CITU Birbhum

দেউচা-পাঁচামীতে পাথর লুঠের চক্রান্ত রোখার আহ্বান সিআইটিইউ বীরভূম জেলা সম্মেলনে

জেলা

শনিবার আহমদপুরে সিআইটিইউ বীরভূম জেলা সম্মেলনে নির্বাচিত নব গঠিত জেলা কমিটি।

রুহুল আমিন, বীরভূম

নামেই কয়লা খনি আসলে ব্যাসল্ট পাথর লুঠের চক্রান্ত। দেউচা-পাঁচামীতে কয়লা শিল্পের নামে আদিবাসী ও স্থানীয় অন্যান বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কর্পোরেটের কার্যসিদ্ধি করতে চাইছে সরকার। এর বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ লড়াই করতে হবে শ্রমিক কর্মচারীদের।রাজ্যে শিল্প ধ্বংসকারি তৃণমূল শ্রমিকদের রুটি রুজি কেড়ে নিয়ে তাঁদের দেউলিয়া বানিয়েছে। এর বিরুদ্ধে শ্রমজীবি মানুষের লড়াই জোরদার করতে হবে। শনিবার আহমদপুরে সিআইটিইউ বীরভূম জেলা সম্মেলনে এই আহ্বান জানান, সিআইটিইউ রাজ্য সাধারন সম্পাদক জিয়াউল আলম।
সিআইটিইউ বীরভূম জেলা একাদশতম সম্মেলন শুক্রবার বিকেলে প্রকাশ্য সমাবেশের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যায় সম্মেলেন শুরু হয় কমরেড ব্রজ মুখার্জি, শেখ ইসলাম, দিলীপ গাঙ্গুলী,মতিউর রহমান নগর আহমদপুরে কমরেড অরুনমিত্র, শাব্দুলা মিঞা ও বিথী হাঁসদা কমিউনিনিটি হলের মঞ্চে। সেখানে জিয়াউল আলম বলেন, "বিশ্বজুড়ে লগ্নী পূজীর দাপটে বিভিন্ন দেশ সহ ভারতে ফ্যাসিবাদী দক্ষিণপন্থী ও সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের নেতা আমেরিকা-ইউরোপ ইজরাইলকে দিয়ে প্যালেষ্টাইন ও গাজা ভূখন্ডে নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অবিলম্বে এই মারন যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের দেশে আরএসএস পরিচালিত বিজেপি নয়া ফ্যাসিবাসী কর্পোরেট পূজি ও জাতপাত নিয়ে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে শ্রমিকদের লড়াই সংগঠিত করতে হবে।"
সম্মেলনে খসড়া প্রতিবেদন পেশ করেন বিদায়ী সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্তী। এর উপর বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন ও ব্লক সমন্বয় কমিটির মোট ৩৫ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন। আলোচনায় উঠে আসে শ্রমিকদের অভাব অভিযোগে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। মহম্মদবাজারের দেউচা-পাঁচামীতে খোলা মুখ কয়লা শিল্পের নামে আদিবাসী ও স্থানীয় অন্যান বাসিন্দাদের জমি জায়গা উচ্ছেদ করে একটা চালু পাথর শিল্পকে লুট করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি অনাদি সাহু। তিনি অভিযোগ করে বলেন, "সারা দেশে যে ভাবে শ্রমিক আন্দোলনের আশা দেখছি সেখানে বীরভূম জেলা পিছিয়ে নেই। তৃণমূল সরকারের স্বৈরাচারি শাসনে এই রাজ্যে শ্রমকোড চালু করে আট ঘন্টা কাজের বদলে ১২ ঘন্টা কাজ করতে হচ্ছে শ্রমিকদের। শ্রমিকদের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন ও ধর্মঘট করার অধিকারকে পুলিশ লেলিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করছে শাসক শ্রেনী। রাজ্যে ১৪ বছর ধরে কোন কাজ নেই। ফলে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিজেপি শাসিত রাজ্য গিয়ে হয়রানী ও পুলিশি জলুম এমনকি বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে তাদের বাংলাদেশী বলে চরম ভাবে অত্যাচার করছে এবং বাংলাদেশে পুশব্যাক করেছে। এর বিরুদ্ধে শ্রমিকদেই লড়াই করতে হবে। এদিকে নানা ভাবে শাসক দল অসংগঠিত শ্রমিকদের প্রভাবিত করছে। সেখান থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। এর বিরুদ্ধে সমস্ত শ্রমজীবি মানুষের ঐক্য গড়ে তুলে আন্দোলনে সামিল করতে হবে।" 
      সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রবীন কৃষক নেতা ধীরেন লেট ও মহিলা নেত্রী কেনিজ রবিউল ফতেমা প্রমূখ। সম্মেলন থেকে জেলা সম্পাদকমন্ডলী ৩১ জনের,জেলা কাউন্সিল ১১৭ জনের,ওয়ার্কিং কমিটি ৬৩ জনকে নিয়ে গঠিত হয়। সেখানে সভাপতি হিসাবে পুনঃ নির্বাচিত হন মহম্মদ কামালউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে পুনঃ নির্বাচিত হন দীপঙ্কর চক্রবর্তী ও কোষাধ্যক্ষ বলরাম চ্যাটার্জী। 

Comments :0

Login to leave a comment