। এবারের মতো স্পেনের বসন্ত গত।
কাতারের বিশ্বকাপ মঞ্চে মরক্কো ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে উঠে এসেছিল আগেই। তাই কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি ছিলেন না এনরিকে। অনুশীলনে মরক্কোর খেলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে যাবতীয় রণনীতিও ঠিক করে রেখেছিলেন। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে দিলো না। ম্যাচ জিতে নিলো আফ্রিকার দল। 
                        
                        
কঠিন গ্রুপ থেকে নকআউটে কোয়ালিফাই করেছিলো মরক্কো। বেলজিয়ামের মতো হেভিওয়েট দলকে ছিটকে দিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস ও উত্তেজনা কাজ করছিলো ফুটবলারদের মধ্যে। তাদের কোচ রেগাগ্রুইয়ের ম্যাচের আগে বলেছিলেন, ‘৩৬ বছর মরক্কো এমন পর্যায়ে বিশ্বকাপে খেলেনি। তাও আবার অপরাজিত থেকে।’ 
এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই নিজেদের মধ্যে পাসের ফুলঝুরি খেলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে স্পেন। অপরদিকে, রক্ষণকে শক্তিশালী রেখে কাউন্টার অ্যাটাক ভিত্তিক ফুটবল খেলে মরক্কো। ম্যাচের প্রথমার্ধের প্রথম ৩০ মিনিটে আক্রমণের ঝাঁঝ বেশি ছিল লুই এনরিকের দলের। দু-একবার গোলের কাছেও চলে গিয়েছে ২০১০-এর বিশ্বজয়ীরা। 
খেলা শুরু হলে ৪ মিনিটের মাথায় পেদ্রি মরক্কোর ডিফেন্ডারদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পাাস দেন গাভিকে। তিনি বলটি নিয়ন্ত্রণ করে গোলে ঢোকানোর আগেই ক্লিয়ার করে দেয় মরক্কো। কিছক্ষণের মধ্যেই আক্রমণ শানায় মরক্কো। ১২ মিনিটের মাথায় সুযোগ আসে ক্লাবে মেসির সতীর্থ হাকিমির সামনে। তিনি মরক্কোর হয়ে ফ্রি-কিক নেন। তবে ক্রসবারের উপর দিয়ে বের হয়ে যায়।
২৫ মিনিটে সুযোগ আসে স্প্যানিশদের সামনে। বোনোর থেকে পাস পায় গাভি। কিন্তু তাঁর শট বারে লেগে প্রতিহত হয়। প্রথমার্ধে ৬৯ শতাংশ বল পজিশন নিজেদের কাছে রাখলেও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় স্পেন। গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও সেভাবে গতি দেখা যায়নি স্পেনের খেলায়। ৫৫ মিনিটে ফ্রিকিক পান লা রোজারা। অ্যাসেনসিও ফ্রি-কিক থেকে ওলমোকে পাস দেন। ওলমোর শট মরক্কোর গোলরক্ষক বের করে দেন।
মরক্কো একেবারে হিসেব কষে খেলে। স্পেনকে ৯০ মিনিট আটকে রাখে। নির্ধারিত সময় খেলার ফলাফল ০-০ থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ম্যাচের ১০০ মিনিট অব্দি ৮০০র বেশি পাস খেললেও কোন গোল করতে পারেনি স্পেন। অতিরিক্ত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে স্পেনের পরিবর্ত খেলোয়াড় পাবলো সারাবিয়ার শট পোস্টে লাগে। না হলে হয়তো তখনই স্পেনের মুখে হাসি ফুটতে পারতো।
শেষ পর্যন্ত সেই ট্রাই ব্রেকারেই হারতে হল লা রোজাদের। পেনাল্টি শুটে একটাও গোল করতে পারলো না তারা। নিজের জীবনের শেষ বিশ্বকাপে তৃতীয় পেনাল্টি শট নিতে গিয়ে মিস করলেন সার্জিও বুসকেটসও। 
 
 
                                        .jpeg) 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
Comments :0