Post Editorial Ganashakti

রবীন সেনের জন্মশতবর্ষ: শ্রেণিশোষণের অবসানে নিরলস সংগ্রাম

সম্পাদকীয় বিভাগ

post editorial Ganashakti

 

অরিন্দম কোঙার


দুঃসাহসিক অভিযান

                ১৯৪০ সালের ১৯-২০ মার্চ। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ৫৩-তম অধিবেশন বিহারের রামগড়ে। আবার একই স্থানে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হয় আপসবিরোধী সম্মেলন। এই সম্মেলন আয়োজনে সুভাষচন্দ্র বসু ও স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। ১৭ বছরের এক কলেজ ছাত্রের লক্ষ্য এই আপসবিরোধী সম্মেলনে যোগদান। এক মাসের কলেজের ফি নিয়ে দমদম থেকে রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করলেন রামগড়ের উদ্দেশ্যে। সঙ্গে বন্ধু সাজাহান। মেমারিতে বন্ধুর যাত্রা সমাপ্তি। কিন্তু কলেজ ছাত্রটি অদম্য। সঙ্গের অর্থ শেষ। খাবার কোথাও চায়ের দোকানের মালিকের বদান্যতায় চা-পাউরুটি, কোথাও মন্দিরের কীর্তনের আসরের পুরি-তরকারি, কোথাও টিকিট কালেক্টারের বাড়ির খাবার, কোথাও রেলকুলির ছাতু-লঙ্কা-গুড়, আবার কোথাও-বা খেতের ভুট্টা-আমের গুটি। রাতের বিশ্রাম গুমটি, টিকিট ঘরের পাশে বালির বস্তার গায়ে, চায়ের দোকানের বেঞ্চ, স্টেশনের ছাউনি, খালি ওয়াগন, স্টেশন ঘর। পথে হোটেলে কাজ— কাঠ বওয়া, খাবার টেবিল মোছা। মাথায় চিলের ঠোকর, ফোলা পা, চুলে-গায়ে উকুন নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩৯৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছান সম্মেলন স্থলে। কিন্তু পরিচয়পত্র নেই, সুতরাং স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার বাধা। ছাত্রটি নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক। খাকি প্যান্ট, সাদা শার্ট, ব্যাজ, টুপি, লাঠি। সম্মেলন শেষ হলো। দমদমে ফিরে এলেন। কিন্তু মনের চাহিদা মিটল না। সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতায় অদম্য এই ছাত্রটির নাম রবীন সেন।

সামরিক বাহিনীতে

              কমরেড রবীন সেনের জন্ম ১৯২৩ সালে। রবীন সেন খুলনা জেলায় (অধুনা বাংলাদেশে) সেনহাটীতে বিদ্যালয় শিক্ষা শেষ করে কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। থাকতেন দমদমে। শ্রমিকদের মধ্যে কাজ করতে থাকেন। ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন, সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী সংগ্রামে শামিল হন। মার্কসবাদী সাহিত্য পড়া শুরু করেন। কমিউনিস্ট পার্টির পত্র-পত্রিকাও পড়তে থাকেন। পুলিশের নজর পড়ে। চলে যান কার্শিয়াঙে কাকার কাছে। কিন্তু সেখানেও থাকা নিরাপদ নয়। আবার কলকাতায়। ১৯৪৩– ৪৬ সালে সামরিক বাহিনীতে, রয়েল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সে ‘গানার’।


              বিমান বাহিনীতে থাকাকালীনও রবীন সেন গোপনে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন ও অন্যান্য সেনাদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেছিলেন। সেনা ব্যারাকে তিনি পড়েন ট্রটস্কির ‘ডেথ অ্যাগনি অব ক্যাপিটালিজম’, ও ‘পারমানেন্ট রেভোলিউশন’। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ একেবারে শেষ পর্যায়ে। রবীন সেন তাঁর ‘পাঁচ অধ্যায়’ বইয়ে লিখেছেন — 
            সার্জেন্ট দত্ত বললেন—‘‘ এবার আমাদের সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে সতর্কতার সঙ্গে— বিশেষ করে ফ্রন্ট থেকে যারা আসবে, তাদের সঙ্গে। কোহাটের বাইরে বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিগুলির সঙ্গেও যোগাযোগের ব্যবস্থা করতে হবে। যোগাযোগের চেষ্টা করতে হবে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও। যুদ্ধের শেষে আবার একটা অস্থির পরিস্থিতি আসছে। সংগ্রাম শুরু হবে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। সশস্ত্র বাহিনীরও একটা ভূমিকা থাকা উচিত এই সংগ্রামে। প্রথম মহাযুদ্ধের পর রাশিয়ায় জারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ও পরে বলশেভিকদের ক্ষমতা দখলে এক বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিল সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সৈন্যরা। ইতিহাসে আরও সাক্ষ্য আছে।’’

