Rahul Gandhi

রাহুলের দাবিকে খারিজ কমিশনের

জাতীয়

নির্বাচনের কারচুপি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধী যেই তথ্য দিয়েছেন তা মিথ্যা বলে কংগ্রেস নেতার সমালোসনা করলো জাতীয় নির্বাচন কমিশন। গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচনে কারচুপি সংক্রান্ত পাঁচটি বিষয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। রাতে ইন্ডিয়া মঞ্চের বৈঠকেও উঠে এসেছে সেই বিষয়। বৈঠকে ছিলেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, সিপিআই(এম-এল) এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
শুক্রবার কমিশনের পক্ষ থেকে রাহুলকে নিশানা করে বলা হয়েছে, ‘রাহুল গান্ধী যদি মনে করেন যে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত যেই তথ্য তিনি প্রকাশ করেছেন তা সঠিক তাহলে তাকে তার পক্ষে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। যদি তিনি তা না করেন তাহলে বুঝতে হবে তার নিজের তথ্যের ওপর তার কোন বিশ্বাস নেই। গোটা দেশের কাছে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করার জন্য। তার কাছে দুটি পথ খোলা আছে।’


বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের সদর দপ্তর ইন্দিরা ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সেই রিপোর্ট পেশ করে অভিযোগ করেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ‘সাংবিধানিক বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে এবং পরিকল্পিতভাবে ‘ভোট চুরি’ করে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। ভোটার তালিকায় বিপুল পরিমাণ ভুয়ো ভোটারের নাম তোলা হয়েছে বলেও পরিসংখ্যান দিয়ে  ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। এপ্রসঙ্গে তিনি কর্নাটকের বেঙ্গালুরু মধ্য লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভা আসন এবং সামগ্রিকভাবে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার ভোটার তালিকার জালিয়াতির কথা তুলে ধরেছেন।
গতকাল রাহুল হিন্দি এবং ইংরেজিতে উপস্থাপনা করে দেখিয়েছেন কীভাবে লক্ষ লক্ষ ভোট কারচুপি করে ফলাফল বিজেপি’র পক্ষে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন যে, ওই কেন্দ্রের ৬.৫ লক্ষ ভোটারের মধ্যে অন্তত ১ লক্ষ ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, একই ব্যক্তির নাম পৃথক পৃথক বুথে নথিভুক্ত আছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ভোটারের ছবি নেই। আবার জাল ভোটারের নামও তোলা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘তাঁরা প্রথমে কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কমিশন বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় আমরা অন্তর্তদন্ত শুরু করি। কংগ্রেসের ৩০-৪০ জন গবেষকের বিশেষ দল একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত গিয়ে নথিপত্র ঘেঁটে, যাচাই করে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাতে পাঁচ ধরনের গলদ একেবারে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই পাঁচটি ধরন হলো; ১) একই নাম একাধিকবার-১১, ৯৬৫, ২) ভুয়ো ও অস্তিত্বহীন ঠিকানা-৪০,০০৯, ৩) একই ঠিকানায় বিপুল সংখ্যক ভোটার-১০,৪৫২, ৪) অস্বচ্ছ বা ভুল ছবি-৪,১৩২ এবং ৫) ফরম ৬-এর অপব্যবহার-৩৩,৬৯২। নির্বাচন কমিশনের কাছে দুটি প্রশ্নও করেছেন রাহুল গান্ধী। ১) কেন ডিজিটাল ভোটার তালিকা দেওয়া হচ্ছে না? ২) কেন ভোটার তালিকায় এত বেশি ভুয়ো ভোটার? 
নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে তিনটি দাবিও জানানো হয়েছে কংগ্রেসের পক্ষ। এপ্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী বলেছেন তাঁরা চান; ১) ডিজিটাল ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২) ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ এবং ৩) নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে ভোটার তালিকার তদন্ত।
এর পরই নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে কংগ্রেস সাংসদ বলেছেন, ‘‘আপনার যে পদেই থাকুন না কেন, সিনিয়র হোন বা জুনিয়র, আপনাদের রেয়াত করা হবে না। আপনারা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে পারেন না। গণতন্ত্রকে রক্ষা করাই আপনাদের কাজ।’’

Comments :0

Login to leave a comment