ভিঝিনাম বন্দরের জন্য প্রথম পর্বে ৬৩ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে কেরালা রাজ্য সরকারই। রাজ্য সরকারোর বিনিয়োগ ৫ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।
বন্দরের পরিচালনার বরাত পাওয়া আদানি গোষ্ঠীর সংস্থা বিনিয়োগ করেছে ২৮ শতাংশ। আর কেন্দ্রীয় সরকার ৯ শতাংশ অর্থ দিয়েছে বন্দর নির্মাণে। তবে কেরালা সরকার বারবার অনুদান দাবি করলেও সেই অর্থ দেওয়া হয়েছে ঋণ হিসেবে।
শুক্রবার এই বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন এবং কংগ্রেসের সাংসদ শশী থারুরকে দেখে স্থূল রিসিকতাও করেছেন।
মোদীর মন্তব্য, ‘‘আপনারা ‘ইন্ডি’ জোটের সদস্য। এক মঞ্চে আপনাদের দেখে কারো কারও ঘুম উড়ে যেতে পারে।’’
মোদী বলেছেন, ‘‘কেরালার কমিউনিস্ট সরকারকে ধন্যবাদ। বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব বোঝার জন্য।’’
তবে এই বন্দর যে ভারতকে সমুদ্র বন্দর বাণিজ্যে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে দেবে তা স্বীকার করেছেন মোদী।
সাংবাদিক সম্মেলনে পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, ‘‘উপমহাদেশের দক্ষিণ অংশে এই গভীর সমুদ্র বন্দর নতুন হাওয়া এনে দেবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে সরাসরি নিযুক্ত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার। তার মধ্যে স্থানীয়রা যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন বাইরের রাজ্যের মানুষ।
বিজয়ন জানিয়েছেন সরাসরি নিয়োগ হবে, বন্দরের প্রথম পর্বেই, ৫ হাজারের বেশি মানুষের। স্থানীয় মৎস্যজীবীদের নিয়োগ করা হয়েছে এই প্রকল্পে।
বন্দরের ক্রেন ব্যবহারের কাজে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় মৎস্যজীবী পরিবারের মহিলাদের যুক্ত করা হয়েছে বলে কেরালা সরকার জানিয়েছে।
বিজয়ন বলেছেন, ‘‘বন্দরের মূল কাজেও মহিলাদের যুক্ত করার ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকেছে দীর্ঘদিন। ভিঝিনাম বন্দরে এই ফারাক কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মহিলাদের নিয়োগ করা হচ্ছে বন্দর পরিচালনার সব ক্ষেত্রেই।’’
ভিঝিনাম বন্দরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার সম্পর্কও দীর্ঘসময়ের। ২০০১-এ কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী একে অ্যান্টনি সরকার অনুমতি চাইলেও কেন্দ্রের বিজেপি জোট সরকার তা দেয়নি। ২০০৬সালে এলডিএফ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুতানন্দন অনুমতি চাইলেও তখন কেন্দ্রে আসীন কংগ্রেস জোট সরকার তা দেয়নি। অ্যান্টনি নিজে অনুমতি আটকানোর পক্ষে অবস্থান নেন।
২০১৩-তে রাজ্যে বড় আন্দোলন হয় গভীর সমুদ্র বন্দরের পক্ষে। ২০১৫-তে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চন্ডী কেন্দ্রের অনুমতি পেয়ে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বন্দরের চুক্তি করেন। তবে ২০১৬ থেকে পিনারাই বিজয়ন সরকারের নেতৃত্বেই হয়েছে মূল কাজ। রাজনৈতিক বিভিন্ন অংশের বক্তব্য, আদানিকে বেছে নিতে কার্যত বাধ্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। দেশে এবং বিদেশে সব প্রকল্পের ক্ষেত্রেই এই গোষ্ঠীকেই যেমন প্রাধান্য দিচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকার।
পরীক্ষামূলক পর্বেই ২৭২টি বড় জাহাজ ভিড়েছে এই বন্দরে। এতদিন দেশের ‘কন্টেনার শিপমেন্ট’-র ৭৫ শতাংশ হতো শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে। এখন সরাসরি খুব বড় মালবাহী জাহাজ অন্য দেশ থেকে ভিড়তে পারবে এই বন্দরেই।
Vizhinjam Port
কেরালায় চালু গভীর সমুদ্র বন্দর, বিনিয়োগের ৬৩% রাজ্যেরই

×
Comments :0