মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থেমেছে ভারত পাকিস্তানের সামরিক সংঘাত। একটি সাক্ষাৎকারে ফের এমন দাবি করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জেনেছি ভারত এবং পাকিস্তান একে অপরের সাথে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। তখন সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে। মার্কিন রাষ্ট্রপতির মধ্যস্থতায় সেই সংঘাত থামে।’ কলম্বিয়ার সাথে থাইল্যান্ড, আজারবাইজেনের সাথে আরমেনিয়ার সামরিক সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন বিদেশ সচিব দাবি করেন এই সংঘাতে থেমেছে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায়। উল্লেখ্য মার্কিন মদতেই দিনের পর পর গাজায় সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। প্রতিদিন সেখানকার মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে। ছাড় পাচ্ছে না শিশুরাও। নিজেদের শান্তিরদূত প্রমানের চেষ্টায় থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নিয়ে কোন কথা বলেনি সাক্ষাৎকারে।
সম্প্রতি সংসদে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে আলোচনায় খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোড় গলায় বলতে পারেননি যে মার্কিন হস্তক্ষেপে সংঘাত বিরতি হয়নি।
আমেরিকার রাষ্ট্রপতিকে মিথ্যাবাদী বলবেন কী প্রধানমন্ত্রী? ভারতের পক্ষ নিয়ে বিশ্বের অন্য কোনও দেশ পাকিস্তানের নিন্দা করল না কেন? কেন কেবল পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলাতেই সীমাবদ্ধ ছিল নিন্দা?
বিরোধীদের পক্ষে এই প্রশ্নই তুলেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ ভাষণে গরম গরম দাবি থাকলেও নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর রইল না।
বরং মোদী বললেন যে আমেরিকা সশস্ত্র সংঘর্ষ বন্ধ করার কথা বলেইনি। ভারতের ঘোষিত লক্ষ্য ছিল উত্তেজনা না বাড়ানো। সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেই অবস্থান অনুযায়ী।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা সবার আগে করেছিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। মে থেকে টানা বলে চলেছেন যে তাঁর হুমকিতে পড়শি দুই দেশ সংঘর্ষ বিরতি করেছে।
উল্লেখ্য ভারতের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চাপানো নিয়ে কড়া সামলোচনার সাহস দেখায়নি ভারত সরকার। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক মার্কিন পদক্ষেপকে "অযৌক্তিক, অন্যায্য এবং ভিত্তিহীন" বলে চিহ্নিত করেছে। তারা জানিয়েছে, নিজেদের দেশের মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। ভারতের মতো অন্য অনেক দেশ, যার মধ্যে চীনও রয়েছে, এই ধরনের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শুধু ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা "অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক" বলে মন্তব্য করা হয়েছে। উল্লেখ্য চীনের ওপর শুল্ক চাপিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই চাপের কাছে চীন মাথা নত না করে পাল্টা শুল্ক চাপায় মার্কিন পণ্যের ওপর। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পিছু হটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর মোট শুল্কের বোঝা ৫০ শতাংশে উন্নীত করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান। ইউএস-ভিত্তিক উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের এই পরিচালক এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ভারত যেহেতু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব ট্রাম্পকে দিতে রাজি হয়নি, তাই তিনি ভারতকে শাস্তি দিতেই এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন।
Marco Rubio
মার্কিন হস্তক্ষেপেই হয়েছে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধ বিরতি, ফের দাবি করলেন রুবিও

×
Comments :0