Portugal Wins

“ব্রুনো-রোনাল্ডো ম্যাজিকে কুপোকাত উরুগুয়ে, ২-০ গোলে জিতে পরের রাউণ্ডে পর্তুগাল”

খেলা

Portugal defeats Uruguay

একেবারে স্বমহিমায় গ্রুপ স্টেজ পেরোলো পর্তুগাল। বিশ্বকাপ গ্রুপ ষ্টেজের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পর্তুগিজ ব্রিগেডের। ম্যাচের শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবল খেলা শুরু করে পর্তুগাল, মাঝমাঠের দখল নেওয়ার সুবাদে বল পজিশনেও এগিয়ে ছিল পর্তুগিজরা। প্রথমার্ধের ১৬ মিনিটে বার্নাডো সিলভার পাস থেকে পজিটিভ মুভ করেন জোয়াও ফেলিক্স কিন্ত ডিফ্লেক্সন। অন্যদিকে সুযোগ পেলেই পাল্টা অ্যাটাকে উঠে আসছিল উরুগুয়ে। ম্যাচের ৩২ মিনিটে, উরুগুয়ে ফরোয়ার্ড ম্যাটিয়াস ভেকিনোর দুরন্ত মুভ এবং প্রায় পৌঁছে গেছিলেন গোলের কাছে কিন্তু শেষমেশ গোল হয়নি। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার কিছু আগে পর্তুগাল লেফটব্যাক নুনো মেন্ডেসের চোট লাগে এবং বাধ্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। বেরোনোর সময় চোখে জল দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে, একজন ফুটবলারের কাছে বিশ্বকাপের মঞ্চ কতটা আবেগের। তাঁর বদলে মাঠে নামেন রাফায়েল গুরেইরো। অন্যদিকে পর্তুগিজ ব্রুনো ফারনান্দেজের জোরালো শট ব্লক হয় ফলে বিপদ কিছু সেক্ষেত্রেও ঘটেনি। প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে, ঠিক ৫২ মিনিটের মাথায় কিছুটা খালি জায়গা পেয়েই ফারনান্দেজের গতিময় দৌড় এবং স্কোয়ার পাস জোয়াও ফেলিস্কের দিকে। ফেলিক্সের শট কিন্তু সাইডনেটে, ফলে এক্ষেত্রেও গোল হয়নি। ঠিক এরপরেই রোনাল্ডো ম্যাজিক। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে ইনসাইড কাট করে ঢুকে বিষাক্ত ক্রস ব্রুনো ফারনান্দেজের এবং অসাধারণ দক্ষতায় দুরন্ত গোল সি আর সেভেনের। পর্তুগাল এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। এরপরেই উরুগুয়ে কোচ দিয়েগো আলোন্সো দুটি পরিবর্তন করেন। ভেকিনোর বদলে মাঠে নামেন অ্যারাসকেইটা এবং গডিনের বদলে আসেন পেলিসট্রি। আক্রমণভাগকে আরও শক্তিশালী করে তোলাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। দ্বিতীয়ার্ধের সময় যত এগিয়েছে ততই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় উরুগুয়ে। কাভানির বদলে মাঠে আসেন সুয়ারেজ। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে উরুগুয়ে ফরোয়ার্ড ফেডেরিকো ভালগভারদের থ্রু বল ধরে জোরালো শট অ্যারাসকেইটার কিন্তু অনবদ্য সেভ করেন পর্তুগাল গোলরক্ষক দিওগো কোস্টা। অন্যদিকে পর্তুগাল হেডস্যার ফারনান্দো স্যান্টোসও আনেন বেশকয়েকটি পরিবর্তন। ফেলিক্সকে তুলে নিয়ে মাঠে নামান ম্যাথিউস নুনেস এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বদলে মাঠে আসেন গঞ্জালো র্যাামোস। তাছাড়াও উইলিয়াম কার্ভালহোর বদলে মাঠে আসেন জোয়াও পালহিনহা। আর এই পরিবর্তনগুলির পরেই কিছুটা তাল কাটে উরুগুয়ের।

ম্যাচের ৮৯ মিনিটে উরুগুয়ে ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াজের হ্যান্ডবল এবং ভিএআর মারফৎ পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। আর এই পেনাল্টি থেকেই গোল করলেন ব্রুনো ফারনান্দেজ, সেইসঙ্গে পর্তুগাল এগিয়ে গেল ২-০ গোলে। সবথেকে বড় বিষয়, সবকটি ম্যাচ মিলিয়ে পর্তুগালের শেষ ৮টি গোলে সরাসরিভাবে জড়িয়ে আছেন এই ব্রুনো ফারনান্দেজ। কেন? আসলে নিজে চারটি গোল করেছেন এবং বাকী চারটি গোলে সরাসরি তাঁর সহায়তা রয়েছে। গোটা মাঠ জুড়ে খেলেন সেইসঙ্গে মাঝমাঠ থেকে বলের সাপ্লাই লাইন তাঁর হাত ধরেই অপারেট করে পর্তুগিজ ব্রিগেড। ফলে হেডস্যারের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র এই ফারনান্দেজ। প্রায় ৬০% বল পজিশন নিয়ে জয় ছিনিয়ে আনল পর্তুগাল। যেটি বেশ উল্লেখযোগ্য একটি দিক, যা পরবর্তী ম্যাচগুলিতে নিঃসন্দেহে সাহায্যে আসবে। দ্বিতীয় গোলের পর আরও চাপ বাড়াতে শুরু করে পর্তুগাল। অতিরিক্ত সময়ের ৯৮ মিনিটে আবার গুরেইরোর ডিপ ক্রশ থেকে ব্রুনোর শট কিন্তু সেভ এবং ৯৯ মিনিটে শট কিন্তু এবার অফ দ্যা পোষ্ট। এদিকে ব্রুনো ফারনান্দেজের ঝুলিতে যুক্ত হল একটি নতুন পালক।

১৯৬৬ সালের পর ব্রুনো ফারনান্দেজ হলেন প্রথম কোনো পর্তুগিজ ফুটবলার যিনি একটি বিশ্বকাপে দুটি গোল এবং দুটি অ্যাসিস্ট একসাথে করলেন। পরপর দুই ম্যাচ জিতে পরের রাউণ্ডে পৌঁছে গেলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা।

Comments :0

Login to leave a comment