 


              ১৯৪৬ সালে নৌবিদ্রোহ যখন শুরু হয়ে গেল, তখন বিমান বাহিনীতেও প্রস্তুতি চললো জোর কদমে। কিন্তু প্রস্তুতি ধরা পড়ে গেল। কোর্ট মার্শাল। সামরিক ট্রাইবুনালে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে মেজর ভোরা বললেন, ‘‘আমরা কেউ অপরাধ করিনি। আমরা ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলাম — দেশের জন্যে যুদ্ধ করতে। দেশটা আমাদের। সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কে সম্রাট?’’( পাঁচ অধ্যায়)। শেষ পর্যন্ত মিলিটারি ডিটেনশন ১০৯ দিন। ৯ দিন সাজা রেহাই।  ১০১ দিনের মাথায় ছাড়। বিমানবাহিনী থেকে বরখাস্ত।  


কমিউনিস্ট পার্টিতে

           স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় ও সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতায় কমরেড রবীন সেন গুপ্ত ও প্রকাশ্য একাধিক সংগঠনে যোগ দিয়েছেন। সোশালিস্ট আর্মি (পরে সোশালিস্ট রিপাবলিকান আর্মি), বলশেভিক-লেনিনিস্ট পার্টি, জয়প্রকাশ নারায়ণের সোশালিস্ট পার্টি। ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে। এক্স সার্ভিসম্যানস লিগ গঠন করেছিলেন। ১৯৪৬ সালের নভেম্বর মাসে ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী বিমল প্রতিভা দেবীর উদ্যোগে আসানসোল-রানিগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে চলে আসেন, ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিমানবাহিনীতে যাওয়ার আগে থেকেই তিনি যে মার্কসবাদী সাহিত্য চর্চা শুরু করেন, সেটা গভীর হতে থাকে বিমানবাহিনী থেকে ফিরে আসার পর। পরিচয় হয় কমিউনিস্ট নেতা বিনয় চৌধুরি, বিজয় পাল, কে এল মহেন্দ্র প্রমুখের সঙ্গে। ১৯৫৩ সালে রবীন সেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সভ্য হন। ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রবীন সেন ক্রমশ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে আসীন হন। ১৯৬০ সালে পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের সদস্য হন।


             পার্টির ভেতরে মতাদর্শগত সংগ্রামে সংশোধনবাদী ও সঙ্কীর্ণতাবাদী বিচ্যুতির বিরুদ্ধে নিরলস যোদ্ধা ছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সালে যখন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)’র আত্মপ্রকাশ ঘটে, তখন থেকেই তিনি পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য। ১৯৬৮ সালে আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে মতাদর্শগত বিতর্কে পার্টির অবস্থান স্থির করতে বর্ধমান শহরে যে কেন্দ্রীয় প্লেনাম অনুষ্ঠিত হয়, সেই প্লেনাম আয়োজনে রবীন সেনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ১৯৯৫ সালের ১৯ জানুয়ারি রবীন সেনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তিনি ছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের সদস্য। ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি পার্টির বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।


