মীর আফরোজ জামান ঢাকা: সেপ্টেম্বর
শারদীয় উৎসবকে সামনে রেখে সারা বাংলাদেশে জমে উঠেছে প্রস্তুতি। চারদিকে বাজছে আগমনীর সুর। প্রতীক্ষায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। শেষ মূহুর্তে দুর্গা মূর্তি তৈরিতে চলছে রং-তুলির শেষ আঁচড়, অলংকারে সাজাচ্ছেন মৃৎশিল্পী ও কারিগররা। এক কথায় প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। উৎসব চলাকালীন সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। সরকারের দাবি ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবুও যেন আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না সংখালঘুদের মন থেকে।
প্রশাসন সূত্রে খবর এই বছর সারা বাংলাদেশে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে প্রায় ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মন্ডপ তৈরি হয়েছে। যারমধ্যে ঢাকা মহানগরে রয়েছে ২৫৮টি পুজামণ্ডপ। এবারের দুর্গাপূজা ঘিরে বড় ধরনের কোন আশঙ্কা না থাকলেও কয়েকটি জায়গায় প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজা চলাকালে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
এবারের দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার সকালে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশনের পুজামণ্ডপে এসে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘‘এবারের শারদীয়ায় কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। বিগত সময়ের চেয়ে এবার আরও বেশি সম্প্রীতির বন্ধন অটুট থাকবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে পুজা অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটি ৭ জন করে ভলেন্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হবে, আনসার সদস্য থাকবে ৮ জন করে। এ ছাড়াও পুলিশ, র্যা ব, সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা সতর্ক আছি এবং হামলাকারীরা ধরাও পড়ছে।’’
রাজধানীর মণ্ডপগুলোতে দূর্গা মূর্তিতে রং-তুলির কাজ ও সাজসজ্জা চলছে। তবে এখনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়নি। পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রবেশপথে আর্চওয়ে গেটে মেটাল ডিটেকটর থাকলেও সেটি বিকল হয়ে পরে আছে। প্রবেশ গেটে চেকপোস্ট বা হ্যান্ডহোল্ড মেটাল ডিটেকটরের ব্যবস্থা নেই। মূল পূজামণ্ডপে প্রবেশ গেটে একটি আর্চওয়ে মেটাল ডিটেকটর থাকলেও চেকিং ছাড়াই দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে মন্দিরের প্রথম গেটের ভেতরে পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও আছেন। এছাড়া র্যােব-১০ ব্যাটালিয়নের একটি গাড়ি দেখা গেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দেওয়া তথ্য মতে, গত বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৬৬৬টি দুর্গাপূজা হয়। এবার কত পূজা হচ্ছে, তা এখনও সরকারি ভাবে জানা যায়নি। তবে সেই সংখ্যা প্রায় এক হাজার বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আসন্ন দুর্গাপূজা উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে উদযাপিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুলিশ প্রাক পূজা ও পূজা চলাকালীন এবং প্রতিমা বিসর্জন ও পূজা পরবর্তী তিন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পূজাকেন্দ্রিক পুলিশের নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
Bangladesh
দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে সারা বাংলাদেশজুড়ে

×
Comments :0