STORY — SOURISH MISHRA — CHOCOLATE — NATUNPATA — 8 NOVEMBER 2025, 3rd YEAR

গল্প — সৌরীশ মিশ্র — চকোলেট — নতুনপাতা — ৮ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

ছোটদের বিভাগ

STORY  SOURISH MISHRA  CHOCOLATE  NATUNPATA  8 NOVEMBER 2025 3rd YEAR

গল্প  


চকোলেট

  ------------------------ 
  সৌরীশ মিশ্র
  ------------------------ 

নতুনপাতা

 

"কি রে রূপ, হাত খালি! দোকান বন্ধ?" কোলাপসেবল গেটের তালা খুলতে খুলতে বন্ধ গেটের ওপারে দাঁড়ানো ছেলেকে কথাকটা বললেন  রূপের মা মৃণ্ময়ী দেবী।
দশ বছরের রূপ ওদের পাড়ার মুদি দোকানে গিয়েছিল। তার একটু আগেই স্কুল থেকে ফিরেছে ও। আজ ইউনিট টেস্টের রেজ়াল্ট বেড়িয়েছে ওদের। আর তাতে প্রতিটা সাবজেক্টেই দারুণ ভাল রেজ়াল্ট করেছে রূপ। তাই, যখন স্কুল থেকে ফিরে রূপ ওর মা-র কাছে ওর ফেভারিট চকোলেট বারটা কিনে দেওয়ার বায়না করলো, মৃণ্ময়ী দেবী আর না বলেন নি ছেলেকে। টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন চকোলেট কেনার জন্য।
"না, দোকান খোলাই ছিল।" মা-র জিজ্ঞাসার উত্তরে বলে রূপ।
"তবে! দোকান থেকে আসতে আসতেই পুরো চকোলেটটা খেয়ে নিয়েছিস?" কোলাপসেবল গেটের তালা খোলা হয়ে গিয়েছিল এরই মধ্যে। গেটটা ঠেলে খুলতে খুলতে বিস্ময় মাখানো কণ্ঠে বললেন মৃণ্ময়ী দেবী। উত্তরে কিছু না বলে রূপ হেল্প করতে থাকে মাকে কোলাপসেবলটা ঠেলতে। আর তারপর গেটটা ফাঁক হলে ঘরে ঢোকে সে। পায়ে স্যান্ডেল শু রূপের। জুতোর ফিতেটা খুলতে নিচু হতে যায় সে। ছেলে কিছু বলছে না দেখে মৃণ্ময়ী দেবী আর তাঁর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারেন না। ফের বলে ওঠেন, "জুতো পরে খুলবি রূপ। আগে উত্তর দে আমার কথার।" একটু কড়া ভাবেই বলেন কথাগুলো তিনি।
মা-র দিকে এবার সোজা তাকায় রূপ। তারপর বলতে শুরু করে, "দোকানে গিয়ে দেখি, খুব ভিড়। রায় জ্যেঠু এক এক করে সবাইকে দিচ্ছে জিনিস। আমি অপেক্ষা করছিলাম। তখনই একজন ধুতি-পাঞ্জাবি পড়া দাদু, সাথে আরো কয়েকজন আন্টি আর আংকেল এলো, মা। রায় জ্যেঠু আর দোকানে যারা জিনিস কিনতে এসেছিল তাদের কাছে ঐ দাদু বলল, ঐ যে নর্থ বেঙ্গলে ক'দিন আগে ফ্লাড হোলো না, তার জন্য হেল্প করতে, যে যা পারে। সবাই দিল, মা। আমার কাছে তো তোমার দেওয়া ফিফটি রুপিজ়ের নোটটাই ছিল, সেটাই দিয়ে দিলাম ঐ দাদুর হাতে থাকা লাল রঙের বালতিটায়। সবাই তো ঐ বালতিটার ভিতরেই টাকা দিচ্ছিল। ঐ দাদুটা আবার আমার নামও জিজ্ঞেস করল আর থুতনি ধরে একটু আদরও করে দিল আমায়, আমি টাকাটা দিতেই, জানো মা? টাকাটা তো দিয়ে দিয়েছি, তাই..."
মৃণ্ময়ী দেবীর বুঝতে অসুবিধা হয় না আর কিচ্ছু। উনি ছেলের মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিলেন একবার। তারপর বলে উঠলেন, "জুতো খুলিস না রূপ। আমি টাকা দিচ্ছি, তুই তোর পছন্দের চকোলেটটা কিনে নিয়ে আয় যা।" কথাগুলো বলেই মৃণ্ময়ী দেবী পা বাড়ালেন তাঁদের শোওয়ার ঘরের দিকে। এদিকে, রূপেরও আর বুঝতে অসুবিধা হয় না যে ও টাকাটা ডোনেট করায় ওর মা খুশি হয়েছে খুব। মাকে খুশি করতে পেরেছে ও, এ'কথাটা মাথায় আসতেই রূপের মনটা আনন্দে ভরে উঠল পুরো।
 

Comments :0

Login to leave a comment