              শ্রমিক সংগঠন, শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্ব তো দিতেই হবে, তার সঙ্গে গুরুত্ব দিতে হবে কৃষক সংগঠনে, কৃষক আন্দোলনে। শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী গড়ে তোলা আবশ্যিক। এই ভাবনা পার্টির অভ্যন্তরে সঞ্চারিত করতে রবীন সেন সচেষ্ট ছিলেন। আসানসোল-রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের আশপাশের গ্রামগুলিতে কৃষক সংগঠন গড়ে তুলতে তিনি পার্টিকর্মীদের উদ্যোগী করে তোলেন। 
              সামরিক মেজাজ আর কমিউনিস্ট মানসিকতার সমন্বয় ছিল রবীন সেনের কাজকর্মে। পার্টি শৃঙ্খলা রক্ষায়, পার্টি কর্মসূচি রূপায়ণে যেমন তিনি ছিলেন কঠোর, তেমনি পার্টি সভ্য ও সমর্থক, সাধারণ মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় তিনি ছিলেন দিলখোলা। নেতা ও কর্মীর মধ্যে তথাকথিত ব্যবধান থেকে তিনি মুক্ত ছিলেন। ফলে যে-কেউ তাঁর কাছে মনের কথা বলতে পারতেন।
              রবীন সেনের মৃত্যু হয় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)’র বর্ধমান জেলা কমিটির অফিসে। আসলে পার্টি অফিস, পার্টি কমিউন কিংবা ট্রেড ইউনিয়ন অফিস ছিল তাঁর আস্তানা, এর কোনও ব্যত্যয় হয়নি। ১৯৪৭ সালে বল্লভপুরে প্রথম ইউনিয়ন অফিসের বিবরণ দিয়ে রবীন সেন লিখেছেন, ‘‘ পরিত্যক্ত ধানকলে একটা বড় চালাঘর ছিল। তিনদিকে ইট সুরকির গাঁথুনির দেওয়াল, সামনেটা ফাঁকা। উপরে টিনের চাল। সবই জরাজীর্ণ। সামনে একটা বাঁধানো চাতাল, মাঝে মাঝে চাতাল ফেটে গেছে। চারদিক ঝোপঝাড়ে ভর্তি। একদিকে উঁচু ইটের গাঁথুনি। তার উপর ভাঙা একটা বয়লার। চালার পিছনে ডোবা, কয়েকটা বড় গাছ, তারপর বস্তী। চারদিকেই শ্রমিকদের বসতি।’’(পাঁচ অধ্যায়)। শ্রমিকদের উদ্যোগে কিছু সংস্কার করে অফিস চালু হয়।  
               মৃত্যুর সময় রবীন সেন ছিলেন সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। মৃত্যুর দু’মাস আগে তিনি ১৯৯৪ সালের ২২-২৬ নভেম্বর সিরিয়ার দামাস্কাসে বিশ্ব ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের ত্রয়োদশ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। কংগ্রেসের মূল রিপোর্ট সম্পর্কে রবীন সেনের অভিমত —

 


               সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার পতনে উদ্বেগ প্রকাশ আছে। আছে ক্ষীণস্বরে আস্তে আস্তে শোষণমুক্ত সমাজের কথা। আবার এই রিপোর্টেই আছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আইএমএফ-কে গণতন্ত্রীকরণের কথা। কিভাবে — নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকশ্রেণির ঐক্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাথে সাথে বলা হয়েছে ডবলিউএফটিইউ আজ নির্দিষ্ট লক্ষ্যহীন একটি দুর্বল আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন। নেতৃত্বও দুর্বল। এরই মাঝে একটি সম্ভাবনাময় ইতিবাচক দিক হচ্ছে— উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশগুলির কেন্দ্রীভবন। তাদের সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ভুমিকা ও সাম্রাজ্যবাদী মদতপুষ্ট বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলির বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতিজ্ঞা। ( বিশ্ব ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের ত্রয়োদশ কংগ্রেস)
         

               এই অভিমতে সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা ও শ্রমিক শ্রেণির ঐক্যের গুরুত্ব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।


             ১৯৮৩ সালের ২৬ আগস্ট- ৩ সেপ্টেম্বর মস্কোতে অনুষ্ঠিত হয় ‘নিরস্ত্রীকরণ ও কয়লা খনি ও অন্যান্য শক্তি-শিল্পের উপর এর প্রতিক্রিয়া’ সম্পর্কে এক আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন সম্মেলন। ভারত থেকে অন্যতম প্রতিনিধি ছিলেন রবীন সেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের মানুষদের আচার–আচরণ দেখে তিনি মন্তব্য করেন— 
            বিদেশিদের কাছ থেকে রুবলের পরিবর্তে ডলার সংগ্রহের দিকে ঝোঁকও দেখেছি। আমি এই প্রথম সোভিয়েত দেশে এসেছি। মাত্র কয়েকদিন আছি। বিরাট সোভিয়েত দেশের সামান্য জায়গাই দেখেছি। তবুও মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, অবক্ষয়ী বুর্জোয়া সমাজের আর্থ-সামাজিক সাংস্কৃতিক ছাপ কিছুটা যেন ষাট বছরের সমাজতান্ত্রিক দেশের উপর পড়ছে। এই অবক্ষয়ী বুর্জোয়া প্রভাব ওদেশের মানুষের সমাজতান্ত্রিক চেতনার উপর প্রভাব ফেলবে নাতো? বিশেষ করে সোভিয়েত মানুষের সমাজতান্ত্রিক চেতনার মান খুব একটা উঁচু বলেও মনে হচ্ছে না— বিপ্লবের ষাট বছর পরেও। (মস্কো থেকে ফিরে)
               উল্লেখ্য, সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ে ১৯৯১ সালে।

