Mohanlal Vijayan

দর্শকদের পুরস্কার উৎসর্গ মোহনলালের, অভিনন্দন বিজয়নের

জাতীয়

— দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং চলচ্চিত্রের দর্শকদের জন্য উৎসর্গ করলেন মালয়ালাম অভিনেতা মোহনলাল। শনিবারই এবছরের দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রাপক হিসাবে মোহনলালের নাম ঘোষণা করা হয়। রবিবার এখানে সাংবাদিকদের কাছে সেকথা জানাতে গিয়ে তিনি নিজের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এই পুরস্কার প্রাপক হিসাবে আমার নাম বিবেচিত হয়েছে বলে জানানো হয়। কথাটা শুনে আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। ভাবলাম স্বপ্ন দেখছি। এজন্য যিনি ফোন করেছিলেন তাঁকে পুনর্বার বলতে বলি।’’ তবে এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘চলচ্চিত্রের কোনও সীমানা নেই, এখন সর্বভারতীয় চেহারা নিয়েছে।’’ 
ভারতীয় চলচ্চিত্রে আজীবন অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দাদাসাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে মোহনলালকে। তাঁর হাতে ওই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে ২৩ সেপ্টেম্বর ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার নির্বাচন কমিটির মনোনয়নে ভারত সরকার আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ২০২৩ সালের দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করা হবে অভিনেতা মোহনলালকে। তাঁর স্মরণীয় অবদান প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। কিংবদন্তি এই অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজককে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য সম্মানিত করা হচ্ছে। তাঁর অননুকরণীয় প্রতিভা, বহুমুখিতা এবং নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রম ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি স্বর্ণাভ মানদণ্ড তৈরি করেছে।’ এই খ্যাতনামা মালয়ালি অভিনেতা তাঁর চার দশকের যাত্রাপথে ৪০০-রও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, প্রধানত মালয়ালম চলচ্চিত্রে কাজ করলেও তামিল, হিন্দি, তেলুগু এবং কন্নড় ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। এরআগে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্র জগতে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭৮ সালে মালয়ালাম ছবি থিরানোত্তম-এ। একই সঙ্গে ২০০১ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১৯ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে পেয়েছেন তিনি।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মোহনলাল তাঁর স্বীকৃতির কৃতিত্ব দিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পের যৌথ উদ্যোগের পাশাপাশি গোটা চলচ্চিত্র জীবনে অগণিত দর্শকের অকৃত্রিম সমর্থনকে। একারণেই তিনি জোর গলায় বলেছেন, ‘‘এটা শুধুমাত্র আমার পুরস্কার নয়, এই সম্মান ভারতীয় সিনেমার। যেকোনও কাজই সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে করা উচিত। আমার চলার পথে বহু মানুষের সমর্থন পেয়েছি। তাঁদের সঙ্গেই আমার এই সম্মান ভাগ করে নিতে চাই।’’
পুরস্কার পাওয়ায় বিবেচিত হয়েছেন খবর পেয়ে আপ্লুত মোহনলাল এদিন দেখা করতে যান তাঁর অসুস্থ মায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমার পুরস্কার পাওয়ার খবর জানাতেই মা আশীর্বাদ করলেন। আমার পুরস্কার পাওয়ার পিছনে মায়ের আশীর্বাদও রয়েছে। তাঁর মতে, ‘‘সিনেমা বা চলচ্চিত্র যেমন ‘ম্যাজিক’ তেমন ‘সার্কাস’-ও।
তাঁর পুরস্কার প্রাপ্তিতে খুশি চলচ্চিত্র জগৎ। মামুট্টি, অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার থেকে বহু অভিনেতা তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন জানিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং সিপিআই(এম)’র রাজ্যসভার সদস্য জন ব্রিটাস। বিজয়ন এক অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, ‘চলচ্চিত্র জগতে ওঁর দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ওই সম্মান জানানো হয়েছে। তাঁর এই সম্মান শুধু মালয়ালাম চলচ্চিত্র শিল্প নয়, গোটা ভারতের গর্ব।’ ব্রিটাস বলেছেন, ‘মোহনলাল, কেবল একজন অভিনেতাই নন, একজন আলোকবর্তিকা যিনি আমাদের প্রজন্মের নান্দনিক সংবেদনশীলতাকে গভীরভাবে রূপ দিয়েছেন, অবিস্মরণীয় সিনেমাটিক মুহূর্তগুলির একটি পর্দা বুনেছেন। প্রতিটি মালয়ালী এই মুহূর্তটির জন্য গর্বিত। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অতুলনীয় অবদানের প্রমাণ হিসাবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।’

 

Comments :0

Login to leave a comment