DATA SCIENCE AND ARTIFICIAL INTELLIGENCE

একাদশ-দ্বাদশে ডেটা সায়েন্স ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
যদিও সংসদের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন

রাজ্য জেলা কলকাতা

data science artificial intelligence west bengal school bengali news

এবার থেকে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে ডেটা সায়েন্স এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স পড়ার সুযোগ পাবেন এরাজ্যের ছাত্ররা। যদিও সংসদের এই সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। 

মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ এবং দ্বাদশের পাঠ্যক্রমে দুটি নতুন বিষয় যোগ হল। বিষয়দুটি যথাক্রমে ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। 

নির্দেশিকায় সংসদ জানিয়েছে, কোনও স্কুল যদি এই দুই সাবজেক্ট যোগ করতে চায়, তাহলে ২ মে থেকে ৩০ জুনের ভিতরে পর্ষদের কাছে আবেদন জানাতে হবে। 

যদিও ইচ্ছুক স্কুলগুলির জন্য একগুচ্ছ শর্তাবলি রেখেছে পর্ষদ। নির্দেশিকা অনুযায়ী, যেই স্কুলগুলিতে ইতিমধ্যেই কম্পিউটার সায়েন্স পড়ানো হয়, এবং কম্পিউটার ল্যাবরেটরি রয়েছে, কেবলমাত্র সেই স্কুলগুলি নতুন এই দুই বিষয় পাঠ্যক্রমে যোগ করার আবেদন জানাতে পারবে। 

এছাড়াও স্কুলে কম্পিউটার সায়েন্সের স্থায়ী শিক্ষক থাকা আবশ্যক। সেই শিক্ষকদের স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে মেশিন লার্নিং, ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে পড়াশোনা করে থাকা বাধ্যতামূলক। 

সংসদ আরও জানিয়েছে, সিলেবাসের সঙ্গে শিক্ষকদের পরিচয় ঘটাতে জুন জুলাই নাগাদ ১০ দিনের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হতে পারে।

সংসদের এই নির্দেশ সামনে আসার পর থেকেই রাজ্যের শিক্ষামহল একাধিক প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের দাবি, ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন এবং কম্পিউটার সায়েন্সের উন্নত সংস্করণ। বর্তমানে রাজ্যের স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে এই দুই বিষয়ের শিক্ষক নেই। রয়েছে বিপুল শুন্যপদ। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ না করেই কীভাবে নতুন একটি বিষয় পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।

এই প্রসঙ্গে কলকাতার কালীধন ইন্সটিটিইউটের শিক্ষক বিশ্বরূপ দাশগুপ্ত জানান, কম্পিউটার সায়েন্স এবং কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের নবতম রূপ হচ্ছে ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। সেই বিষয় পড়ানোর মতো ‘হিউম্যান রিসোর্স’ অধিকাংশ স্কুলেই নেই। 

এরসঙ্গে তিনি যোগ করেন, এই বিষয়টি নতুন। পড়ুয়াদের মুখোমুখি হওয়ার আগে শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ জরুরি। সেই প্রশিক্ষণের উপর ভিত্তি করে তাঁদের মূল্যায়ণ হওয়া প্রয়োজন। তারপর নতুন এই দুই বিষয় পাঠ্যক্রমে যুক্ত করা উচিত। কারণ এরসঙ্গে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। এবং  এই সবটা সময় সাপেক্ষ। কিন্তু সেটা না করে ‘শর্টকাট’ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে সংসদ। 

শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, ২০২০ সালের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি বা এনইপিতেও এই জাতীয় চটকের ইঙ্গিত রয়েছে। কোনও বিষয়ে গভীরে না গিয়ে, ভাসা ভাসা তথ্য জানানোর কথা বলা হয়েছে এনইপি’তে। রাজ্য সরকার পশ্চিম বাংলায় এনইপি চালু করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সেই চটকদারী মানসিকতা থেকেই পরিকাঠামো ছাড়াই এই দুই বিষয় পাঠ্যক্রমে যোগ করা হয়েছে। 

বিশ্বরূপ দাশগুপ্তের সংযোজন, ‘‘ ইতিহাসে নাম কিনতে চাইছে বর্তমান রাজ্য সরকার।’’

Comments :0

Login to leave a comment