সংগঠন ও সংগ্রাম

                 কমিউনিস্ট পার্টি বিপ্লবী পার্টি। কমিউনিস্ট পার্টি বেঁচে থাকে জনগণের মধ্যে। কমিউনিস্ট পার্টি বেঁচে থাকে সংগ্রামে— পার্টির ভেতরে, পার্টির বাইরে। পার্টির বাইরের সংগ্রামে আশু লক্ষ্যে ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু মূল লক্ষ্যে থাকে অভিন্নতা– শ্রেণিশোষণের অবসান ঘটিয়ে শোষণহীন সমাজ, সমাজতান্ত্রিক সমাজ যার উত্তর হবে শ্রেণিহীন সাম্যবাদী সমাজে। তাই কমিউনিস্ট পার্টি হবে নিষ্ক্রিয়তামুক্ত, অকমিউনিস্ট ঝোঁক-মুক্ত। পার্টিতে এইসব জঞ্জাল অপসারণে রবীন সেন ছিলেন আপসহীন। পার্টি সাপ্তাহিক ‘দেশহিতৈষী’ পত্রিকার সম্পাদক সুধাংশু দাশগুপ্তের অনুরোধে ১৯৯০-৯৪ সালে পত্রিকার শারদ সংখ্যাতে রবীন সেন যে-সব নিবন্ধ লেখেন,‘সমাজতান্ত্রিক বিপর্যয়ের বস্তুবাদী ব্যাখ্যার প্রয়োজন’ ছাড়া বাকিগুলি পার্টি সংগঠন নিয়ে। তিনি প্রশ্ন তোলেন,‘‘ আমরা ১৫বছর (১৯৯১সালে) সরকারে আছি — জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক কী ঘনিষ্ঠ আছে? অ-কমিউনিস্টসুলভ বিভিন্ন বিচ্যুতির ও অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের পার্টিতে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে পার্টির দুয়ার কি বন্ধ? সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে কি অবিচল আছি?’’( কমিউনিস্ট পার্টির সংগঠন)। তিনি বারে বারে লেনিনকে উল্লেখ করেছেন। পার্টির শুদ্ধিকরণ, রুশ কমিউনিস্ট পার্টি (বলশেভিক)-র একাদশ কংগ্রেসের আগে ১৯২২ সালের ২৩ মার্চ,২৪ মার্চ, ২৬ মার্চ ভি এম মলোটভের কাছে লেনিন যে-সব চিঠি লেখেন, তার উল্লেখ করে রবীন সেন লেখেন— 

 

 


                  বিপ্লবের পর রাশিয়াতেও অনেক নেতা পার্টির ভুলচুকের বিচ্যুতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমালোচনার বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁদের ধারণা ছিল এইরূপ সমালোচনায় ও আত্মসমালোচনায় পার্টির দুর্বলতাই শত্রু পক্ষ জেনে ফেলবে। লেনিন তাঁদের তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন শত্রু জানুক আর নাই জানুক, আমাদের কর্তব্য হলো দুর্বলতা ও বিচ্যুতি কাটিয়ে উঠে পার্টিকে মজবুত করা। (বর্তমান পরিস্থিতিতে পার্টি সংগঠন ও আমরা)
                 কমরেড রবীন সেনের জন্মশতবর্ষের বার্তা তাই মজবুত দৃঢ় বিপ্লবী পার্টি সংগঠন। কমরেড রবীন সেনের জন্মশতবর্ষে বার্তা তাই সমাজ পরিবর্তনের জন্য নিরলস সংগ্রাম।

Comments :0

Login to leave a comment