PROBANDHAY — TAPAN KUMAR BAIRAGYA — RABINDRANATH TAGORE & SONG — MUKTADHARA — 7 AUGHST 2025, 3rd YEAR

প্রবন্ধ — তপন কুমার বৈরাগ্য — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম সংগীত গুরু — মুক্তধারা — ৭ আগস্ট ২০২৫, বর্ষ ৩ — বাইশে শ্রাবণ

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHAY  TAPAN KUMAR BAIRAGYA  RABINDRANATH TAGORE  SONG  MUKTADHARA  7 AUGHST 2025 3rd YEAR

প্রবন্ধমুক্তধারা, বর্ষ ৩ — বাইশে শ্রাবণ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম সংগীত গুরু
 

  তপন কুমার বৈরাগ্য
 

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম সংগীত গুরু ছিলেন বিষ্ণু চক্রবর্তী।
১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি নদীয়া জেলার কায়েতপাড়াতে
জন্মগ্রহণ করেন।ছোটবেলা থেকেই তিনি সংগীত পাগল
মানুষ ছিলেন।আর্থিকসংগতি না থাকলেও তিনি নিজের
চেষ্টায় সংগীতের স্বর্ণ শিখরে আরোহণ করেছিলেন। রাজা
রামমোহন রায় প্রথম ব্রহ্মসংগীত লিখেছিলেন।ব্রহ্মসংগীতের
তিনিই নামকরণ করেন।১৮২৮খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্রাহ্মসমাজ
প্রতিষ্ঠা করেন।ব্রহ্মসংগীত ব্রাহ্মসমাজের উপাসনার জন্য
রচিত গান।যার মধ্যে আছে আধ্যাত্মিকতা।১৯২৮খ্রিস্টাব্দে
ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠার পর রাজা রামমোহন রায় ব্রহ্মসংগীতের
জন্য বিষ্ণু চক্রবর্তীকে সংগীতগুরু হিসাবে নিযুক্ত করেন।
রাজা রামমোহন রায়  ১৮৩৩খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত
তিনি বিষ্ণু চক্রবর্তীকে একজন আদর্শ সংগীত শিক্ষক হিসাবে
মনে করতেন।১৮৪২খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন। বিষ্ণু চক্রবর্তী ব্রাহ্মসমাজের আদি গায়ক।তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক,গীতিকার,সুরকার।রবীন্দ্রনাথের বয়েস যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তিনি রবীন্দ্রনাথের প্রথম সংগীত গুরু 
হিসাবে কাজ শুরু করেন।
রবীন্দ্রনাথের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা
এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে বিষ্ণু চক্রবর্তীর কাছে
ব্রহ্মসংগীত শিক্ষা লাভ করতেন।পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ
ঠাকুরের ইচ্ছা অনুসারেই বিষ্ণু চক্রবর্তী সকলকে বহ্মসংগীত
শিক্ষা দিতেন।রবীন্দ্রনাথকে তিনি  বিভিন্ন উচ্চাঙ্গ সংগীতের
সুরে ব্রহ্মসংগীত শেখাতেন।তিনি দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পন
নাটকের গানগুলি লিখে ,সুর দিয়ে মঞ্চে পরিবেশন করেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর --মিলে সবে 
ভারতসন্তান গানটি লেখেন।এই গানটি সুর দিয়ে ১৮৬৮খ্রিস্টাব্দে
বিষ্ণু চক্রবর্তী হিন্দুমেলায় পরিবেশন করেছিলেন।এই গানটিকে
প্রথমে জাতীয় সংগীত হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিষ্ণু চক্রবর্তীর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বহু ব্রহ্মসংগীত রচনা করেছেন।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'অনেক
দিয়েছো নাথ', 'অন্তর মম বিকশিত কর অন্তরতর হে','তুমি কেমন
করে গান করো হে গুণী,'শুভ কর্ম পথে ধর নির্ভয় গান' 'আমার
মুক্তি আলোয় আলোয়' 'অনেক দিয়েছো নাথ'।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তার সংগীত গুরুকে কোনদিন ভুলেন নি।বহুক্ষেত্রে তার নাম
বিভিন্ন লেখায় তিনি উল্লেখ করেছেন।শেষ জীবনে বিষ্ণু চক্রবর্তী
হালিশহরে বাস করতেন।এইখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

Comments :0

Login to leave a comment